দৈনিকবার্তা- গাজীপুর, ০৭ এপ্রিল: গাজীপুরের কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারে সোমবার রাতে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে নাটোরে জোড়া খুনের মামলার এক আসামির মৃতু্যদন্ড কার্যকর করা হয়েছে৷ তার নাম আজিজুল হক বাচ্চু (৩৫)৷ সে কিশোরগঞ্জ জেলার করিমগঞ্জ থানার পিটুয়া গ্রামের হাফিজ উদ্দিনের ছেলে৷কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার মো. মিজানুর রহমান জানান, নাটোরের বড়ইগ্রাম থানার জলমন্দ গ্রামের জনৈক নুরম্নল ইসলামের বাড়িতে ভাড়া থেকে বাচ্চু মনোহরি ব্যবসা করতো৷ ২০০৫সালের ফেব্রম্নয়ারিতে এক সন্ধ্যায় বাড়ির মালিক সিরাজুল ইসলামের ঘরে ঢুকে তার দু’কণ্যা পাখি খাতুন ওরফে চাঁদনী (১৩) ও দেড় বছরের সুমাইয়া খাতুনকে ছুরিকাঘাতে খুন করে বাচ্চু৷ পরে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে৷ দীর্ঘ শুনানী ও স্বাৰ্যপ্রমাণের শেষে নাটোরের দায়রা জজ আদালত একই বছরের ২৮নবেম্বর তার মৃতু্যদন্ডাদেশ প্রদান করেন৷ পরবর্তীতে ২০১১ সালের ১০জানুয়ারি হাইকোর্ট বিভাগ এবং ২০১৩ সালের ২ ফেব্রম্নয়ারি সুপ্রীমকোর্টের আপীল বিভাগও তার মৃতু্যদন্ডাদেশ বহাল রাখেন৷ পরে প্রাণভিৰা চেয়ে মহামান্য রাষ্ট্রপতির কাছে আবেদন করে তার স্বজনরা৷
অবশেষে গত ৪ মার্চ এ আবেদন না মঞ্জুর হলে সোমবার রাত ১১টা ১মিনিটে আদালতের নির্দেশ অনুযায়ি ফাঁসিতে ঝুলিয়ে বাচ্চুর মৃতু্যদন্ডাদেশ কার্যকর করা হয়৷ এসময় গাজীপুরের সিভিল সার্জন ডা. আলী হায়দার খান, গাজীপুরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ হোসেন, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. শরিফুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন৷ওই জেলকর্মকর্তা আরো জানান, নাটোরের বাড়ির মালিক নূরম্নল ইসলামের এক বোনকে বিয়ে করতে চেয়ে ছিল বাচ্চু৷ কিন্তু তার ওই বোনকে বাচ্চুর কাছে না দিয়ে অন্যত্র বিয়ে দেন৷ পরে নূরম্নল ইসলামের বড় মেয়ে চাঁদনীকে বিয়ের প্রসত্মাব দেয় বাচ্চু৷ তাতেও রাজি হয়নি চাঁদনীর মা-বাবা৷ এঘটনার পর ২০০৫ সালের ২৭ফেব্রম্নয়ারি চাঁদনী ও সুমাইয়াকে বাড়িতে রেখে তার মা-বাবা পাশর্্ববর্তী তাদের এক আত্মীয়ের বাড়ি বেড়াতে যান৷ এ সুযোগে বাচ্চু ওইদিন সন্ধ্যায় সিরাজুল ইসলামের ঘরে ঢুকে তার দুই মেয়েকে উপুর্যপরি ছুরিকাঘাত করে৷ এসময় আহতদের ডাকচিত্কারে প্রতিবেশিরা এগিয়ে আসে এবং বাচ্চুকে ধরে পুলিশে দেয়৷ এঘটনায় চাঁদনী ও সুমাইয়া মারা যায়৷উলেস্নখ্য, ২০১২সালের ২৫জানুয়ারি গাজীপুরে কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কেন্দ্রীয় এ কারাগার চালুর পর এখানে এ নিয়ে দু’জনের মৃতু্যদন্ড কার্যকর হলো৷ আরো চারজনের মৃতু্যদন্ড কার্যকরের অপেৰায় রয়েছে৷