দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ১৯ এপ্রিল: প্রচারণায় কে নামল তা জরুরি বিষয় নয়। জরুরি হচ্ছে প্রার্থীর যোগ্যতা। যোগ্য প্রার্থীকে জনগণ ভোট দিবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত মেয়র প্রার্থী আনিসুল হক। রোববার সকালে মিরপুরের পাইকপাড়া নতুনবাজার এলাকায় গণসংযোগের সময় তিনি এসব কথা বলেন।উল্লেখ্য, বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীর পক্ষে খালেদা জিয়ার প্রচারণায় অংশ নেওয়াকে ইঙ্গিত করে তিনি এ সব কথা বলেন।তিনি বলেন, মেয়রের কাজ হচ্ছে জনগণের সেবা নিশ্চিত করা। সেক্ষেত্রে জনগণের সমস্যা সমাধানে যে পাশে থাকবে জনগণ তাকেই ভোট দেবে।জনগণ ভোট দিতে ভুল করবে না এমন আশাবাদ ব্যক্ত করে এই মেয়র প্রার্থী বলেন, আমি মনে করি যোগ্যতার বিবেচনায় আমি এগিয়ে আছি।রাজধানীর মিরপুর বাংলা কলেজ এলাকা থেকে রোববার সকালে গণসংযোগ শুরু করেন তিনি। এ সময় পায়ে তিনি হেঁটে মিরপুরের বিভিন্ন এলাকার ভোটারদের কাছে নিজ প্রতীকে ভোট চান।
নির্বাচিত হলে নিজের ২৫ বছরের সুনাম নষ্ট করবেন না বলে প্রতিশ্র“তি দিয়েছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র প্রার্থী আনিসুল হক। এ সময় তিনি জনগণের পাশে থেকে ৫ বছর কাজ করে যাওয়ার আশ্বাস দেন।তিনি বলেন, আমি একজন ব্যবসায়ী এবং সংগঠক হিসেবে ২৫ বছর ধরে কাজ করে যাচ্ছি। সৎ মানুষ বলেই আমার সুনাম আছে। নির্বাচিত হলে আমি এই সুনাম নষ্ট করব না।রবিবার দুপুরে কল্যাণপুর পোড়া বস্তিতে গণসযোগের সময় সেখানে এক পথসভায় তিনি এ প্রতিশ্র“তি দেন। পোড়া বস্তি মাঠে কয়েক‘শ বস্তিবাসীর উপস্থিতিতে বক্তব্য রাখেন।এ পথসভায় আনিসুল হক বক্তব্যের শুরুতেই বলেন, ‘আমাকে আপনারা হয়তো চেনেন না, দেখেননি।এসময় উপস্থিত অনেকেই সমস্বরে বলে ওঠেন টিভিতে (টেলিভিশনে) দেখেছি। আপনাকে ভাল লাগে তাই ভোট দেবো।
আনিসুল হক বলেন, আপনাদের কাছে অনেকে অনেক কথা বলবে, অনেক প্রলোভন, অনেক চাপ আসতে পারে। কিন্তু কোনো চাপ বা প্রলোভনে ভোট দেবেন না। নিজের ওপর বিশ্বাস রেখে যাকে যোগ্য মনে করেন, যে আপনাদের পাশে থাকবে, আপনাদের জন্য কাজ করবে মনে করেন তাকে ভোট দেবেন।তিনি বলেন, অন্য যারা মেয়র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করছেন তাদের হয়তো আপনারা বেশি চেনেন, আমাকে হয়তো একটু একটু চেনেন। এই বস্তিতে যারা থাকেন তাদের জীবনের সঙ্গে আমার পরিচয় নেই। তবে আমি তাদের সমস্যা, কষ্টের কথা জানি।আমি মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে অনেক কষ্ট করে উঠে এসেছি। আমি একজন ব্যবসায়ী, আমি ২৫ বছর ব্যবসার পাশাপাশি বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তানের ব্যবসায়িদের নেতৃত্ব দিয়েছি। আমার গার্মেন্ট শিল্পে ১৫ হাজার ভাই বোন কাজ করেন। আমার খুব বেশী বদনাম নেই। লোকে সৎ মানুষ হিসেবেই চেনেন। আমার একটা সুনাম আছে। আমার সুযোগ এসেছে আপনাদের জন্য কাজ করার। মেয়র নির্বাচিত হলে আমি আমার ২৫ বছরের সুনাম নষ্ট করব না।
আমার ওপর আস্থা রেখে আমাকে ভোট দিয়ে বিজয়ী করলে আমি আপনাদের জন্য কাজ করতে পারব। আমি ৫ বছরের জন্য কাজ করতে এসেছি। জোর হাতে বলে যাচ্ছি আমাকে ভালো লাগলে ভোট দেবেন। অন্যকেও ভোট দিতে বলবেন।বস্তির যে সমস্যাগুলো রয়েছে তা একে একে সমাধানের জন্য কাজ করার আশ্বাস দিয়ে আনিসুল হক বলেন, ঢাকা শহরে যে বস্তিগুলো রয়েছে প্রতিটি বস্তিরই সমস্যাগুলো প্রায় একই রকম। রাতারাতি কোনো সমস্যাই সমাধান করা যায় না। একে একে সমস্যাগুলো সমাধানের ব্যবস্থা করা হবে।এর আগে স্থানীয় এমপি আসলামুল হক আসলাম তার বক্তব্যে আনিসুল হককে ভোট দেয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, মানুষের সেবা করা আনিসুল হকের নতুন নয়। তিনি অনেক আগে থেকেই মানুষকে সেবা করে আসছেন।
আনিস ভাইকে ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করে আরও সেবা করার সুযোগ করে দেবেন এটা আপনাদের কাছে আমার আহ্বান।সকাল ১১টায় তিনি মিরপুর বাংলা কলেজের সামনে থেকে গণসংযোগ শুরু করেন। রাস্তায় হেঁটে হেঁটে তিনি মানুষের কাছে ঘড়ি মার্কায় ভোট চান। রাস্তা দিয়ে তিনি যখন এগিয়ে যেতে থাকেন তখন আনিসুল হকের সমর্থকরা ফুলের পাপড়ি ছিটিয়ে তাকে স্বাগত জানান। পাইক পাড়া নতুন বাজার হয়ে গণসংযোগ করতে করতে তিনি কল্যাণপুর বস্তিতে যান।নতুন বাজারে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় খালেদা জিয়ার নির্বাচনী প্রচার নিয়ে এক প্রশ্নের উত্তরে আনিসুল হক বলেন, লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড কিনা সেটা আপনারাই দেখবেন। উনি (খালেদা) এক দলের প্রধান। তবে যেই প্রচারে নামুক মানুষ ভুল করবে না। মানুষ জানে কে যোগ্য, কে কাজ করতে পারবে। এতে বাড়তি কোনো চাপ তৈরি হবে না বলেও তিনি মন্তব্য করেন।