দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ১৯ এপ্রিল: একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্প যথাযথভাবে বাস্তবায়নের জন্য সংশ্লিষ্টদের নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রোববার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে ওই প্রকল্পের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সভায় তিনি এ নির্দেশ দেন। সভাশেষে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব এ কে এম শামীম চৌধুরী সাংবাদিকদের এ বিষয়ে জানান।প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের রাজনীতির লক্ষ্যই হল দরিদ্র জনগোষ্ঠীর উন্নয়ন ও তাদের সাবলম্বী করা, ধনী-দরিদ্র বৈষম্য কমিয়ে আনা। এ প্রকল্পের মাধ্যমে গ্রামীণ অর্থনীতিকে শক্তিশালী করাই সরকারের লক্ষ্য বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।
একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পের মেয়াদ শুরুতে ২০০৯ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত থাকলেও পরে সংশোধন করে ২০১৬ সাল পর্যন্ত করা হয়।জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় সারা দেশে ৪০ হাজার ৫২৭টি গ্রামে এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে।প্রকল্পের আওতায় উৎপাদিত পণ্যের বাজারজাতের জন্য ইতোমধ্যে ২৭৪টি বাজার গড়ে তোলা হয়েছে।দেশের প্রতিটি জেলা-উপজেলা ও গ্রোথ সেন্টারে এসব পণ্য বিক্রির জন্য সমবায়ভিত্তিক বাজার গড়ে তোলার বিষয়ে সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে প্রেস সচিব জানিয়েছেন।এছাড়া প্রকল্পের অগ্রগতি ও কার্যক্রমের নিবিড় তত্ত্বাবধান অব্যাহত রাখার বিষয়েও সিদ্ধান্ত হয়েছে।প্রকল্পের আওতায় উৎপাদিত পণ্য বাজারজাত করার ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।তিনি বলেন, একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্প হল- গ্রামের প্রতিটি বাড়ি একটি সাবলম্বী ইউনিট হিসেবে তৈরি করা।প্রকল্পের সফল বাস্তবায়নের জন্য ইতোমধ্যে পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক করা হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।তিনি বলেন, গ্রামে হাস, মুরগি, মাছসহ নানা ধরনের উৎপাদন বাড়ছে। এতে মানুষের পুষ্টি নিশ্চিত হচ্ছে। মানুষ দারিদ্র্য থেকে মুক্তি পাচ্ছে, নিম্নবিত্ত থেকে মধ্যবিত্তে উত্তরণ ঘটছে।খুব স্বল্প সময়ের মধ্যে এ প্রকল্প আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে কার্যকরী ভূমিকা রাখবে বলে আশা প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী।
একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পে উপকারভোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২২ লাখ; যাদের ৬০ ভাগই নারী। তাদের মাসিক ২০০ টাকা সঞ্চয়ের বিপরীতে দ্বিগুণ সরকারি সহায়তার মাধ্যমে এ প্রকল্পের জন্য দুই হাজার কোটি টাকার স্থায়ী তহবিল গঠন করা হয়েছে।এই প্রকল্পের মাধ্যমে পারিবারিক উৎপাদন বেড়ে সদস্যদের বার্ষিক আয় ১০ হাজার ৯২১ টাকা বেড়েছে বলে সভায় বলা হয়েছে।একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্প যথাযথভাবে বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট সবাইকে নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একইসঙ্গে প্রকল্প বাস্তবায়নের অগ্রগতি ও এর সার্বিক কার্যক্রমের নিবিড় পর্যবেক্ষণ অব্যাহত রাখার নির্দেশনাও দিয়েছেন তিনি।প্রকল্পের সুফলের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, এর মাধ্যমে উৎপাদন বাড়ছে, পুষ্টি নিশ্চিত হচ্ছে। মানুষ দারিদ্র্য থেকে মুক্তি পাচ্ছে। নিম্নবিত্ত থেকে মধ্যবিত্তে উঠে আসছে মানুষ।৪০ হাজার ৫২৭ টি গ্রামে এ প্রকল্প বাস্তবায়নের কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে বলে সভায় জানানো হয়।
সভায় উৎপাদিত পণ্য বাজারজাত করতে দেশের সব জেলা, উপজেলায় এবং গ্রোথ সেন্টারগুলোতে সমবায়ভিত্তিক বাজার গড়ে তোলার কথা বলা হয়। সারা দেশে এ ধরণের ২৭৪টি বাজার রয়েছে।সভায় প্রকল্পের প্রভাব নিয়ে আলোচনা হয়। একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পে ২২ লাখ উপকারভোগী পরিবার মাসিক ২০০ টাকা সঞ্চয়ের বিপরীতে সরকারি দ্বিগুণ সহায়তার মাধ্যমে দুই হাজার কোটি টাকার স্থায়ী তহবিল গঠন করা হয়েছে। ২২ লাখ পরিবারের ৬০ শতাংশই নারী সদস্য।প্রকল্পের আয়বর্ধক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে পারিবারিক উৎপাদন বৃদ্ধি, গ্রামীণ অর্থনীতি সমৃদ্ধ হয়েছে। প্রকল্পের প্রভাবে এর সদস্যদের বার্ষিক আয় ১০ হাজার ৯২১ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে।সভায় স্থানীয় সরকারমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, পরিবেশমন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু, পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তাফা কামাল, ভূমিমন্ত্রী শামসুর রহমান শরীফ, স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সমবায় ও পল্লী উন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী মশিউর রহমান রাঙ্গা, ভূমি প্রতিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আবুল কালাম আজাদসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।