দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ০৫ এপ্রিল: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন,তার সরকার এমন একটা শিক্ষা ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে চায় যেন সরকার পাল্টে গেলেও শিক্ষা ব্যাহত না হয়। তিনি বলেন, শিক্ষার উন্নয়নে সব রাজনৈতিক দলের মনোভাব এক নয়, এ অবস্থায় সরকার অবৈতনিক শিক্ষা বিনামূল্যে বই বিতরণ, নারীশিক্ষার যেসব কার্যক্রম হাতে নিয়েছে তা অক্ষুণ্ন রাখতেই শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টকে আরো জোরদার করতে হবে।রোববার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে তাঁর তেজগাঁও কার্যালয়ে প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্ট ফান্ডের উপদেষ্টা পরিষদের সভায় একথা বলা হয়।সভা শেষে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব এ কে এম শামীম চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, স্কুল-কলেজে গরীব ও মেধাবীদের ভর্তি নিশ্চিতের জন্য আর্থিক সহায়তা প্রদান নীতিমালা শিক্ষার্থীদের ঝরেপড়া হ্রাস করবে।প্রধানমন্ত্রী বলেন শিক্ষা প্রসারে কী করণীয় তা জানতে তিনি বিশ্বের বিভিন্ন দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার খোঁজ খবর নিয়েছেন। শ্রীলংকার শতভাগ শিক্ষা, ভারতের কেরালার শিক্ষায় এগিয়ে থাকা থেকে শিক্ষা নিয়েই নানা উদ্যোগ নিচ্ছেন তিনি।
অনেক দরিদ্র বাবা-মা ছেলে-মেয়েদের শিক্ষা চালিয়ে যেতে পারেন না, তাদের শিক্ষা যেন থেমে না যায় সে জন্য সরকার নানা পদেক্ষপ নিয়েছে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, কেবল সরকার একা নয় সমাজের বিত্তশালীদেরও এগিযয়ে আসতে হবে।সরকার স্কুল-কলেজে দরিদ্র ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের ভর্তি সুনিশ্চিত করতে তাদের আর্থিক সহায়তা দিতে একটি নীতিমালা প্রণয়ন করবে।যে কোন দুর্ঘটনায় মারাত্মক আহত শিক্ষার্থীদের আর্থিক সহায়তা দেয়ার নীতিমালাও তৈরি হচ্ছে।অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামাল, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান প্রফেসর এ কে আজাদ চৌধুরী, ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি কাজী আকরাম উদ্দিন আহমেদ ও সংশ্লিষ্ট সচিবগণ সভায় উপস্থিত ছিলেন।সভায় ভাষণকালে প্রধানমন্ত্রী ১ হাজার কোটি টাকার সীড মানির এ ট্রাস্ট গঠনের তহবিল সংগ্রহের উদ্যোগ নিতে কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন।তিনি বলেন, শিক্ষা বছরের প্রথম দিনে পাঠ্যপুস্তক বিতরণের মতো দেশব্যাপী একটি নির্দিষ্ট দিনে শিক্ষার্থীদের এ ট্রাস্টের অর্থ প্রদান করা হবে।
শেখ হাসিনা বলেন, তাঁর সরকারের প্রধান লক্ষ্য হচ্ছে দারিদ্র্য নির্মূলে একটি শিক্ষিত জাতি গঠন করা। দেশকে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত করতে শিক্ষার কোন বিকল্প নেই। এ জন্য কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষার ওপর গুরুত্ব দেয়া হয়েছে।প্রধানমন্ত্রী বলেন, পাহাড়ি ও উপকূলীয় অঞ্চলের দূরবর্তী স্থানে অবস্থিত স্কুলগুলোর শিক্ষার্থীদের জন্য আবাসিক ব্যবস্থার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।সরকার মেধাবী ও দরিদ্র ছাত্রীদের উচ্চ শিক্ষা অব্যাহত রাখতে সহায়তার জন্য ২০১২-’১৩ অর্থবছরে এক হাজার কোটি টাকার প্রধানমন্ত্রী শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্ট ফান্ড গঠন করে। পরবর্তী ২০১৩-’১৪ অর্থবছরের এ কর্মসূচিতে ছাত্রদেরও অন্তর্ভুক্ত করা হয়।এ কর্মসূচির আওতায় ট্রাস্টের অর্থ আমানতকৃত পাঁচটি বাণিজ্যিক ব্যাংকের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের বৃত্তির টাকা দেয়া হচ্ছে।২০১২-’১৩ অর্থবছরে ১ লাখ ১৬ হাজার ছাত্রীকে প্রায় ৭৩ কোটি টাকা এবং ২০১৩-’১৪ অর্থবছরে ১ লাখ ৭৪ হাজার ৪৪৬ জন ছাত্র-ছাত্রীকে ৯৮ কোটি টাকার বৃত্তি দেয়া হয়।