দৈনিকবার্তা- ঢাকা, ০৭ এপ্রিল: নির্বাচিত হলে ঢাকাবাসীর জন্য নিজের জীবন উৎসর্গের অঙ্গীকার করেছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে আওয়ামী লীগ-সমর্থিত মেয়র প্রার্থী সাঈদ খোকন। তিনি বলেছেন, সুযোগ পেলে ঢাকাকে বিশ্বমানের নগরী হিসেবে গড়ে তুলব। মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে মেয়র মোহাম্মদ হানিফ ফ্লাইওভারের যাত্রাবাড়ী প্রবেশমুখে নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক প্রচার শুরু কওে খোকন। সেখানেই তিনি এসব কথা বলেন। ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এবং চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আজ মঙ্গলবার থেকে প্রচার শুরু হয়েছে।সাঈদ খোকন বলেন, জননেত্রী যে উন্নয়নের ধারায় দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন, এই ফ্লাইওভার তার প্রতীক। আর বাবা (সাবেক মেয়র মোহাম্মদ হানিফ) সারা জীবন যে পরিশ্রম করেছেন, তার ফসল হচ্ছে এই ফ্লাইওভার। এ জন্য আমি এখান থেকে আমার নির্বাচনের প্রচার শুরু করলাম। আপনারা আমার জন্য মানুষের কাছে ভোট চাইবেন। আমার পিতা যেভাবে ঢাকাবাসীর উন্নয়নের জন্য নিজের জীবন উৎসর্গ করেছেন, নির্বাচিত হলে আমিও ঢাকাবাসীর জন্য নিজের জীবন উৎসর্গ করব।সাঈদ খোকন বলেন, এখানে- সেখানে ময়লা আবর্জনা পড়ে থাকাসহ ঢাকার অনেক সমস্যা আছে। ঢাকাবাসী যদি আমাকে সমর্থন দেয়, সুযোগ দেয় তাহলে সবাইকে নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে বিশ্বমানের নগরী গড়ে তুলব।
প্রচার শুরুর সময় সাঈদ খোকনের ওপর ফুলের পাপড়ি ছিটিয়ে তাঁকে স্বাগত জানান সমর্থকেরা। স্থানীয় অনেক নেতা তাঁকে ফুলের তোড়া দিয়ে শুভেচ্ছা জানান। এর পর সাঈদ খোকনের নেতৃত্বে ফ্লাইওভারের প্রবেশমুখ থেকে মিছিল বের হয়ে টোলপ্লাজা হয়ে আবার প্রবেশমুখে এসে শেষ হয়। এতে স্থানীয় আওয়ামী লীগের তিন শতাধিক নেতা-কর্মী উপস্থিত ছিলেন। এর পর সাঈদ খোকন গাড়িতে উঠে নির্বাচনী প্রচারের উদ্দেশে চানখাঁরপুল অভিমুখে রওনা হন। এ সময় ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এম এ আজিজ সাঈদ খোকনের গাড়িতে ছিলেন।নির্বাচন কমিশনের আচরণবিধি অনুযায়ী, নির্বাচন শুরুর ৩২ ঘণ্টা আগ পর্যন্ত প্রচার চালানো যাবে। এই হিসেবে প্রার্থীরা ২৬ এপ্রিল রাত ১২টা পর্যন্ত প্রচার চালাতে পারবেন। তফসিল অনুযায়ী ২৮ এপ্রিল সকাল আটটা থেকে বিকেল চারটা পর্যন্ত ভোট গ্রহণ চলবে।নির্বাচনী আচরণবিধিতে বলা আছে, জনগণের চলাচলে বিঘœ সৃষ্টি করতে পারে এ ধরনের কোনো সড়কে প্রার্থী বা তাঁর পক্ষে কোনো পথসভা এবং মঞ্চ তৈরি করা যাবে না। সরকারের মন্ত্রী, উপমন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী বা তাঁদের সমমর্যাদার সরকারি সুবিধাভোগী কোনো ব্যক্তি, জাতীয় সংসদের স্পিকার, ডেপুটি স্পিকার, চিফ হুইপ ও হুইপ প্রচারে অংশ নিতে পারবেন না।প্রতীকহীন প্রচার শুরু করে যাত্রাবাড়ী থেকে চাঁনখারপুল যাওয়ার পথে মেয়র মোহাম্মদ হানিফ ফ্লাইওভারে টোল নিয়ে বিড়ম্বনায় পড়তে হয়েছে আওয়ামী লীগ সমর্থিত মেয়র প্রার্থী সাঈদ খোকনকে।
মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার পর নগর ভবনের পেছনের টোল কাউন্টার পার হওয়ার সময় ঢাকার সাবেক মেয়র হানিফের ছেলে খোকনের গাড়িবহর আটকে দেয় ফ্লাইওভারের কর্মচারীরা।এ সময় টোল নিয়ে ফ্লাইওভার কর্মীদের সঙ্গে বিতণ্ডায় জড়ান খোকনের ব্যক্তিগত সহকারী হাবিবুল ইসলাম সুমন। পরে কাউন্টারে গিয়ে তিনি টোল পরিশোধ করলে গাড়িগুলো বেরিয়ে যায়।এ বিষয়ে সুমন বলেন, আমি পেছনের দিকে ছিলাম। আমি বলেছি, সামনের প্রটোকলের গাড়িগুলো ছেড়ে দেন। আমি টোল দিচ্ছি। কিন্তু তারা একটা একটা করে টোল চাচ্ছিল। এটা নিয়ে ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হয়।ওই টোল কাউন্টারের ইনচার্জ হিসাবে পরিচয় দেওয়া এক ব্যক্তি বলেন, আমাদের এখানে একটা একটা গাড়ি থামিয়ে টোল নিতে হয়। তাই একত্রে দেয়ার সুযোগ নেই। তবে এখন আর কোনো ভুল বোঝাবুঝি নেই। মিটে গেছে।কথা কাটাকাটির সময় ফ্লাইওভারের এক কর্মচারীকে উদ্দেশ্য করে সুমনকে বলতো শোনা যায়, আমি তো বলেছি, টাকা পাঠিয়ে দিচ্ছি। আপনার লোকজন খারাপ আচরণ করেছে। গাড়ি আটকে দিয়েছে।জবাবে তিনি বলেন, গাড়ি যাওয়ার সময়ই টোল দিতে হয়। আপনারা আমাদের ভোটেই তো মেয়র হবেন। টোল দিবেন না কেন?এর এক পর্যায়ে ওই ব্যক্তির সঙ্গে কাউন্টারে গিয়ে টোল পরিশোধ করে ওই এলাকা ত্যাগ করেন সুমন।আসন্ন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সমর্থনে মেয়র পদে লড়ছেন সাঈদ খোকন। তার বাবা প্রয়াত মোহাম্মদ হানিফ ঢাকার সাবেক মেয়র। তার নামেই করা হয়েছে যাত্রাবাড়ী-গুলিস্তানের ওই ফ্লাইওভার।