Kamal

দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ০২ এপ্রিল:গঠনতন্ত্র অনুয়ায়ী আইসিসির সভাপতি হিসেবে আ হ ম মুস্তফা কামালের ট্রফি তুলে দেয়ার কথা ছিল। কিন্তু  মেলবোর্নের ফাইনালে  সেদিন বিজয়ী দলের হাতে ট্রফি তুলে দিতে পারেননি তিনি। এরপরই মুস্তফা কামাল বলেছিলেন, দেশে ফিরে সবকিছুই ফাঁস করে  দেবেন। অবশেষে বুধবার দুপুরে দেশে ফিরে ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে সাংবাদিকদের সামনে শ্রীনবাসনের নামটিও মুখে আনতে চাইলেন না। বললেন নোংরা লোকের নাম মুখেও আনতে চাই না।

আইসিসির চেয়ারম্যান এন শ্রীনিবাসনের কঠোর সমালোচনা করেছেন বিসিবির সাবেক সভাপতি আ হ ম মুস্তফা কামাল।  একই সঙ্গে এই বিতর্কিত ব্যক্তির হাতে ক্রিকেট কতটা নিরাপদ তা নিয়েও শঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি। প্রশ্ন তোলেন, যার সবকিছুই দুর্নীতিতে নিপতিত, তাকে দিয়ে কিভাবে ক্রিকেটের উন্নতি সম্ভব? তাই আমি পদত্যাগ করে তার মতো অসৎ ব্যাক্তির বিচারের রাস্তাটা দেখিয়ে দিলাম।

আইসিসির সদ্য পদত্যাগকারী সভাপতি হিসেবে তিনি আরও বলেন, ‘আমি বলবো, এদের মস্তিষ্ক বিকৃত, এরা স্বাভাবিকভাবে কিছু চিন্তা করতে পারে না। আইসিসির  কোনো দোষ নাই। একজন বা দুইজন নয়, এমন কয়েকজন আছেন, তাদের সরানোর পথটি আমি করে দিলাম।’

আইপিএল স্পট ফিক্সিং কেলেঙ্কারির পর বারবার বিতর্কে জড়িয়েছে শ্রীনির নাম। আইপিএল কেলেঙ্কারিতে নাম আসার কারণে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিসিআই) সভাপতি থেকে সরে যেতে বাধ্য হন শ্রীনিবাসন। এমনকি সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে পরবর্তীতে বিসিসিআইয়ের নির্বাচনেও অংশ নিতে পারেননি শ্রীনি।

এ বিষয়ে মুস্তফা কামাল বলেন, ‘একজন বিতির্কিত ব্যাক্তি তিনি। নিজের দেশেও বিতর্কিত। বিভিন্ন মামলায় জর্জরিত। আপনারা জানেন, মামলাগুলো কী? এমন লোক যদি আইসিসির দায়িত্বে থাকে, তাহলে ক্রিকেটের কি অবস্থা হবে? আপনারা একবার ভেবে দেখুন!’

ক্রিকেটকে কলুষিত করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছেন শ্রীনিবাসন- এমনটাই মনে করছেন মুস্তফা কামাল। আর তাই বিশ্বকাপ ক্রিকেটের ফাইনালেই জবাবটা পেয়ে গেছেন ভারতের ক্রিকেট বিতর্কিত ব্যাক্তিটি।  সেদিন মেলবোর্নে শ্রীনিকে দেখা মাত্রই গ্যালারি থেকে ভেসে আসে ধুয়ো ধ্বনি, তীব্র বিদ্রূপ।

এ ব্যাপারে  মুস্তফা কামাল  বলেন, ‘দেখেন কী বিচার! সেদিন তার নাম উচ্চারণ হতেই গ্যালারি থেকে ‘মানি না, মানি না’ ধিক্কার ভেসে এল। যদিও সেদিন ৯০ হাজার দর্শকদের মধ্যে হাতে গোনা কয়েকজন বাংলাদেশি দর্শক ছিল। আসলে অস্ট্রেলিয়ানরাও তার এই কাজটিকে কোনোভাবেই সমর্থন করেনি। এমনকি  কয়েকজন অস্ট্রেলিয়ান খেলেয়াড়ারও তার সঙ্গে হাত মেলাতে আগ্রহ দেখায়নি।’

যখন পুরস্কার দেবার জন্য মঞ্চে উঠলেন শ্রীনিবাসন, আর মেলবোর্নের পুরো গ্যালারি ব্রিদ্রুপ ধ্বনিতে ভরে উঠলো। পরে শচিন টেন্ডুলকার মঞ্চে উঠায় কিছু হলেও রক্ষা পায় বলে জানান বিসিবির সাবেক সভাপতি, ‘ তার নাম যখন ঘোষণা করল, মাঠের সব মানুষ তখন বলেছে, মানি না, মানি না। ধুয়ো দিয়ে সেই পঁচা, দুর্গন্ধময় লোকটাকে অপমান করেছে। পরে লুকিয়ে কোনো রকমে মাঠ থেকে বের হন তিনি। আমি মনে করি, ক্রিকেট বিজয়ী হয়েছে, সত্যের জয় হয়েছে। যারা গায়ের জোরে কাজ করতে চায়, তারা বিজয়ী হয়নি। পুরো ক্রিকেট বিশ্ব দেখেছে আমার সঙ্গে কেমন অন্যায় করা হয়েছে।’

আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, ‘যে মানুষটি নিজের দেশে বিতর্কিত, ক্রিকেটে বিতর্কিত, তিনি কিনা আইসিসির দায়িত্বে! এমন মানুষ দায়িত্বে থাকলে ক্রিকেট চলবে কী করে? ১৬ কোটি মানুষকে ছোট করে সভাপতির পদে থাকতে চাই না। যারা অসাংবিধানিক ও নিয়মনীতির তোয়াক্কা করে না, তাদের সঙ্গে আমি কাজ করতে পারি না।’