দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ২০ এপ্রিল: নিরাপদ ও পরিচ্ছন্ন ঢাকার অঙ্গীকার করে ইশতেহার ঘোষণা করেছেন ঢাকা দক্ষিণে বিএনপি-সমর্থিত মেয়র প্রার্থী মির্জা আব্বাস। ইশতেহারে ঢাকা শহরের হোল্ডিং ট্যাক্স কমানো, নাগরিকদের জন্য ওয়ার্ডভিত্তিক অভিযোগ কেন্দ্র, যানজট নিরসনে কমিউনিটি পুলিশসহ বিভিন্ন অঙ্গীকার করেন তিনি। সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবে এক অনুষ্ঠানে এ ইশতেহার ঘোষণা করা হয়। মামলার কারণে অনুপস্থিত থাকায় আব্বাসের ওই ইশতেহার পড়ে শোনান তাঁর স্ত্রী আফরোজা আব্বাস।নিজেকে ঢাকার বউ দাবি করে সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ঢাকাবাসীকে পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানালেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে বিএনপি সমর্থিত মেয়র প্রার্থী মির্জা আব্বাসের স্ত্রী আফরোজা আব্বাস।
ইশতেহারে দশ দফার প্রস্তাবনা তুলে ধরা হয়। এ সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আফরোজা আব্বাস বলেন, প্রচারণায় ব্যাপক সাড়া পাচ্ছি। নির্বাচন আমাদের প্রচারণা চালানোর অধিকার আছে, কিন্তু আমাদের সেই অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। প্রচারণায় বাধা দেয়া হচ্ছে। নির্বাচনী প্রচারণায় যারা আমাদের সহযোগিতা করছে তাদের হুমকি দেয়া হচ্ছে, গ্রেফতার করা হচ্ছে, তাদের বাড়িঘরে হামলা চালানো হচ্ছে।
মির্জা আব্বাসকে প্রচারণায় নামতে না দেয়ার বিষয়টি উল্লেখ করে আফরোজা আব্বাস বলেন,আমি ঢাকার বউ, আমার বাড়ি পাবনায়। বর্তমানে আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। আমি আমার নিরাপত্তা ও ইজ্জত রক্ষায় ঢাকাবাসীর সহযোগিতা চাই। ঢাকাবাসীকে আমার পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানাচ্ছি। আমাকে নিরাপত্তা দিন,আমার সম্মান রক্ষা করুন।তিনি আরও বলেন, নির্বাচনে নীরব বিপ্লব হবে, মির্জা আব্বাস জয়ী হবেন।এছাড়া সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে সেনাবাহিনী মোতায়েন ও প্রতিটি কেন্দ্রে সিসিটিভি স্থাপনের আহ্বান জানান আফরোজা আব্বাস।
মির্জা আব্বাসের নির্বাচনী ইশতেহারে দশ দফার প্রস্তাবনা রয়েছে। নাগরিক বিনোদন, যানজট নিরসন ও যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন, স্বাস্থ্য সেবা, শিক্ষা খাত, পরিবেশ উন্নয়ন ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, প্রযুক্তির ঢাকা, সমাজ সেবা, জননিরাপত্তা, নগর পরিকল্পনা ও প্রশাসনিক ব্যবস্থা উন্নীতকরণ এ সব বিষয়ে আলোকপাত করা হয়েছে ইশতেহারে।আফরোজা আব্বাস বলেন, নির্বাচিত হলে ঐতিহ্য ও আধুনিকতার সমন্বয়ে সবার বাসযোগ্য বিশ্বায়নের উপযোগী ঢাকাকে গড়ে তুলবেন মির্জা আব্বাস। নাগরিক সেবা: মির্জা আব্বাস ঢাকার নাগরিকদের বাসা বাড়ির হোল্ডিং ট্যাক্স ১২ থেকে ২৭ শতাংশ বৃদ্ধি করা হয়েছে এর নিন্দা জানান। তিনি ইশতেহারে বলেন, নির্বাচিত হলে ঢাকাবাসীর সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে সিটি করপোরেশনের হোল্ডিং ট্যাক্স নির্ধারণ করবেন। ঢাকা ওয়াসার সঙ্গে সমন্বয় করে পয়োনিষ্কাশন ও বিশুদ্ধ খাবার পানি নিশ্চিত করবেন। তিনি নির্বাচিত হলে তাঁর আওতাধীন ওয়ার্ডগুলোতে ব্যায়ামাগার করবেন, বিদ্যুৎ সমস্যা সমাধানে নিজস্ব বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করবেন। নাগরিক বিনোদন: ইশতেহারে বুড়িগঙ্গা নদীকে দূষণমুক্ত, এর তিরে হাঁটার পথ নির্মাণসহ বিনোদন কেন্দ্র গড়ে তোলার অঙ্গিকার করা হয়েছে। এ ছাড়া তিনি নাজিমউদ্দিন রোডে অবস্থিত ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার কেরানীগঞ্জে স্থাপন করা হলে সেখানকার ঐতিহ্য ধরে রেখে নগরবাসীর জন্য আন্তর্জাতিক বিনোদন কেন্দ্র গড়ে তোলার অঙ্গিকার করেন।
যানজট নিরসন ও যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন: ঢাকা মহানগরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ও বিভিন্ন ওয়ার্ডের অভ্যন্তরীণ রাস্তাঘাটের সংস্কার ও প্রয়োজনীয় উন্নয়ন, নারী ও ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য পৃথক বাস, এলাকা/রাস্তা নির্দেশক ডিজিটাল বোর্ড, হকারদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করার কথা ইশতেহারে উল্লেখ করা হয়।এ সময় রোববার উত্তরায় নির্বাচনী প্রচারণা চালানোর সময় খালেদা জিয়ার গাড়িবহরে হামলার প্রতিবাদ জানান হান্নান শাহ। ইশতেহার প্রকাশ অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্রিগেডিয়ার (অব.)হান্নান শাহ,আদর্শ ঢাকা আন্দোলনের আন্দোলনের আহ্বায়ক এমাজউদ্দিন আহমেদ, সদস্য সচিব শওকত মাহমুদ প্রমুখ।