দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ১১ এপ্রিল: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমদ বলেছেন, আসন্ন সিটি নির্বাচনে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীরা জয়ী হলে সরকার আগামী তিন মাসের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন দিতে বাধ্য হবে। শনিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাব প্রাঙ্গনে আমার দেশ পরিবার আয়োজিত আমার দেশ পড়তে চাই , মাহমুদুর রহমানের মুক্তি চাই আমার দেশ বন্ধ ও মাহমুদুর রহমানের কারাবন্দিত্বের ২ বছর উপলক্ষে’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় তিনি এমন্তব্য করেন।অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমেদের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন সাংবাদিক শফিক রেহমান, কলামিস্ট ফরহাদ মজহার, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি রুহুল আমিন গাজী, বর্তমান সভাপতি শওকত মাহমুদ, মহাসচিব এমএ আজিজ, সাংবাদিক নাঈমুল ইসলাম খান, সাবেক সচিব আ ন হ আকতার হোসেন, ড. সুকোমল বড়ুয়া, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি আব্দুল হাই শিকদার, সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম প্রধান প্রমুখ।
এমাজউদ্দীন আহমদ বলেন, ২৮ এপ্রিল যদি সিটি নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হয় ও জনগণ তাদের সুচিন্তিত মতামত প্রকাশ করতে পারে তবে বিএনপি বিজয় অর্জন করবে। আর বিজয় অর্জন করলে আগামী ৩ মাসের মধ্যে সরকার জাতীয় নির্বাচন দিতে বাধ্য হবে।তিনি বলেন, ক্ষমতাকে পুঁজি করে যারা ক্ষমতায় থাকতে চায়, তাদের সেই চেষ্টা ব্যর্থ হবে এবং ক্ষমতায় থাকার স্বপ্ন এক সময় বিলীন হয়ে যাবে। গণমাধ্যমের বাক স্বাধীনতা রুদ্ধ করা হচ্ছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, স্বৈরশাসক এবং স্বাধীন গণমাধ্যম কখনো এক সঙ্গে চলতে পারে না। তারা সবসময় গণমাধ্যমের বাকস্বাধীনতা রুদ্ধ করার চেষ্টা করে।
আসন্ন সিটি করপোরেশন নির্বাচন যদি অবাধ ও সুষ্ঠু হয় তাহলে আগামী ৩ মাসের মধ্যেই সরকার জাতীয় নির্বাচন দিতে বাধ্য হবে বলে মন্তব্য করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভি.সি. অধ্যাপক ড.এমাজউদ্দীন আহমেদ।এমাজউদ্দীন আহমেদ বলেন, ২৮ এপ্রিল সিটি নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হয় ও জনগণ তাদের সুচিন্তিত মতামত প্রকাশ করতে পারে এবং সেই নির্বাচনে বিএনপি বিজয় অর্জন করতে পারে তাহলে ৩ মাসের মধ্যে সরকার জাতীয় নির্বাচন দিতে বাধ্য হবে।
শত নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক এমাজউদ্দীন আহমেদ বলেন, যারা জোড় করে ক্ষমতায় থাকে তার সব সময় দূর্বল থাকে। কারণ তাদের পায়ের নিচে মাটি থাকে না। আর পায়ের নিচে মাটি না থাকলে সে কখনো দাঁড়াতে পারে না। তারা ক্ষমতাকে পুঁজি করে ক্ষমতায় থাকতে চায় কিন্তু তাদের এই ব্যর্থ স্বপ্ন এক সময় বিলীন হয়ে যায়।প্রবীণ এই রাষ্ট্রবিজ্ঞানী বলেন, স্বৈরশাসক আর স্বাধীন গণমাধ্যম কখনো এক সাথে চলতে পারে না, তারা সব সময় গণমাধ্যমের বাক স্বাধীনতা রুদ্ধ করার চেষ্টা করে ।
আমার দেশের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমান সর্ম্পকে এমাজউদ্দীন বলেন,মাহমুদুর রহমান একজন দেশ প্রেমিক, বাংলাদেশের মস্ত বড় সম্পদ, উন্নত জীবনের জন্য যেটা প্রথম প্রয়োজন তা হলো সত্য প্রকাশ করা আর এসব গুণ তার মধ্যে ছিলো ।
বর্তমান সরকারের আমলে হামলা মামলা গুম নিত্য দিনের কাজে পরিনত হয়েছে মন্তব্য করে সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের ভারপ্রাপ্ত আহব্বায়ক রুহুল আমিন গাজী বলেন, ঘরে থাকলে গুম অথবা ক্রসফায়ার বাহিরে থাকলে নির্যাতন গ্রেফতার যে সরকারের কাজ সেই সরকারকে আন্দোলনের মাধ্যমে পতন করা ছাড়া অন্য কোন পথ নেই।আলোচনায় অংশ নিয়ে, ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি শওকত মাহমুদ বলেন, আজকে যারা সরকারের সাথে আতাত করে বিভিন্ন মিডিয়ার মালিক হয়েছে , তাদেরও মাহমুদুর রহমানের মুক্তির জন্য আন্দোলন করা উচিৎ। অন্যথায় সরকার পরির্বতন হলে তাদের ও মাহমুদুর রহমানের মত পরিণতি ভোগ করতে হবে।
বিএনপিপন্থি বুদ্ধিজীবী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ও আদর্শ ঢাকা আন্দোলন’র আহ্বায়ক প্রফেসর এমাজউদ্দীন আহমেদ বলেন, ২৮ তারিখের নির্বাচনে বিএনপি বিজয়ী হলে পরবর্তী নির্বাচনেও বিজয়ী হবে। দেশের পরবর্তী রাজনৈতিক অবস্থা কেমন হবে তাও নির্ভর করছে ২৮ এপ্রিলের ওপর। এমাজউদ্দীন আহমেদ বলেন, ২৮ এপ্রিল ঢাকা ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের নির্বাচন যদি সঠিকভাবে হয় তাহলে সরকার পরবর্তী তিন থেকে চারমাসের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন দিতে বাধ্য হবে।আন্দোলন অহিংস হবে নাকি সহিংস হবে তা চিন্তা করে দেখার জন্য এ সময় শফিক রেহমান প্রফেসর এমাজউদ্দীনের প্রতি আহ্বান জানান।তিনি বলেন, পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গায় অহিংস আন্দোলনের পাশাপাশি সহিংস আন্দোলনও ছিল। কোথাও সহিংস বিজয় হয়েছে, কোথাও অহিংস বিজয় হয়েছে।
শফিক রেহমান সাগর-রুনি হত্যা, মাহমুদুর রহমান, ও সালাহ উদ্দিনের ঘটনায় পৃথক কমিটি করে আন্দোলন করারও আহ্বান জানান।তিনি বলেন, এতে সরকারের প্রতি চাপ বাড়বে। তাদের জীবন অশান্ত হয়ে পড়বে। শেষ পর্যন্ত দাবি মানতে বাধ্য হবে।কলামিস্ট ফরহাদ মজহার বলেন, সমাজের চিন্তার ভিন্নতা আছে বলেই মত প্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হয়।