দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ১৭এপ্রিল : সবুজ ঢাকার প্রত্যাশায় সাইকেল র্যালিতে অংশ নিলেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ১৪ দল সমর্থিত মেয়র পদপ্রার্থী আনিসুল হক। র্যালিতে তার সঙ্গে ৫০টির বেশি সাইকেল অংশ নেয়।শুক্রবার রাজধানীর বছিলা বুড়িগঙ্গা তিন নম্বর সেতু থেকে সাইকেল র্যালিটি শুরু হয়ে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে এসে শেষ হয়।
বিডি সাইক্লিস্টের ১৫০তম বাইক ফ্রাইডে কর্মসূচির অংশ হিসেবে র্যালিতে অংশ নেন আনিসুল হক।র্যালি শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে আনিসুল হক বলেন, মেয়র হলে দূষণমুক্ত ও সবুজ ঢাকা গড়ার চেষ্টা করবো। রাজধানীর পার্কগুলো দখলমুক্ত করবো। এছাড়া উত্তাপ কমিয়ে ঢাকাকে একটি স্বাস্থ্যকর শহর হিসেবে গড়ে তুলবো।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন সংসদ সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক এবং ৩৩ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদপ্রার্থী শেখ বজলুর রহমান। আজ এই সকালে সাইকেল চালিয়ে এতো ভালো লাগছে যে মনে হচ্ছে মেয়র হলেও নিয়ম করে সাইকেল চালাবো, বলছিলেন একজন উচ্ছ্বসিত মেয়র প্রার্থী আনিসুল হক। দীর্ঘ প্রায় পাঁচ কিলোমিটার পথ সাইকেলে পারি দেওয়ার পর এই উচ্ছ্বাস তার।
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র পদপ্রার্থী আনিসুল হকের শুক্রবারের প্রচারাভিযানটি ছিলো ব্যতিক্রমী। একটি পরিচ্ছন্ন দূষণমুক্ত নগরীর কথা তিনি নির্বাচনী ইশতেহারেই ঘোষণা দিয়েছেন। সেই লক্ষ্যে মেয়র হলে নগরে সাইকেলকে জনপ্রিয় করে তোলাও হবে তার একটি অন্যতম উদ্যোগ।সাইকেলের জন্য যে আলাদা লেনের দাবি দীর্ঘ দিনের তাও সম্ভাব্য সড়কগুলোতে নিশ্চিত করা হবে, সে ঘোষণাও দিলেন আনিসুল হক। আর বিডি-সাইকেলিস্ট গ্র“পের সঙ্গে দীর্ঘ প্রায় পাঁচ কিলোমিটার পথ সাইকেল চালিয়ে প্রমাণ করলেন, তিনিও সাইকেলিস্ট। এবং ভালো সাইকেল চালান।বিডি-সাইকেলিস্ট গ্র“পের দেড় শতাধিক তরুণ তরুণী তাদের নিয়মিত ক্যাম্পেইনের অংশ হিসেবে শুক্রবার যায় রাজধানীর পশ্চিমাংশে বসিলা এলাকায়। সেখানে বুড়িগঙ্গা তৃতীয় সেতুর গোড়ায় যখন দলটি পৌঁছায় তখন তাদের সঙ্গে যোগ দেন আনিসুল হক। এরপর সেতুসড়ক ধরে এগিয়ে, মোহাম্মদীয়া হাউজিংয়ের ভেতর দিয়ে, বাঁশবাড়ি হয়ে, মোহাম্মদপুর বাসস্ট্যান্ড ধরে আসাদ গেট হয়ে মানিক মিয়া এভিনিউতে গিয়ে শেষ হয় সেই সাইকেল যাত্রা।
আনিসুল হক বলেন,এটি কোনও নির্বাচনী ৠালি নয়, এ ৠালি সাইকেলকে জনপ্রিয় করে তুলতেই। তবে যারা সাইকেল চালিয়ে এই নগরীকে দুষণ মুক্ত করতে চান,যে তারুণ্যের দল বিডি-সাইকেলিস্ট তাদের দীর্ঘ ক্যাম্পেইন চালিয়ে যাচ্ছে তাদের সঙ্গে আমিও সামিল।
সাইকেল চালিয়ে আসার পথেই আনিসুল হককেও সড়কের বিভিন্ন স্থানে থামতে হয়। এখানে সেখানে মিনিবাস, সিএনজি অবিন্যস্তভাবে রাস্তায় আড়াআড়ি করে দাড়িয়ে থাকলে তাদের সাইকেল যাত্রাও আটকে যায়।একটি পরিপাটি সুবিন্যস্ত নগরী গড়ে তোলারও অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন এই মেয়র প্রার্থী।আর আনিসুল হক তার বক্তৃতায় বলেন, বসিলা এলাকায় ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। একটি নতুন জনপদ হিসেবে এটি ধীরে ধীরে গড়ে উঠছে। তিনি মেয়র নির্বাচিত হলে এই এলাকায় সকল নাগরিক সুবিধা নিশ্চিত করবেন।
নিজের বেড়ে ওঠা, ছোট থেকে বড় হয়ে ওঠা, অর্থনৈতিকভাবে নিজেকে একটি শক্ত ভীতের ওপর দাঁড় করার দীর্ঘ পথ পরিক্রমাও সংক্ষেপে এলাকাবাসীর কাছে তুলে ধরেন আনিসুল হক। তিনি বলেন, শিক্ষা, সংস্কৃতি আর মানুষের ভালোবাসাকে পুঁজি করেই তার এই পথ চলা।বিজিএমইএ ও এফবিসিসিআই’র মতো দুটি বড় সংগঠন চালিয়ে নিজের যোগ্যতা যাচাই করেই ঢাকার মেয়র হওয়ার মতো এই বড় চ্যালেঞ্জে নেমেছেন বলেও জানান আনিসুল হক।
তিনি বলেন, তার এই নির্বাচনে অংশগ্রহণ ঢাকাবাসীর জন্য। ঢাকা উত্তরের সমস্যাগুলো এরই মধ্যে তিনি চিহ্নিত করেছেন। সেগুলো সমাধানের পথেই পাঁচ বছরের জন্য কাজ করে যাবো। মানিক মিঞা এভিনিউতে সাইকেল র্যালি শেষ হলে সাংবাদিকরা জানতে চেয়েছিলেন, সরকারের বিভিন্ন মহল বলছে আগামীতে নির্বাচন দলীয়ভাবেই হবে। তিনি কোনও দলীয় প্রার্থী নন, তবে আওয়ামী লীগের সমর্থিত। দলীয়ভাবে মেয়র নির্বাচনের বিষয়টি কিভাবে দেখছেন?উত্তরে আনিসুল হক বলেন, আমি পাঁচ বছরের জন্য ঢাকাবাসীকে সেবা দেওয়ার টওত্যয় নিয়ে এসেছি, আপাতত আমি এই পাঁচ বছরের বাইরে বা পরে কি হবে তা নিয়ে ভাবছি না।
এই নির্বাচনকে স্রেফ নির্বাচন হিসেবে না দেখে, তার প্রার্থীতাকে একটি পরিচ্ছন্ন-সবুজ-মানবিক নগর গড়ার বার্তা হিসেবে দেখার জন্য নগরবাসীর প্রতি আহ্বান জানান এই ব্যবসায়ী নেতা।তিনি বলেন, অনেক সমস্যা রয়েছে, এবার একটি সমাধান যাত্রা।