image_431_79180

দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ০২ এপ্রিল: এক বছরে দেশে ছোট-বড় সড়ক দুর্ঘটনা হয়েছে পাঁচ হাজার ৯২৮টি৷ এতে নিহত হয়েছেন আট হাজার ৫৮৯ জন এবং আহত হয়েছেন ১৭ হাজার ৫২৪ জন৷২০১৪ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সড়ক দুর্ঘটনার ওপর এ প্রতিবেদন প্রকাশ করে বাংলাদেশে যাত্রী কল্যাণ সমিতি৷বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর একটি শপিং কমপ্লেঙ্ েএ প্রতিবেদন প্রকাশ করে সংগঠনটি৷

প্রতিবেদনের আলোকে গত বছরের সড়ক দুর্ঘটনার সামগ্রিক চিত্র তুলে ধরেন সংগঠনের মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী৷ এ সময় সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন৷যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব বলেন, দেশের বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক, অনলাইন সংবাদমাধ্যম, টেলিভিশন এবং পাঁচটি স্থানীয় দৈনিকে প্রচারিত ও প্রকাশিত সড়ক দুর্ঘটনার সংবাদ মনিটরিং করেছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির সড়ক দুর্ঘটনা মনিটরিং সেল৷ সংবাদমাধ্যম থেকে তথ্য যাচাই-বাছাই করে এ প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে৷

প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৪ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত এক বছরে পাঁচ হাজার ৯২৮টি ছোট-বড় সড়ক দুর্ঘটনায় সর্বমোট ২৬ হাজার ১১৩ জন যাত্রী, চালক ও পরিবহন শ্রমিক দুর্ঘটনার শিকার হয়েছেন৷ এসব দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন আট হাজার ৫৮৯ জন, আহত হয়েছেন ১৭ হাজার ৫২৩ জন৷

এর মধ্যে হাত বা পা বা অন্যকোনো অঙ্গহারিয়ে চিরতরে পঙ্গু হয়েছেন এক হাজার ৬২৩ জন৷প্রতিবেদনে বলা হয়,এসব দুর্ঘটনার সিংহভাগই পরিবারের একমাত্র উপর্জনক্ষম ব্যক্তি হারিয়ে দরিদ্রতার কাতারে নেমে এসেছে৷ একই সময়ে সরকারি হিসেবে প্রায় দুই হাজার ৩০০টি সড়ক দুর্ঘটনায় মামলা হয়েছে৷

এসময় এক হাজার ২৬৬টি বাস, এক হাজার ৪১৩টি ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান, ৭১২টি হিউম্যান হলার, ৩৯০টি কার-জিপ-মাইক্রোবাস, এক হাজার ২৩১টি অটোরিকশা, এক হাজার ৪৬৮টি মোটরসাইকেল, এক হাজার ১৭৩টি ব্যাটারিচালিত রিকশা, এক হাজার ৬৯টি নছিমন-করিমন দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে৷এসব দুর্ঘটনায় এক হাজার ২৫৬ জন শিক্ষার্থী, ১৫৬ জন শিক্ষক, ৬৮ জন সাংবাদিক, ৬৩ জন চিকিত্‍সক, ৯০ জন আইনজীবী, ৬৩ জন ইঞ্জিনিয়ার, ২১৫ জন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য (পুলিশ, সেনা সদস্য, বিজিবি ও আনসার সদস্য) ছাড়াও ৯৯১ জন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী, ১৪২ জন সরকারি কর্মকর্তা দুই হাজার ২২২ জন নারী ও এক হাজার ৪৬৯ শিশু সড়ক দুর্ঘটনার শিকার হয়েছেন৷

প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, এসব দুর্ঘটনা পর্যবেক্ষণ করে দেখা গেছে, জাতীয় ও আঞ্চলিক মহাসড়কে ৫৩ ভাগ, শহর এলাকায় ২৬ ভাগ, গ্রামের সড়কে ২১ ভাগ দুর্ঘটনা সংগঠিত হয়েছে৷ তবে শহর এলাকা ও গ্রামের হাট-বাজার এলাকায় ফুটপাত দখলের কারণে এবং বাস-বে না থাকায় পথচারীর মৃত্যুর হার ৬০ শতাংশে পৌঁছেছে৷ এছাড়াও মুখোমুখী সংঘর্ষে ৫৮ ভাগ, খাদে পড়ে ১৮ ভাগ, নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ১৩ ভাগ এবং অন্যান্য কারণে ১১ ভাগ দুর্ঘটনা ঘটেছে৷

প্রতিবেদনে দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছে- ফুটপাত দখল, ওভার টেক, ওভার স্পিড ও ওভার লোড, হেলপার দিয়ে গাড়ি চালানো, রাস্তা-ব্রিজের নির্মাণ ত্রুটি, গাড়ির ত্রুটি, যাত্রীদের অসতর্কতা এবং ট্রাফিক আইন অমান্য ইত্যাদি৷