দৈনিকবার্তা-ভোলা,১৭এপ্রিল : ভোলার লালমোহনে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের সেচ্চাচারিতায় ছাত্র ছাত্রীদের পাঠদানের বই রাখা হয়েছে টয়লেটের ভিতরে। এঘটনায় ছাত্রছাত্রী ও অভিভাবক মহলে ব্যাপক ক্ষোভ বিরাজ করছে। উপজেলার পশ্চিম রায়চাঁদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তাজল ইসলাম দীর্ঘ দিন ধরে তার শিক্ষা পতিষ্ঠানে ব্যাপক অনিয়ম ও দুরনীতি করে আসছেন। বিভিন্ন সময়ে শ্রেণীর ছাত্রীদের নানা ভাবে উত্যক্ত ও কু-প্রস্তাবের কারণে একাধিক ছাত্রী বিদ্যালয়ে আসা বন্ধ করে দিয়েছে। প্রধান শিক্ষক তাজল ইসলামের বিচারের দাবিতে এলাকাবাসী ফুঁসে উঠেছেন।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, উপজেলার পশ্চিম রায়চাঁদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তাজল ইসলাম দীর্ঘ দিন ধরে তার শিক্ষা পতিষ্ঠানের ব্যাপক অনিয়ম ও দুনীতি করে আসছেন। তার অনিয়মের কাছে ছাত্রছাত্রী ও অভিভাবকরা যেন জিম্মি হয়ে পরেছেন। তিনি নিয়মিত বিদ্যালয়ে না এসেও প্রতিদিন শিক্ষক হাজীরা খাতায় স্বাক্ষর করছেন বলে অভিযোগ করেন এলাকাবাসী। তার খামখেয়ালীপনার কারণে বিদ্যালয়ের বাকি শিক্ষরা ও অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। বিদ্যালয়ে প্যান্ট পড়ে আসার নিয়ম থাকলে ও তিনি প্রায় সময় বিদ্যালয়ে লুঙ্গি পরে আসছেন। তার স্বেচ্চারীতায় কারণে ছাত্র ছাত্রীদের পাঠদানের বই এখন রাখা হচ্ছে বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীর ব্যবহীত টয়লেটের মধ্যে। তাজল ইসলাম বিভিন্ন সময়ে বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের উপ বৃত্তির টাকা বিতরণে অনিয়ম ও সরকারী ভাবে আসা নিনা মূল্যে বই ছাত্রছাত্রীদের কাছে বিক্রি ও অতিরিক্ত পরিক্ষার ফি আদায় করছেন বলে ও অভিযোগ করেন এলাকাবাসী। এছাড়া প্রধান শিক্ষক তাজল ইসলাম ছাত্রীদের উত্যক্ত ও কু- প্রস্তব দেওয়ার কারণে বিদ্যালয়ের একাধিক ছাত্রী বিদ্যালয়ে আসা বন্ধ করে দিয়েছে। একই বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণীর সমাপনী পরিক্ষার্থী (১২) জানান, গত শনিবার সেই বিদ্যালয়ে গেলে প্রধান শিক্ষক তাজল ইসলাম তাকে লাইব্রেরীতে ডাকেন। পরে সেই লাইব্রেরীতে গেলে প্রধান শিক্ষক তাজল ইসলাম তাদেরকে সমাপনী পরিক্ষায় ভালো রেজাল্টের প্রলোভন,টাকার প্রলোভন সহ বিভিন্ন ভাবে কু-প্রস্তাব দেয় বলে অভিযোগ করেন ওই শিক্ষার্থীরা। পরে বিষয়টি বাড়ি গিয়ে জানালে অভিভাবকরা বিদ্যালয়ে যাওয়া বন্ধ করে দেয়। অপরদিকে প্রায় দেড় মাস আগে একই বিদ্যালয়ের ৩ শ্রেণীর ছাত্রী (৯) কে ১ শত টাকার প্রলোভ দিয়ে টয়লেটে ভিতরে নেওয়ার চেষ্টা করেন।
ওই শিক্ষার্থী বিষয়টি বাড়ি গিয়ে তার অভিভাবকদের জানালে তাকে ও বিদ্যালয়ে যাওয়া বন্ধ করে দেয় বলে অভিযোগ করেন ওই শিক্ষার্থী। এঘটনায় ছাত্রছাত্রী ও অভিভাবক মহলে ব্যাপক হতাশা ও ক্ষোভ বিরাজ করছে। রমাগঞ্জ ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ড যুবলীগ সভাপতি মাহবুব আলম ভূইয়া সহ একাধিক অভিভাবক জানান, শিক্ষক তাজল ইসলামের যৌনলিপ্সার ভয়ে এলকার প্রায় অর্ধশত শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছেন। আমাদের মেয়েরা বিদ্যালয়ে গিয়ে নিরাপদে বাড়ি আসতে পারবেকিনা তা নিয়ে আমরা সব সময় চিন্তিত থাকি। এই শিক্ষক তাজলের হাত থেকে বিদ্যালয়ের সু দর্শন কোমলমতি ছাত্ররা রেহায় পাচ্ছে না । প্রায় ১ বছর আগে এমনি অভিযোগও উঠে প্রধান শিক্ষক তাজলের বিরুদ্ধে। এব্যপারে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক তাজল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি অপ প্রচার বলে দাবি করেন। টয়লেটে বই রাখার বিষয়ে বলেন, লাইব্রেরীতে বই রাখার জাইগা নেই, ফলে বই লয়লেটে রাখা হয়েছে। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আইয়ব আলী জানান, আসলে বিষয়টি খুবই সিরিয়াস। অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। একই রকম বিস্তর অভিযোগ রয়েছে শিক্ষক তাজল ইসলাম বিরুদ্ধে। যা সরেজমিনে তদন্ত করলে বেরিয়ে আসবে। এর পরেও অদৃশ্য শক্তির ইশারায় বহাল তবিয়তে রয়েছেন প্রধান তাজল ইসলাম। বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রী,অভিভাবক মহল ও এলাকবাসীর একটাই দাবি তাজল ইসলামকে কঠিন শাস্তি দিয়ে যাতে নিরাপদে শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে যাতায়াতের ব্যবস্থা করে দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সু-দৃষ্টি কামনা করছেন।