দৈনিকবার্তা- ঢাকা, ১০ এপ্রিল: আসন্ন ঢাকা ও চট্টগ্রামের তিন সিটি করপোরেশন নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্নের জন্য ভোটগ্রহণের অন্তত এক সপ্তাহ আগে সেনা মোতায়েনের দাবি জানিয়েছেন আদর্শ ঢাকা আন্দোলনের আহ্বায়ক ড. এমাজউদ্দিন আহমেদ।সেনা মোতায়েন না হলে নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না বলেও শঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।শুক্রবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে আয়োজিত এক সেমিনারে তিনি এ দাবি জানান।গুম, খুন, অপহরণ ও গ্রেফতার আতঙ্কের মধ্যে সিটি করপোরেশন নির্বাচন’ শীর্ষক এ সেমিনারের আয়োজন করে বাংলাদেশ ডেমোক্রেটিক কাউন্সিল। অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন সংগঠনটির সভাপতি এম এ হালিম।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক এ উপাচার্য বলেন, সিটি নির্বাচনকে অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে সম্পন্ন করার দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের। সে লক্ষে নির্বাচনের ভোটগ্রহণের অন্তত এক সপ্তাহ আগে সেনাবাহিনী মোতায়েন করতে হবে। সিটি নির্বাচন বিএনপি চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছে উল্লেখ করে এমাজউদ্দিন বলেন, সরকারকে শিক্ষা দেওয়ার একটি মোক্ষম সুযোগ আমাদের সামনে এসেছে। আমরা এ নির্বাচনকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছি। আশা করছি, চ্যালেঞ্জে জয়ী হব আমরাই।নির্বাচন কমিশনের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, একটি সুষ্ঠু নির্বাচন সম্পন্ন করে আপনাদের সক্ষমতা প্রমাণ করুণ।নয়তো জাতি ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় আপনাদের ইতিহাসের আস্তাকুঁড়ে নিক্ষেপ করবে।এমাজউদ্দিন বলেন, আমরা প্রতিযোগিতার সমতল ভূমি আশা করি না। তবে ভোটাররা যাতে নির্বিঘ্নে ভোট কেন্দ্রে যেতে পারে এবং প্রার্থীরা যাতে ঠিকমতো প্রচারণা চালাতে পারে সে ব্যবস্থা নিশ্চিত করুন।এসময় বিএনপির তরুণ কর্মীদের ভোটকেন্দ্র ও ব্যালট বাক্স পাহাড়া দেওয়ারও আহ্বান জানান তিনি।
সিটি করপোশেন নির্বাচনে দলসমর্থিত প্রার্থীদের পক্ষে গঠিত সংগঠন আদর্শ ঢাকা আন্দোলনের আহ্বায়ক এমাজ উদ্দিন বলেন, এক অস্বাভাবিক অবস্থার মধ্যে ঢাকা ও চট্টগ্রাম সিটি নির্বাচন হতে যাচ্ছে। এই নির্বাচন আমাদের জন্য একটি চ্যালেঞ্জ।নির্বাচন কমিশনকে বলব, যাতে ভোটারা নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারে, সেজন্য ভোটগ্রহণের এক সপ্তাহ আগেই সেনাবাহিনীকে মাঠে থাকতে হবে।কারচুপি ঠেকাতে ব্যালট বাক্স পাহারা দিতে ভোটারদের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আমি নিশ্চিত করে বলতে পারি, সুষ্ঠু নির্বাচন হলে, ভোটাররা ভোট দিতে পারলে তিন সিটি নির্বাচনেই আমরা বিজয়ী হবো- এতে কোনো সন্দেহ নেই।এমাজ উদ্দিন বলেন, আমরা নির্বাচন কমিশন সম্পর্কে কোনো অভিযোগ করতে চাই না। আমরা চাই এই নির্বাচন কমিশন সঠিকভাবে, দক্ষতার সঙ্গে সিটি নির্বাচন পরিচালনা করুক। আর যদি কমিশন নির্বাচন সুষ্ঠু করতে না পারে, তাহলে তারা ইতিহাসের আস্তাকুঁড়ে নিক্ষিপ্ত হবে।এসময় প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিব উদ্দিন আহমদের সঙ্গে সাক্ষাতের কথা তুলে ধরেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক এই উপাচার্য।
তিনি বলেন, তিনি (সিইসি) আমার ৮ বছরের জুনিয়র। তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে আমি বলেছি, সিটি নির্বাচন আপনার জন্য একটা সুযোগ নিয়ে এসেছে- নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরি করার। ভোটাররা যাতে নিজের ভোট নিজে দিতে পারে, প্রার্থীরা যাতে ভোটারদের কাছে যেতে পারে- তা নিশ্চিত করতে হবে। হয়রানিমূলক মামলার দিয়ে অজ্ঞাত সংখ্যক আসামি করে যাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তাদের জামিন দিয়ে ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ দিতে হবে।রাজধানীর অপরিচ্ছন্ন অবস্থার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ঢাকা এখন পৃথিবীর নিকৃষ্টতম শহরের তালিকায় রয়েছে। আমরা চাই, একটি পরিচ্ছন্ন ঢাকা, আদর্শ ঢাকা। এজন্য যোগ্য প্রার্থীকে এবারের নির্বাচনে নির্বাচিত করতে হবে।৫ জানুয়ারি নির্বাচনের পুনরাবৃত্তি ঠেকাতে সজাগ থাকতে ঢাকা ও চট্টগ্রামবাসীর প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
সংগঠনের সভাপতি এম এ হালিমের সভাপতিত্বে সভায় অন্যান্যের মধ্যে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হায়দার আলী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মামুন আহমেদ, স্বাধীনতা ফোরামের সভাপতি আবু নাসের মো. রহমাতুল্লাহ, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার পারভেজ আহমেদ, জিয়া নাগরিক ফোরামের সভাপতি মিয়া মো. আনোয়ার, সাংবিধানিক অধিকার ফোরামের সদস্য সচিব সুরঞ্জন ঘোষ, এনডিপির মহাসচিব মঞ্জুর হোসেন ঈসা ও হাজী মো. লিটন বক্তব্য রাখেন।