bazar231

দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ১৭ এপ্রিল: গত তিন মাসের রাজনৈতিক সহিংসতা ও অচলাবস্থার অবসান হলেও সবজি ও নিত্যপণ্যের বাজার এখনও স্বাভাবিক হয়নি। বৈশাখের উত্তাপের মতোই বাজারে প্রতিটি পন্যের দাম চড়া।শুক্রবার রাজদানীর বিভিন্ন কাঁচাবাজার ঘুরে এমনটাই দেখো গেলো। রাজধানীর মিরপুর, নিউমার্কেট, মহাখালীসহ বিভিন্ন বাজার ঘুরে সরেজমিনে দেখা গেছে, বিভিন্ন প্রকার সবজির দাম অবরোধ-হরতালের সময়ের চেয়ে না কমে বরং কোনো কোনোটার বেড়েছে। এসব বাজারে প্রতি কেজি কাঁকরোল ৬০ টাকা, টমেটো ৩০ টাকা, চাল কুমড়া ২০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ২০ টাকা, করলা ৩০ টাকা, কাঁচা মরিচ ৩০ টাকা, গাজর ২৫ টাকা, পটল ৪০ টাকা, চিচিঙ্গা ৪০ টাকা, পেঁপে ৩০ টাকা, ঢেঁড়স ৩০ টাকা, বরবটি ৪০ টাকা, কচুরলতি ৩০ টাকা, ঝিঙ্গা ৪০ টাকা, প্রতিপিস লাউ ২০ টাকা, কাঁচা কলা প্রতি হালি ৩০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। মৌসুমি সবজি হিসেবে কাঁচাবাজারের লিস্টে কাকরোলের নাম কমবেশি থাকেই। মৌসুমের শুরু তাই দামটা একটু বেশি। এরপরও বাজারে ওঠা নতুন এ সবজির প্রতি আগ্রহ রয়েছে ক্রেতাদের। এদিকে, সবজির দাম বাড়লেও স্থির রয়েছে মাছ, মাংসের বাজার। তবে চড়া রয়েছে ডিমের বাজার।

রাজধানীর মহাখালী কাঁচাবাজারের সবজি বিক্রেতা আনিসুর রহমান শুক্রবার সকালে জানান, গত দু’সপ্তাহ ধরে নতুন কাকরোল বাজারে এসেছে। প্রথম দিকে দেড়শ’ টাকা কেজি খুচরা বিক্রি হলেও গত তিনদিন ১০০-১১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।অনেক ক্রেতা আছেন যারা মাঠ থেকে তুলে আনা নতুন সবজি কিনতে পছন্দ করেন। প্রতিদিন গড়ে সাত থেকে ১০ কেজি কাকরোল বিক্রি হয় বলেন এ সবজি বিক্রেতা। রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, গত সপ্তাহের তুলনায় শুক্রবার থেকে টমেটো, শসা, বেগুন, পেঁপেসহ বিভিন্ন সবজির দাম কেজিপ্রতি ৫ থেকে ১০ টাকা বেড়েছে।সবজির দাম বাড়ার বিষয়ে ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়েরই একই মত পাওয়া যায়।
কেজিপ্রতি টমেটো ৩০ থেকে ৪০ টাকা, শসা ৩০ থেকে ৩৫ টাকা, বেগুন ৫৫ থেকে ৬০ টাকা (গোল), লম্বা ৩৫ থেকে ৪০ টাকা, করলা ৩৮ থেকে ৪০ টাকা (গোল), লম্বা ২৮ থেকে ৩০ টাকা, আলু ১৮ টাকা (সাদা), লাল ২৫ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৩০ টাকা, পেঁপে ৩০ থেকে ৩৫ টাকা, মুলা ৩৫ থেকে ৪০ টাকা, পটল ৩৫ থেকে ৪০ টাকা, গাজর ২৫ থেকে ৩০ টাকা, বরবটি ৪৫ থেকে ৫০ টাকা, কচুরলতি ৫০ টাকা, মিষ্টি আলু ৩০ টাকা, শিম ৩৫ থেকে ৪০ টাকা, কুঁড়িকচু ৩৫ থেকে ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।আর প্রতিটি পাতাকপি ৪০ টাকা, লাউ ২৫ থেকে ৩৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

কেজিপ্রতি পিঁয়াজ (দেশি-বিদেশি) ২৮ থেকে ৩৬ টাকা, রসুন ৬০ থেকে ১০০ টাকা, কাঁচামরিচ ২০ থেকে ৩০ টাকা, শুকনা মরিচ (দেশি) ১৬০ থেকে ১৮০ টাকা, আদা ৯০ থেকে ১১০ টাকা, হলুদ ( দেশি লম্বা) ১৮০ থেকে ২১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।কেজিপ্রতি টেংরা ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা, মলা ২০০ থেকে ২৮০ টাকা, কাতল ও রুই (দেড় থেকে আড়াই কেজি) ১৭০ থেকে ২২০ টাকা, তেলাপিয়া ১২০ থেকে ১৬০ টাকা, পাংগাস (এক থেকে দুই কেজি) ১২০ থেকে ১৩৫ টাকা, সিলভার কার্প (এক থেকে তিন কেজি) ১২৫ থেকে ১৭০ টাকা, কৈ (চাষ) ১৭০ থেকে ২০০ টাকা, চিংড়ি (ছোট) ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা, বড় ৫০০ থেকে ৭০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

বোয়াল (এক থেকে আড়াই কেজি) ২৫০ থেকে ৩৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর ইলিশ বিক্রি হচ্ছে প্রতিটি ৬০০ থেকে ৭০০ টাকায় (ওজন ৬৫০ গ্রাম থেকে সাড়ে ৭’শ গ্রাম)। ডিম ও মাংসের বাজার: তবে ডিমের বাজার বেশ চড়া বলেই জানালেন ক্রেতা ও বিক্রেতারা। এক হালি দেশি মুরগির ডিম ৫০ টাকা, লাল (ফার্ম) ৩০ টাকা, হাঁসের ৩৪ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কেজিপ্রতি খাসির মাংস (ছাগল) ৫৫০ টাকা, ছাগী ৪৫০ টাকা, গরুর মাংস ৩৫০ টাকা, ব্রয়লার ১৭০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।

কেজিপ্রতি চাল (সরু) ৪৪ থেকে ৫২ টাকা, মোটা ৩২ থেকে ৩৪ টাকা, মাঝারি (পারিজা, হাসটিক, বিআর ২৮) ৩৫ থেকে ৪০ টাকা, গুটি ও স্বর্ণা ৩৫ থেকে ৩৬ টাকা, সুগন্ধি (কালিজিরা, চিনিগুড়া) ৭০ থেকে ৮০ টাকা, খোলা আটা ৩০ থেকে ৩৪ টাকা, মসুরের ডাল (দেশি-বিদেশি) ৮৫ থেকে ১১০ টাকা, ছোলা ডাল ৬০ থেকে ৭০ টাকা, মুগ ডাল (মোটা ও সরু) ৮৫ থেকে ১২০ টাকা, ছোলা কালাই ৫০ থেকে ৫৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।প্রতিলিটার সয়াবিন তেল ( খোলা) ৮২ থেকে ৮৪ টাকা, ৫ লিটারের বোতল ৪৮৫ থেকে ৫০৫ টাকা, পাম তেল ৬২ থেকে ৬৫ টাকা, সরিষার তেলা ১৩০ থেকে ১৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এছাড়া বিক্রেতারা প্রতি কেজি মোটা ও ইরি ধানের চাল বিক্রি করছেন ৩৫-৩৭ টাকা দরে। নাজির শাইল ৫০-৫৪ টাকা, মিনিকেট ৪৮-৫২ টাকা এবং লতা ৩৮-৪০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।সুগন্ধি চালের মধ্যে কাটারিভোগ প্রতি কেজি ৭৪-৭৫ টাকা, খোলা কালো জিরা চাল ৮০-৮৩ টাকা ও প্যাকেটজাত প্রতি কেজি ১০০ টাকা দরে।বাজারে আসা বেসরকারি ব্যাংক কর্মকর্তা রাজিব আহসান বলেন, হরতাল-অবরোধ নেই তারপরও দাম আগের মতো। ক্ষোভ নিয়ে তিনি বলেন, বাজারে পণ্যের দাম অস্বাভাবিকভাবে উঠানামা করছে। একবার বাড়লে আর কমতে চায় না। বাজারে সবজির যে প্রাচুর্য দেখছি, তাতে দাম আরও কমা উচিত। কিন্তু কমছে কই?বক্রেতারা বলছেন, বাজারে শীতকালীন সবজি শেষ, গ্রীষ্মকালীন সবজি পুরোপুরি না আসায় দাম কিছুটা বেশি।খুচরা সবজি বিক্রেতারা জানালেন , পাইকাররা দাম বেশি রাখায় আমাদেরও বেশি দরে বিক্রি করতে হচ্ছে।