timthumb

দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ১৮ এপ্রিল: আসন্ন সিটি করপোরেশন নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতেই বিএনপি সেনাবাহিনী মোতায়নের দাবি করেছে বলে অভিযোগ করেছেন আওয়ামী লীগ সমর্থিত সহস্র নাগরিক কমিটি। বলেন, নির্বাচনে পরাজয়ের কথা অনুধাবন করেই ভোট সেন্টারে ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা বসানো ও সেনাবাহিনী নিয়োগের দাবি তোলা হচ্ছে।

শনিবার রাজধানীতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন কমিটির নেতারা। আসন্ন সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আচরণবিধ এবং প্রচারের বিষয় তুলে ধরতে শনিবার সকালে রাজধানীর শাহবাগে সংবাদ সম্মেলন করে আওয়ামী লীগ সমর্থিত সহস্র নাগরিক কমিটি। কমিটির আহবায়ক সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হক আজ শাহবাগ অস্থায়ী কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ আহবান জানান।সংবাদ সম্মেলনে আরো বক্তব্য রাখেন কমিটির সদস্যসচিব গোলাম কুদ্দুস,নাসির উদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু, ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সভাপতি মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নীল দলের আহবায়ক অধ্যাপক ড. নাজমা শাহীন।কবি রাসেল আশেকী, ফিরোজ হোসাইন, কবি হানিফ খান ও ইঞ্জিনিয়ার মঞ্জু এ সময় উপস্থিত ছিলেন।এ সময় বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গে অভিযোগ করে নির্বাচন কমিশনের কাছে ব্যাখ্যাও দাবি করেন তারা।রাজনীতিসৃষ্ট নাশকতা ও সাম্প্রদায়িক জঙ্গিবাদের উন্মত্ততার আতঙ্ক কাটিয়ে আধুনিক ঢাকা গড়তে আনিসুল হক ও সাঈদ খোকনকে ভোট দেয়ার আহ্বান জানিয়েছে সহ¯্র নাগরিক কমিটি।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, সহ¯্র নাগরিক কমিটি আগামী ২০এপ্রিল রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশন মিলনায়তনে ঢাকা দক্ষিণের মেয়র প্রার্থী সাঈদ খোকনের জন্য সুধী সমাবেশের আয়োজন করেছে। সেখানে দেশবরেণ্য বুদ্ধিজীবীরা তাকে ভোট দেয়ার কারণ তুলে ধরবেন সবার সামনে। আনিসুল হকের জন্যও একই ধরনের আয়োজন থাকছে ২২ এপ্রিল মিরপুরের সনি সিনেমা হলের পাশে সিটি কর্পোরেশনের একটি কমিউনিটি সেন্টারে। এসব আয়োজনে সহ¯্র নাগরিক কমিটির সদস্যদের পাশাপাশি মুক্তিযোদ্ধা, শিক্ষক, কবি, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, সংস্কৃতিকর্মীসহ সকল শ্রেণী পেশার মানুষ উপস্থিত থাকবেন।এ ছাড়া আগামী ২৪ এপ্রিল কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বুদ্ধিজীবী, সর্বস্তরের নাগরিক, সাংবাদিক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বরা দুই মেয়র প্রার্থীকে সাথে নিয়ে ১০০টি পায়রা উড়িয়ে ঘোষণা করবেন- এই ঢাকা শান্তির শহর। এ সময় সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, ধর্মন্ধতা, নৈরাজ্য নাশকতার বিরুদ্ধে শান্তি-প্রগতি-আধুনিক ঢাকা গড়ার প্রত্যয়ে শপথ নেবেন উপস্থিত মেয়র প্রার্থী ও সর্বস্তরের নাগরিকরা।

সংবাদ সম্মেলনে নাগরিক কমিটির নেতৃবৃন্দ বলেন, ‘বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত মেয়র প্রার্থীরা গোপন আঁতাত করেছে বলে আমরা জানতে পেরেছি। যে হেফাজত ঢাকা শহরে ধর্মীয় গ্রন্থ কোরআনসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান পুড়িয়ে এক তান্ডবের সৃষ্টি করেছিল, সেই হেফাজতের দোসররা যদি কোনক্রমে জয়লাভ করতে পারে- তাহলে তারা এই ঢাকা শহরকে জঙ্গিবাদ ও ধ্বংসের শহরে পরিণত করবে।তারা বলেন, গত তিন মাস ধরে বিএনপি-জামায়াত জঙ্গি-গোষ্টি যেভাবে পেট্রোলবোমা মেরে মানুষকে পুড়িয়ে হত্যাসহ জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি ও অর্থনৈতিক কর্মকান্ড স্থবির করার চেষ্টা করেছে, ঢাকার কোন সচেতন-বিবেকসম্পন্ন নাগরিক তাদের ভোট দিতে পারে না।

নেতৃবৃন্দ বলেন, ‘এই ঢাকা শহর আপনার আমার শহর, এটি একদিকে যেমন মসজিদের শহর অন্যদিকে মুক্তিযুদ্ধের শহর। এখানে ধর্মপ্রাণ মানুষ যাতে শান্তিপূর্ণভাবে তাদের ধর্মকর্ম পালন করতে পারে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় শহরবাসী যাতে শান্তি ও সমৃদ্ধির প্রথে এগিয়ে যেতে পারে, সেজন্যই সহ¯্র নাগরিক কমিটি আনিসুল হক ও সাঈদ খোকনের মতো সৎ, সুযোগ্য, কর্মপ্রাণ, নীতিবান ও শহরপ্রেমী প্রার্থীকে সমর্থন দিয়েছে এবং তাদের পক্ষে সবধরনের প্রচারাভিযান চালিয়ে যাচ্ছে।নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েন প্রসঙ্গে নেতৃবৃন্দ বলেন, দেশ ও জাতির যেকোন দুর্যোগময় মুহুর্তে সেনাবাহিনী দেশবাসীর পাশে এসে দাঁড়ায়। সেনাবাহিনী একটি গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় প্রতিষ্ঠান। তারা সবসময় দেশবাসীর পাশে আছে এবং থাকবে। কিন্তু এই নির্বাচন শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হওয়ার পথে এবং এ পর্যন্ত কোন প্রার্থী তেমন কোন আশঙ্কাজনক পরি¯ি’তির অভিযোগ করেছেন বলে মিডিয়ায় দেখা যায়নি। এ ছাড়া এই সরকারের অধীনেই সিলেট, রাজশাহী, গাজীপুরসহ বেশ কয়েকটি সিটি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেখানেও সেনাবাহিনী মোতায়েনের প্রয়োজন পড়েনি। সুতরাং এ নির্বাচনেও সেনাবাহিনীর প্রয়োজন পড়বে না।তারা জানান, আজ থেকে দুই সিটি কর্পোরেশনে এলাকাভিত্তিক ১০টি টিম গঠন করে দুই প্রার্থীর পক্ষে ৫টি করে টিম পুরোদমে প্রচারণা শুরু করেছে। এই টিমের সদস্যরা ভোটারের ঘরে ঘরে গিয়ে ভোট প্রার্থনা করবেন।