দৈনিকবার্তা-ঠাকুরগাঁও, ০৭ এপ্রিল: মৌসুমের শুরুতেই সরকার গম, ধান ও চালের ক্রয়মূল্য নিধর্ারণ করায় ঠাকুরগাঁওয়ে কৃষকরা খুশি হলেও বাজারে দাম নিয়ে হতাশ৷ তবে এই ন্যায্যমূল্য প্রাপ্তিতে সরকার সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে ধান ক্রয়ের যে ঘোষনা দিয়েছে, তা বাস্তবায়নের দাবী জানিয়েছেন এ জেলার কৃষকরা৷সরকার ধান, চাল, গম সংগ্রহ অভিযান শুরুর তারিখ এবং সংগ্রহ মূল্য ঘোষনায় কিছু আশার আলো দেখছে এ অঞ্চলের কৃষকরা৷ এবার বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের টানা অবরোধ আর হরতালে শষ্য উত্পাদন নিয়ে শংকিত হয়ে পরে কৃষকরা৷ নানা প্রতিকুলতার পরেও সরকার প্রতি কেজি গম ২৮টাকা, ধান ২২ টাকা এবং চাল ৩২ টাকা নির্ধারন করায় উত্পাদন খরচ উঠবে বলে আশায় বুক বাঁধছেন কৃষকরা৷ কিন্তু কৃষক বাজারে উত্পাদিক পণ্যের নায্য মূল্য না পাওয়ার হতাশায় দিন পাড় করছেন৷
সদর উপজেলার জগন্নাথপুর গ্রামের কৃষক সফিকুল ইসলাম, নারগুন গ্রামের জয় মহন্ত, মোহাম্মদপুর গ্রামের আবুল কালাম বলেন, সরকার আগে ভাগেই গম,ধান ও চালের দাম নির্ধারণ করেছে তাতে সবাই খুশি৷ সরকার সরাসরি কৃষকরে কাছে সংগ্রহ করলে ন্যায্য দাম পাওয়া যাবে৷ কিন্তু এটা বাস্তবায়ন না হলে কৃষকরা ন্যায্য দাম থেকে বঞ্চিত হবে৷সংগ্রহ অভিযান ঘোষনার সাথে সাথে সরকার এবার ঘোষনা দিয়েছে কৃষকদের কাছ থেকে এবার সরাসরি বোরো সংগ্রহ করার৷ কৃষকরা জানান, প্রতিবার সরকার কৃষকদের কাছ থেকে সরাসরি ধান ক্রয়ের ঘোষনা দিলেও বাস্তবে তা করা হয় না৷ এর ফলে কৃষকরা তাদের উত্পাদিত পন্যের ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হলেও লাভভান হয় মধ্যস্বত্বভোগীরা৷
সদরের ভাওলারহাট গ্রামের কৃষক মোজাফফর হোসেন, ফাঁড়াবাড়ি গ্রামে আব্দুল জলিল, হোসেন আলী, জয়নাল হোসেন জানান, বেশ ক’বছর থেকেই কৃষকরা ধানের মূল্য পায়নি৷ পাশাপাশি উত্পাদন খরচ বেড়ে যাওয়ায় ধান আবাদ করে লোকসান গুনতে হয়েছে তাদের৷ এবারও যাতে তাদের লোকসান গুনতে না হয়, সেজন্য সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে গম ও বোরো সংগ্রহের দাবী জানিয়েছে কৃষকরা৷কৃষি বিভাগ জানান, এবার জেলায় ৬৫ হাজার ৫শ হেক্টর জমিতে গম উত্পাদন হবে ২লাখ ৩৩ হাজার টন, ৬২ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো চাল উত্পাদন হবে ২লাখ ৫০ হাজার মে.টন চাল৷ আবহাওয়া অনুকুল থাকায় এবং সারসহ অন্যান্য উপকরন পর্যাপ্ত মজুদ থাকায় এবার বাম্পার ফলনের আশা করছে কৃষি বিভাগ৷
ঠাকুরগাঁও চালকল মালিক সমিতি সাধারণ সম্পাদক মাহমুদ হাসান রাজু জানান, সরকারের এবারে উদ্যোগে কৃষকরা ন্যায্য দাম পাবে৷ কিন্তু কৃষকদের কাছে সরাসরি ক্রয় না করলে উত্পাদিত খরচ উঠবে না বলেও তিনি জানান৷ঠাকুরগাঁও কৃষি সমপ্রসারন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আরশেদ আলী বলেন, সরকারের ঘোষনা করা গম, ধান ও চালের দাম পেলে কৃষকদের উত্পাদন খরচ উঠবে৷ এতে কৃষকরা ফসল উত্পাদনে উত্সাহিত হবে৷ তিনি আরো দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কৃষকদের ভুমিকা অনস্বীকার্য৷ তাই কৃষকরা যাতে সরকারের এই সংগ্রহ অভিযানের সুফল পায় সেদিকে লক্ষ্য রাখার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা৷