দৈনিকবার্তা- খুলনা, ০৭ এপ্রিল: পাঁচ দফা দাবি আদায়ে খুলনা-যশোর অঞ্চলের রাষ্ট্রায়ত্ব পাটকলের শ্রমিকরা বিক্ষোভ মিছিল, সামাবেশ ও জেলা প্রশাসকের নিকট স্মারকলিপি প্রদান করেছে। গতকাল মঙ্গলবার সকালে রাষ্ট্রায়ত্ত্ব জুট মিল সিবিএ – নন সিবিএ ঐক্য পরিষদের উদ্যোগে খুলনায় এ কর্মসূচি পালন করা হয়। এসময় ৯টি মিলের প্রায় অর্ধলাখ শ্রমিক উপস্থিত ছিলেন।দাবিগুলো হল পাট শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখার স্বার্থে অবিলম্বে মিলগুলোকে পূর্নাঙ্গ উৎপাদনমুখী করার জন্য পাটখাতে প্রয়োজনীয় অর্থ ছাড়, পাটপন্যের দেশীয় বাজার সুরক্ষ ও সম্প্রসারন করার জন্য প্রনীত আইন ২০০২ ও ম্যান্ডেটরী প্যাকেজিং এ্যাক্ট ২০১০ অবিলম্বে বাস্তবায়ন, পে-কমিশনের ন্যায় অবিলম্বে রাষ্ট্রায়ত্ব শিল্পে শ্রমিকদের জন্য মজুরী কমিশন বোর্ড গঠন, ১লা জুলাই ২০১৩ ঘোষিত ২০% মহার্ঘ্য ভাতা প্রদান ও খালিশপুর, দৌলতপুর, জাতীয়, এবং কর্নফুলী জুট মিলের শ্রমিকদের স্থায়ী করণ।
শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষে কর্মসূচীর অংশ হিসাবে খালিশপুরের ক্রিসেন্ট, প্লাটিনাম, দিঘলিয়ার ষ্টার, আটরা শিল্প এলাকার আলীম, ইষ্টার্ন এবং নওয়াপাড়া শিল্প এলাকার জেজেআই, কার্পেটিং জুট মিলের শ্রমিকরা সকাল সাড়ে ৯ টায় স্ব স্ব মিল গেটের সামনে সমবেত হয়। সকাল ১০টায় ট্রাকযোগে মিছিল নিয়ে নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিন করে। ট্রাক মিছিলটি ফেরী ঘাট মোড়ে এসে শেষ হয়। পরে পায়ে হেটে শ্রমিকরা বিক্ষোভ ১ঘন্টা অবস্থান কর্মসূচী পালন করে। এ সময় সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ রাষ্ট্রায়ত্ত্ব জুট মিল সিবিএ-নন সিবিএ ঐক্য পরিষদের আহবায়ক ক্রিসেন্ট জুট মিলের সিবিএ“র সাধারন সম্পাদক মোঃ সোহরাব হোসেন। বক্তৃতা করেন সংগঠনের সদস্য সচিব এসএম জাকির হোসেন, দ্বীন ইসলাম, মুরাদ হোসেন, আবু জাফর, মোহাম্মদ হোসেন, রুহুল কুদ্দুস রিপন, কওছার আলী মৃধা, খলিলুর রহমান প্রমুখ। সমাবেশ শেষে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর কাছে স্মারক লিপি প্রদান করেন নেতৃবৃন্দ।
এদিকে, খুলনা পাটখাতে প্রয়োজনী অর্থবরাদ্দ, বকেয়া মজুরী- বেতন পরিশোধ ও ২০ ভাগ মহার্ঘভাতা প্রদানসহ ৫ দফা দাবীতে খুলনা-যশোর অঞ্চলের ৯ রাষ্ট্রায়ত্ত্ব পাটকলের সিবিএ-নন সিবিএ ঐক্য পরিষদের দাবীর সাথে একমত পোষন করে অবিলম্বে দাবী সমূহ বাস্তবায়নের দাবী জানিয়েছেন খুলনা মহানগর বিএনপি। গতকাল নেতৃবৃন্দ এক বিবৃতিতে বলেন, এসব পাটকল সমূহের মেশিন ও যন্ত্রপাতি দীর্ঘ দিনের পুরাতন ও অকেজো, এগুলো যুগের চাহিদা অনুযায়ী আধুনিকায়নে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহন করতে হবে। চলতি মৌসুমে বিজেএমসির উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবায়নে ব্যর্থ হওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করে নেতৃবৃন্দ। পাট ও পাট শিল্পে সুরক্ষা দেয়ার জন্য ও পরিবেশ বাচানোর জন্য ২০০২ সালে পলিথিনের কাচামাল আমাদানি নিষিদ্ধের আইন করা হয়েছিলো কিন্তু তা বাস্তবায়ন না হওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করে অবিলম্বে পাট পন্য দেশের অভ্যান্তরে ব্যবহার করার জন্য ম্যান্ডেটরী প্যাকেজিং আইন-২০১০ বাস্তবায়নের দাবী জানান নেতৃবৃন্দ। এছাড়া আলুর ন্যায় পাটখাতে ২০% ভর্তুতি ও বিজেএমসির সম্পদ এবং সম্পদের পুর্ণ ব্যবহারেরও দাবী জানিয়েছেন নেতৃবৃন্দ। বিবৃতিদাতারা হলেন, বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা এম নুরুল ইসলাম দাদু ভাই, মহানগর সভাপতি নজরুল ইসলাম মঞ্জু, সাধারণ সম্পাদক মেয়র মনিরুজ্জামান মনি, সাহারুজ্জামান মোর্ত্তজা, সৈয়দা নার্গিস আলী, জাফর উল্লাহ খান সাচ্চু, শেখ মোশারফ হোসেন, সিরাজুল ইসলাম মেঝো ভাই, ফখরুল আলম, অধ্যক্ষ তারিকুল ইসলাম, এ্যাড. ফজলে হালিম লিটন, আরিফুজ্জামান অপু, সিরাজুল হক নান্নু, আসাদুজ্জামান মুরাদ, এস এম আরিফুর রহমান মিঠু প্রমুখ।