SONY DSC

দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ০৫ এপ্রিল: রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে গতকাল শনিবার কালবৈশাখীর ঝড় আঘাত হানে। ঝড়ের সাথে বৃষ্টি হয়। ঝড়ে গ্রাম এলাকায় কাঁচা ঘর-বাড়ি বিধস্ত হয়। এছাড়া গাছপালা ভেঙ্গে পড়ে। উঠতি ফসলের ক্ষতি হয়েছে। রেল লাইনে গাছ ভেঙ্গে পড়ায় পশ্চিমাঞ্চলে ট্রেন চলাচল ব্যাহত হয়। ঝড়ের কারণে বহু এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়।এতে বগুড়াসহ দেশের বিভিন্নস্থানে প্রায় ২৪ জন মানুষ মারা গেছে।আবহাওয়া অফিস জানায়, শনিবার সন্ধ্যার পর হযরত শাহজালাল বিমান বন্দরের দিকে ১০৭ কিলোমিটার এবং আগারগাঁও এলাকায় ৫৬ কিলোমিটার বেগে ঝড় বয়ে যায়। এছাড়া রাজশাহীতে ৭০ কিলোমিটার, ঈশ্বরদীতে ৩৭ কিলোমিটার, নওগাঁ জেলার বদলগাছিতে ৬৫ কিলোমিটার, সিলেট ৮৯ কিলোমিটার , ফরিদপুরে ৭৪ কিলোমিটার, বগুড়ায় ৯৬ কিলোমিটার এবং চট্টগ্রামে ৫৪ কিলোমিটার বেগে ঝড় বয়ে যায়।আবহাওয়া অফিস জানায়, রোববার সকাল ৬টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় ঢাকায় ৩০ মিমি, ময়মনসিংহে ১৭ মিমি, টাঙ্গাইলে ৭০ মিমি, ফরিদপুরে ১৫ মিমি, মাদারীপুরে ৭ মিমি, চট্টগ্রামে ৪ মিমি, সন্দ্বীপে ৫ মিমি, সীতাকুন্ডে ৮ মিমি, কুমিল্লায় ২৭ মিমি, মাইজদীকোটে ১১ মিমি, হাতিয়ায় ১০ মিমি, কুতুবদিয়ায় ১২ মিমি, সিলেট ৮২ মিমি, শ্রীমঙ্গলে ২৬ মিমি, রাজশাহীতে ১৪ মিমি, ঈশ্বরদীতে ১৪ মিমি, বগুড়ায় ৩৬ মিমি, খুলনায় ৬ মিমি, সাতক্ষীরায় ১৬ মিমি, যশোরে ৬ মিমি, চুয়াডাঙ্গায় ১৮ মিমি, বরিশালে ১৮ মিমি এবং ভোলায় ৭ মিমি বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।আবহাওয়া অফিস জানায়, রোবাবার সকাল ৯টা থেকে আগামী ২৪ ঘণ্টায় ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের দু’এক জায়গায় অস্থায়ী দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।

বগুড়া:বগুড়ায় শনিবার সন্ধ্যার ভয়াবহ ঝড়ে নিহতের সংখ্যা ১৪ তে দাড়িয়েছে। আহত হয়েছে শতাধিক। আহতরা বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল সহ উপজেলা পর্যায়ের হাসপাতাল গুলোতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।এছাড়া স্থানীয় ভাবে অনেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এর মধ্যে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালেই চিকিৎসাধীন রয়েছে ৬৩ জন। ঝড়ের কারনে বিদ্যুত ব্যবস্থা এখনো বিপর্যস্থ। গোটা জেলায় বিদ্যুত সরবরাহ বন্ধ রয়েছে।সাম্প্রতিক সময়ের মধ্যে বগুড়ায় এটিই ছিলো সবচেয়ে ভয়াবহ ঝড়। এতে কয়েক হাজার কাচাঁপাকা বাড়ি ঘর বিধস্ত সহ শত শত বিদ্যুত পোল উপড় পড়ে।অসংখ্য গাছপালা ভেঙ্গে পড়ে। নিহতরা হলো- আজিরন(৩৫), ছয় মাস বয়সী শিশু নীলা, রজব(১৮), পলাশ(১৭), আব্দুল মান্নান ওরফে পান্না(৩৫), পায়েল(১৭), রাবেয়া বেগম(৬৫), সুজন(৩০), শান্তা বেগম(৫০), ফিরোজা বেগম(৫৫), আসমা(৪০), আজিজুর(৩৫), ইসমাইল(৩৮), ও আফজাল হোসেন(৩৮)।অপর দিকে ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্থ এলাকা গুলোতে লোকজনের ব্যাপক দুর্ভোগে পড়েছেন। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্থদের সাহায্য দেয়া হচ্ছে।প্রায় ১শ’ কিলোমিটার বেগে বয়ে যাওয়া এই ঝড়ে শহর সহ জেলার বেশির উপজেলা লন্ডভন্ড অবস্থায়। জেলার ১২টি উপজেলার মধ্যে ৮টি উপজেলায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষদি হয়। হাজার হাজার বাড়ি ঘর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গাছপালা ও বৈদ্যুতিক খুঁিট উপড়ে ও ভেঙ্গে যায়। বাড়ির টিন উড়ে গিয়ে ঝুলছে বিভিন্ন স্থানে। রাস্তার ওপর অসংখ্য বিদ্যুত পোল পড়ে থাকতে দেখা গেছে। পল্লীবিদুত সমিতি ও বগুড়া বিদ্যুত বিভাগের(বিউবো) পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে অন্তত ৩ শতাধিক বৈদ্যুতিক পোল ভেঙ্গে গেছে এবং ৪ শতাধিক স্পটে বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে রয়েছে। এর মধ্যে গ্রীড থেকে আসা ৩৩ কেভি সরবারহ লাইনও রয়েছে। বিদ্যুত বিভাগ জানিয়েছে, তারা পর্যায়ক্রমে লাইন মেরামত করে আগে মূল সরবরাহ লাইন সচল করার চেষ্টা করছেন। তবে কখন বিদ্যৃুত সরবরাহ স্বাভাবিক করা যাবে সে বিষয়ে বিদ্যুত বিভাগ দুপুর পর্যন্ত নিশ্চিত করে কিছু বলতে পারেনি। বগুড়া বিদ্যুত উন্নয়ন বোর্ডের তত্বাবধায়ক প্রকৌশলী হযরত আলী জানিয়েছেন, তারা আশা করছেন সন্ধ্যার মধ্যে কিছু এলাকায় বিদ্যুত সরবরাহ স্বাভাবিক হতে পারে।ঝড়ের পর শনিবার রাতে এর ভয়াবহতা প্রথম পর্যায়ে জানা না গেলেও রবিবার দিনের আলোর সঙ্গে এর ভয়াবহতা বেড়িয়ে আসে। মুত্যুর সংখ্যাও বাড়তে থাকে। স্বজন ও বাড়ি ঘর হারানো শত শত মানুষের হাহাকার এলাকায় শোকের ছায়া ফেলে। বহুপরিবার হারিয়েছে সবকিছু। তারা এখন খোলা আকাশের নীচে অসহায় হয়ে রয়েছেন। ঝড়ে বিদ্যুত ব্যবস্থা বিপর্যস্ত হয়ে পড়ায় সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ বাড়িয়ে দিয়েছে কয়েক গুন। নিহতদের মধ্যে বগুড়া সদরে ৪, শাজাহানপুর উপজেলায় ৩, সারিয়াকান্দিতে ২, কাহালু উপজেলায় ২ ও গাবতলি, ধুনট এবং সোনাতলা উপজেলায় ১ জন করে মারা যায়। বগুড়া জেলা প্রশাসক শফিকুর রেজা বিশ্বাস জানিয়েছেন, তারা এখন পর্যন্ত ক্ষয়ক্ষতির পরিমান নিরূপন করতে পারেননি তবে ১৪ জনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। ক্ষতিগ্রস্থ এলাকা গুলেতে সাহায্য পাঠান হচ্ছে। এছাড়া নিহত পরিবার প্রতি ২০ হাজার টাকা করে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।

রাজশাহী: শনিবার বিকালে রাজশাহী:জেলার বিভিন্ন এলাকায় বয়ে যাওয়া কালবৈশাখী ঝড়ে ৪ জন নিহত হয়েছে।চলতি মৌসুমে এ এলাকায় প্রথম কালবৈশাখী ঝড়ের সঙ্গে প্রবল বৃষ্টিও ছিল। এতে উঠতি ফসল, আম, লিচুসহ বিভিন্ন ফলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ঝড়ে রাজশাহী মহানগরী ও এর উপকূলে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। প্রায় ১০ ঘণ্টা সংযোগ বিচ্ছিন্ন ছিল।স্থানীয় আবহাওয়া অফিস জানায়, ঝড়ের সময় বাতাসের গতি ছিল ঘণ্টায় ৬০ থেকে ৭০ কিলোমিটার। বিকাল ৫টা ৫০ মিনিটে ঝড় শুরু হয় এবং তা প্রায় ৩০ মিনিট স্থায়ী হয়।নিহতরা হলেন, বাঘা উপজেলার জাহানারা বেগম (৬০), এমাজউদ্দিন (৪৫), পবা উপজেলার আবদুল হাকিম (৩২) এবং সান্দা উপজেলার শাহনাজ বেগম (১৮)।মৃত্যুর খবর শুনে পবা উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা নিহতের বাড়ি গিয়ে শোকসন্তপ্ত পরিবারকে ২০ হাজার টাকা দেন। জনপ্রতিনিধিরা ক্ষতিগ্রস্তদের আর্থিক সহায়তা দেবেন বলে তিনি জানান।তাৎক্ষণিকভাবে ঝড়ের কারণে সৃষ্ট ক্ষতির পরিমাণ জানা যায়নি। আহত ২০ জনকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

সিরাজগঞ্জ : সিরাজগঞ্জের উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া ঝড়, শিলাবৃষ্টি ও বজ্রপাতের কারনে ২ জন নিহত এবং একজন নিখোঁজ হয়েছেন।নিহতরা হলেন: কাজিপুর উপজেলার পীরগাছা গ্রামের মোজাম্মল হক (৫৫) ও উল্লাপাড়া উপজেলার দুর্গাপুর গ্রামের আব্দুস সবুরের ছেলে ফজলার রহমান (৪৫)।শনিবার সন্ধ্যায় বয়ে যাওয়া ঝড় ও শিলা বৃষ্টিতে বিপুল পরিমাণ জমির ফসল নষ্ট ও অসংখ্য গাছপালা ভেঙ্গে পড়েছে এবং শিলাবৃষ্টিতে আমের মুকুলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।এছাড়া ঝড় শুরু হবার সাথে সাথে জেলার বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। প্রায় ৬ ঘন্টা পর গভীর রাতে বিদ্যুৎ সংযোগ প্রদান করা হয়। আকস্মিকভাবে ঝড় ও শিলা বৃষ্টির সময় বজ্রপাতে উল্লাপাড়ার ফজলার রহমান নিহত হন। এছাড়া শিলার আঘাতে ধান গাছগুলো মাটির সঙ্গে নেতিয়ে পড়েছে। ঝড়ে প্রায় অর্ধেক ধান গাছ নষ্ট হয়ে গেছে বলে স্থানীয় এলাকাবাসী জানান।

DoinikBarta_দৈনিকবার্তাeaf51-11তারা বলেন, কাজীপুর উপজেলার চালিতাডাঙ্গা, সাতকয়া, শিমুল দাইড়, হরিনাথপুর, পাঁচগাছী, সোনামুখী এবং উল্লাপাড়া উপজেলার উধুনিয়া, সলপ, মোহনপুর, পূর্ণিমাগাতী গ্রামের ব্রি-৫৮, ব্রি-২৮ ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এ ছাড়াও ঝড়ে জেলার বিভিন্ন এলাকায় অসংখ্য গাছ উপড়ে পড়েছে।এদিকে , ঝড়ের সময় কাজীপুর উপজেলার চরাঞ্চলের নাটুয়ারপাড়া হাট থেকে শ্যালো ইঞ্জিন চালিত নৌকা যোগে ২০/২৫জন যাত্রী জামালপুর জেলার সরিষাবাড়ি উপজেলার সীমান্তবর্তী খাসরাজবাড়ি ইউনিয়নের পীরগাছার উদ্দেশ্যে রওনা হয়। তীব্র ঝড়ে মাঝ নদীতে নৌকাটি ডুবে যায়। পরে রাতেই ঘটনাস্থলের ভাটি থেকে মোজাম্মেলের লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় একই গ্রামের আব্দুল খালেক নিখোঁজ রয়েছেন।কাজীপুরের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাফিউল ইসলাম জানান, ঝড়ের সময় নৌকা ডুবিতে পীরগাছা গ্রামের মোজাম্মল হক নিহত ও একই গ্রামের আব্দুল খালেক নিখোঁজ রয়েছেন। উপজেলা প্রশাসন নিহতের পরিবারকে ১০ হাজার টাকা অনুদান প্রদান করেছে।

যশোর: যশোরে বজ্রপাতে নুরুজ্জামান (১২) নামে এক স্কুলছাত্রের মৃত্যু হয়েছে। এতে দু’জন আহত হয়েছেন।আহতরা হলেন-হানয়ার কুছুরপুর এলাকার সুলতান (২৮) ও সাধন বিশ্বাস (৩০)। রোববারদুপুরে শহরের মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে এ দুর্ঘটনা ঘটে।নুরুজ্জামান সদর উপজেলার শহিদ গাজীর ছেলে ও শহীদ স্মৃতি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র।স্থানীয়রা জানান, দুপুরে হালকা বৃষ্টির মধ্যে নুরুজ্জামান ও তার সহপাঠিরা ফুটবল খেলছিল। এ সময় বজ্রপাত হলে নুরুজ্জামান অজ্ঞান হয়ে যায়। পরে তাকে উদ্ধার করে যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। বজ্রপাতে আহত সুলতান ও সাধন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
খুলনা: সাহিত্য সম্রাট বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের স্মৃতি বিজড়িত একটি ঐতিহাসিক বকুল ফুলের গাছ খুলনা জেলা প্রশাসকের বাসভবন এলাকায় দাঁড়িয়েছিল। রোববার বিকালে কালবৈশাখী ঝড় কেড়ে নিয়েছে বঙ্কিমের স্মৃতি বিজড়িত দুই শত বছরের অধিক বয়সের এ বকুল ফুলের গাছটিকে।বঙ্কিমচন্দ্র এ বকুল গাছের নিচে বসে সরকারি কাজ শেষে কপালকুণ্ডলা উপন্যাসের বেশ কয়েকটি অধ্যায় রচনা করেছিলেন।

ঐতিহাসিক এ বকুলতলায় প্রতিবছর ১ বৈশাখে আয়োজন করা হয় পানতা ইলিশ ও মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। ১ বৈশাখের আগে গাছটি ভেঙে যাওয়ায় পহেলা বৈশাখের আনন্দ অনেকটা ম্লান হয়ে গেছে। খুলনা জেলা প্রশাসক মো. মোস্তফা কামাল বিকাল ৫টা ১৮ মিনিটে বলেন, বকুল গাছটি ঝড়ে ভেঙ্গে পড়েছে।তিনি জানান, এর আগে গত বছর ঝড়ে গাছটির বড় একটি অংশ ভেঙ্গে পড়েছিল। তারপর গাছটিকে বেঁধে রাখা হয়েছিল। কিন্তু অনেক চেষ্টা করেও গাছটিকে রক্ষা করা গেল না।গাছটি ভেঙ্গে যাওয়ায় দু:খ প্রকাশ করেন খুলনাঞ্চলের ইতিহাস গবেষক অধ্যাপক গোলাম মোস্তফা সিন্দাইনী।তিনি বলেন, এ বকুল গাছের নিচে বসে বঙ্কিমচন্দ্র বিকেল, সন্ধ্যা ও রাতের অনেক সময় কাটিয়েছেন। উপভোগ করেছেন নদীর অপূর্ব রূপ।প্রখ্যাত গবেষক অধ্যাপক মুহম্মদ আবু তালিবের উদ্ধৃতি দিয়ে গোলাম মোস্তফা সিন্দাইনী বলেন, যতদুর জানা যায়, খুলনা জেলার প্রথম স্পেশাল ম্যাজিস্ট্রেট বঙ্কিমচন্দ্রের কাছ থেকেই খুলনা জেলার ধারাবহিক সাহিত্য চর্চার সূত্রপাত হয়েছে।স্বয়ং বঙ্কিমচন্দ্রের মাধ্যমে খুলনা থেকেই সাহিত্য চর্চার সূত্রপাত হয়েছে। তার প্রথম উপন্যাস দুর্গেশনন্দিনী ও‘রাজমোহন পতœী (ইংরেজি), খুলনায় ম্যাজিস্ট্রেট থাকাকালেই রচনা করেছিলেন।এই বকুল গাছটির তলায় বসেই পড়েছেন ও তৈরী করেছেন বইয়ের পাণ্ডুলিপি। সাহিত্যসম্রাট বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় নেই। তার বাসভবনটি আজও আছে। তবে বাসভবনটি বিভিন্ন সময়ে সম্প্রসারণ ও সংস্কার করা হয়েছে।

খুলনা: খুলনার রূপসা উপজেলার পালের হাট এলাকায় আবুল কাশেম (৪২) নামের এক ইটভাটার শ্রমিক নিহত হয়েছেন। এ সময় তার সাথে থাকা অপর ২ শ্রমিক আহত হন। রোববার বিকেল এ দুর্ঘটনা ঘটে।নিহত কাশেমসহ আহতরা কামাল হোসেনের ইট ভাটায় কর্মরত ছিলেন। প্রাথমিকভাবে আহতদের নাম জানা যায়নি।স্থানীয়রা জানায়, বিকেলে হালকা ঝড়-তৃষ্টির মধ্যে ইট ভাটায় কাজ করার সময় বজ্রপাতে গুরুতর আহত হন তারা। পরে তাদের উদ্ধার করে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে আবুল কাশেম মারা যান। আহত অপর ২জন খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।রূপসা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মেসবাহ উদ্দিন সন্ধ্যা ৬টা ৩৩ মিনিটে বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। কেবল শুনলাম।

ঝিনাইদহ: ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার রাখালগাছী ইউনিয়নের বহিরগাছী গ্রামে বজ্রপাতে জহির উদ্দিন (৩০) নামে এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। রোববার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে। জহির বহিরগাছী গ্রামের মমিন উদ্দিনের ছেলে।কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসেন বাংলানিউজকে জানান, বিকেলে হালকা ঝড়-বৃষ্টির মধ্যে মাঠে কাজ করার সময় বজ্রপাতে গুরুতর আহত হন জহির উদ্দিন। এ সময় তার সঙ্গীরা তাকে উদ্ধার করে কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে দায়িত্বরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

রাজারহাট(কুড়িগ্রাম) থেকেঃ গতকাল কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া টর্নেডোর আঘাতে ৫টি গ্রাম লন্ডভন্ড হয়েছে। এতে ২টি মন্দিরসহ ২শতাধিক আধাপাকা বাড়িঘর বিধ্বস্থ হয়ে পড়েছে। এ সময় কমপক্ষে ৩০জন আহত হয়েছে। এলাকাবাসীরা জানান, গত শনিবার গভীর রাতে দক্ষিণ-পশ্চিম কোণ থেকে আসা আকষ্মিকভাবে টর্নেডো উপজেলার ঘড়িয়ালডাঙ্গা ইউনিয়নের কিশামত নাখেন্দা, মুশরুত নাখেন্দা, পশ্চিম দেবত্তর, সরিষাবাড়ী,খিতাবখাঁ ও কাশেম বাজার সহ ৫টি গ্রামের উপর দিয়ে বয়ে যায়। এসময় টর্নেডোর আঘাতে ২শতাধিক ঘরবাড়ি ও অসংখ্য গাছপালা উপড়ে পড়ে। টর্নেডোর আঘাতে যোগী পাড়া দুর্গা মন্দির ও হালমাঝিটারী কালী মন্দির ভেঙ্গে যায়। এছাড়া ঘরের চাপায় পড়ে আক্রান্ত এলাকার শিবেন চন্দ্র(৬৫), কুসুমবালা(৭৫), জ্যোতি রানী (১২), দুলাল চন্দ্র(৩৫), নজরুল ইসলাম(৪০), বাবলু(৪২), নরেন চন্দ্র(৪০), কৃষ্ণ(৪২),আলম(৪০), ডাঃ করুনাকান্ত(৪৮), ফুল(৪২), রফিক(৪২), লুৎফর(৫০), প্রফুল্ল্য(৫০), শাসছুল হক(৪৫), সুবল(৪০), বিটন(৪৫), রতন(৫৫), স্বপন(৫৫), শওকত আলী(৫০), আজাহার(৫০), নুরনবী(৫৫) আহত হয়েছে। এলাকাবাসীরা তাদের উদ্ধার করে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়। এছাড়া টর্নেডোর সময় জীবন বাঁচানোর জন্য নিরাপদ আশ্রয় নিতে অনেকে ঘরবাড়ি ছেড়ে ছোটাছুটি করে। বর্তমানে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারগুলো খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবন যাপন করছে। এব্যাপারে ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোঃ নজরুল ইসলাম জানান, প্রায় দেড় থেকে ২শতাধিক ঘরবাড়ী ভেঙ্গে গেছে। আহত হয়েছে ২৫/৩০জন। সকলকে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। ঘটনার পর পর রাজারহাট উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ আবুল হাসেম, ভাইসচেয়ারম্যান কফিল উদ্দিন ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আঃ মোতালেব ক্ষতিগ্রস্থ এলাকা পরিদর্শন করেন। গত রোববার সকালে কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক এ বি এম আজাদ ক্ষতিগ্রস্থ পরিবার গুলোর খোঁজখবর নিয়েছেন। এদিকে এ রিপোর্ট লেখাপর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারগুলোর মাঝে এখন পর্যন্ত কোনো সরকারী সহায়তা পৌছেনি। এদিকে প্রচন্ড ঝড়ে মৌসুমি ফসল ও বোরো ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।