দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ১৮ এপ্রিল: বাংলা বর্ষবরণের দিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় নারী লাঞ্ছনার ঘটনা তদন্তে দুটি কমিটি করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। শনিবার বেলা সোয়া একটার দিকে ডিএমপির মুখপাত্র মনিরুল ইসলাম নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।ডিএমপির গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) এই যুগ্ম কমিশনার বলেন, নারী লাঞ্ছনার বিষয়টি তদন্ত করবে একটি কমিটি। অন্য কমিটি পুলিশের ভূমিকা ও দায়দায়িত্ব খতিয়ে দেখবে।মনিরুল ইসলামের ভাষ্য, সিসি ক্যামেরায় ধারণ করা ভিডিও ফুটেজ বিশ্লেষণ করে নারী লাঞ্ছনার ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনো অপরাধীকে শনাক্ত করা যায়নি। এ ছাড়া ওই দিন যাঁরা নিগৃহীত হয়েছেন, তাঁদেরও সন্ধান মেলেনি।
ডিএমপির এই মুখপাত্র বলেন, যদি কেউ নিগৃহীত হয়ে থাকেন, পুলিশের সঙ্গে তাঁদের যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে। তাঁদের পরিচয় গোপন রাখা হবে। এ ছাড়া তদন্তে প্রত্যক্ষদর্শীদেরও সহায়তা চাওয়া হয়েছে।ঘটনার প্রতিবাদ জানাতে সকাল ১০টার দিকে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) ও বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) ৩০-৪০ জন নেতা-কর্মী রাজধানীর সিদ্ধেশ্বরী এলাকায় ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের কাছে সড়কে অবস্থান নেন। তাঁরা ডিএমপি কমিশনারের কার্যালয়ের দিকে যাওয়ার চেষ্টা করেন। এতে বাধা দেয় পুলিশ। পরে প্রতিবাদকারীরা সেখানে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেন।
সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সিপিবি-বাসদ সমর্থিত মেয়র পদপ্রার্থী আবদুল্লাহ আল ক্বাফী বলেন, নারীদের জন্য নিরাপদ নগর চাই। পয়লা বৈশাখের দিন পুলিশ তাদের দায়িত্ব পালন করেনি। নারীসহ নগরে সবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আহ্বান জানান তিনি।বেলা ১১টার দিকে সিপিবি-বাসদের সাত সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল ডিএমপি কমিশনারের সঙ্গে দেখা করতে তাঁর কার্যালয়ে যায়। তাঁরা সেখানে দেড় ঘণ্টার মতো অবস্থান করেন।
ঘটনার বিষয়ে তদন্ত শুরু করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন হয়রানি প্রতিরোধ কমিটি। প্রত্যক্ষদর্শীর প্রামাণিক কোনো তথ্য থাকলে তা কমিটির আহ্বায়ক সহ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক নাসরীন আহমাদের দপ্তরে লিখিতভাবে জমা দিতে অনুরোধ জানানো হয়েছে। ২৩ এপ্রিলের মধ্যে অফিস চলাকালে তা দিতে হবে।নারী লাঞ্ছনার ঘটনা তদন্ত করে এক মাসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলে আইজিপি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে এ ঘটনায় দায়ী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে কেন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে আদালত রুল দিয়েছেন। গত বৃহস্পতিবার স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক ও বিচারপতি আবু তাহের মো. সাইফুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল দেন। ইন্টারনেটে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমসহ বিভিন্নভাবে পহেলা বৈশাখ উদযাপন নিয়ে একটি মহল অপপ্রচার চালিয়েছে, চালাচ্ছে। বিষয়টি নজরদারি করা হচ্ছে।
অপপ্রচারকারীদের আইনের আওতায় এনে বিচারের ব্যবস্থা করা হবে বলে উল্লেখ করেছেন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) যুগ্ম কমিশনার মনিরুল ইসলাম। তিনি বলেন, ইন্টারনেটে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমসহ বিভিন্নভাবে পহেলা বৈশাখ উদযাপন নিয়ে একটি মহল অপপ্রচার চালিয়েছে ও চালাচ্ছে। প্রচারকারীরা পহেলা বৈশাখকে শিরক বলে প্রচারণা চালিয়েছেন।প্রচারণাকারীদের প্রতি ইঙ্গিত করে মনিরুল ইসলাম বলেন, শ্লীলতাহানির ওই ঘটনার সঙ্গে তাদের সম্পৃক্ততা রয়েছে কি-না সেটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। যারা এমনটি করছেন, তাদেরকে নজরদারির মধ্যে রাখা হয়েছে।