দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ৩ এপ্রিল: ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে সরকার দলীয় মেয়র প্রার্থী মোহাম্মদ সাঈদ খোকনের প্রচারণায় সক্রিয় হয়েছে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাজী মো. সেলিম। শুক্রবার তারা এক সঙ্গে লালবাগের শাহী মসজিদে জুমার নামাজ আদায় করেছেন।এখান থেকেই শুরু হচ্ছে দুই জনের যৌথ প্রচার অভিযান। এ বিষয়টি নিশ্চিত করেন, সাঈদ খোকনের ব্যক্তিগত সহকারী মো. সুমন।সুমন বলেন, জুমার নামাজ আদায় শেষে সাঈদ খোকন হাজী মো. সেলিমের লালবাগের বাসায় দুপুরের খাবার খান। তারপর তারা দুইজন এক সঙ্গে নির্বাচনী প্রচারণায় নামেন।এর আগে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বচানে হাজী সেলিমও নির্বাচন করবেন বলে নির্বাচনী এলাকায় বিলবোর্ড ঝুলান। তবে দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে তিনি নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান।তারও আগে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচনের জন্য দক্ষিণে প্রয়াত সাবেক মেয়র মোহাম্মদ হানিফে ছেলে বিশিষ্ট ব্যবসায়ী সাঈদ খোকনকে ও উত্তরে বিশিষ্ট ব্যাবসায়ী ও এফবিসিসিআই’র সাবেক সভাপতি মো. আনিসুল হককে মনোনীত করেন।প্রথম দিকে ব্যাপকভিত্তিক প্রচার শুরু করলেও দলীয় সমর্থন না পাওয়ায় মনোনয়নপত্রই সংগ্রহ করেননি হাজী মো. সেলিম।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বাধা পাওয়ার অভিযোগ তুলে তিন দিন আগেও যিনি সংসদে কথা বলেছেন, সেই হাজি সেলিমই এখন দল মনোনীত প্রার্থী সাঈদ খোকনের হয়ে মাঠে নেমেছেন।শুক্রবার চকবাজার শাহী জামে মসজিদে জুমার নামাজ শেষে মহানগর আওয়ামী লীগের এই দুই নেতা গলাগলি করে বাইরে অপেক্ষমাণ সাংবাদিকদের সামনে আসেন। কেবল একসঙ্গে নামাজ পড়া নয়, নিজের বাসায় খোকনকে নিয়েই দুপরের খাবার খেয়েছেন স্বতন্ত্র সাংসদ সেলিম। দুই জায়গাতেই তাদের সঙ্গে ছিলেন আওয়ামী লীগের বেশ কয়েকজন নেতা।মসজিদ থেকে বের হয়ে খোকন সাংবাদিকদের বলেন,সেলিম ভাই নামাজ পড়ার দাওয়াত দিয়েছিলেন।তাই তার সঙ্গে নামাজ পড়লাম।আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ ও জাহাঙ্গীর কবীর নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, নারায়ণগঞ্জের সাংসদ নজরুল ইসলাম বাবু এবং সাবেক সাংসদ মোস্তফা জালাল মহিউদ্দীনকে এ সময় সেলিম- খোকনের সঙ্গে দেখা যায়।ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এম এ আজিজ, সাংগঠনিক সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ এবং ছাত্রলীগ সভাপতি উদিউজ্জামান সোহাগও সেখানে ছিলেন।
প্রতীক বরাদ্দের আগে েেনতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে এভাবে জমায়েতে আচরণবিধি লঙ্ঘন হলো কি না- এমন প্রশ্নে খোকন বলেন, মানুষের সুস্বাস্থ্য কামনা করে এবং নিজের জন্য শুধু দোয়া চেয়েছি। সেলিম ভাইয়ের দাওয়াতেই দলের নেতাকর্মীরা এখানে এসেছিলেন। আমরা দুজন এখানে আসায় কেউ কেউ এসেছেন।
মসজিদ থেকে খোকনকে নিয়ে লালবাগে নিজের বাসা আরজু কপ্লেক্সে যান হাজি সেলিম। সেখানেই তারা দুপুরে খাবার খেয়েছেন বলে খোকনের একান্ত সচিব হাবিবুল ইসলাম সুমন জানিয়েছেন।ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের এ দুই নেতার ঘনিষ্ঠজনরা জানিয়েছেন, দলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী হাজি সেলিম এখন থেকে খোনকের পক্ষেই কাজ করবেন।ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায় থেকে সবুজ সংকেত পেয়ে এবার দক্ষিণের মেয়র পদের মনোনয়নপত্র নেন ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাঈদ খোকন, যিনি ঢাকার সাবেক মেয়র মোহাম্মদ হানিফের ছেলে।
কিন্তু মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাজি মোহাম্মদ সেলিমও মেয়র হতে সাংসদ পদ ছাড়ার ঘোষণা দিয়ে মনোনয়নপত্র কেনেন। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিনকে হারিয়ে স্বতন্ত্র সাংসদ হয়েছেন তিনি।আইন অনুযায়ী, সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে সংসদ সদস্যপদ ছাড়তে হয়; যা হাজি সেলিমের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য ছিল।এই পরিস্থিতিতে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা দলের নেতা হাজি সেলিমকে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াতে বলেন বলে গণমাধ্যমের খবর। এরপর হাজি সেলিম মনোনয়নপত্র জমা না দিয়ে ফেইসবুকে এক স্ট্যাটাসে জানান, তিনি আজমির শরিফ জিয়ারতে ভারতে যাচ্ছেন। তার সহকর্মীরাও একই কথা জানান।মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় শেষ হওয়ার পরদিন সোমবার আওয়ামী লীগের এই নেতাকে দেখা যায় সংসদে। তিনি স্পিকারকে বলেন, মেয়র প্রার্থী হতে তিনি সংসদ সদস্যপদ ছাড়তে চিঠি দিলেও তা ছিঁড়ে ফেলা হয়েছে।তবে কে ছিঁড়েছে, সে বিষয়ে কিছু বলতে রাজি হননি পুরান ঢাকার এই ব্যবসায়ী। প্রশ্নে পরে তিনি বলেন, এইডা তো কওন যাইব না।