দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ০১ এপ্রিল: পরিস্থিতি বুঝে সিটি নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিবউদ্দিন আহমদ।বুধবার সন্ধ্যায় নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা জানান তিনি।এর আগে বিএনপির সাত সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল সিটি নির্বাচনের ১৫ দিন আগে ঢাকা ও চট্টগ্রামে সেনা মোতায়েনের জন্য সিইসির কাছে দাবি জানান। সে প্রসঙ্গেই সিইসি একথা বলেন।তিনি বলেন, সিটি করপোরেশন নির্বাচন সুষ্ঠু করতে যা যা করণীয় কমিশনের পক্ষ থেকে তাই করা হবে।আটক ও গ্রেফতারকৃত বিএনপি নেতাকর্মীদেও প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এটা নির্বাচন কমিশনের বিষয় না। এটা আদালতের বিষয়। আদালত সিদ্ধান্ত দেবেন জামিন পেয়ে নেতাকর্মীরা গোপনে থাকবেন না প্রকাশ্যে নির্বাচনী কার্যক্রমে অংশ নেবেন।
এর আগে আসন্ন ঢাকা ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েন করার জন্য প্রধান নির্বাচন কমিশনারের (সিইসি) কাছে দাবি জানায় বিএনপি।বুধবার বিকেলে বিএনপির ছয় সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল সিইসির সঙ্গে সাক্ষাৎ করে অপেক্ষমান সাংবাদিদের এ কথা জানান।প্রতিনিধি দলের নেতৃত্বে ছিলেন, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আ স ম হান্নার শাহ ও জমির উদ্দিন সরকার।এসময় তারা বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ বন্ধ থাকা দলের অন্য কার্যালয়গুলো খুলে দেয়ারও দাবি জানান।এর আগে ৩টায় প্রতিনিধি দলটি নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ে প্রবেশ করে।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী রকিবউদ্দিন আহমদের সঙ্গে দেখা করে আসন্ন সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে সেনা মোতায়েনের দাবি জানায় বিএনপি প্রতিনিধি দল। এছাড়া নয়াপল্টনের বন্ধ করে রাখা কেন্দ্রীয় কার্যালয় খুলে দেযা এবং বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থীদের পুলিশি হয়রানি না করারও আহ্বান জানায় প্রতিনিধি দলটি।বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্রিগেডিয়ার (অব.) আ স ম হান্নান শাহ এবং ব্যারিস্টার জমিরুদ্দিন সরকারের নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলটি বুধবার বিকেলে শেরে বাংলা নগরের ইসি কার্যালয়ে উপস্থিত হন। বৈঠক শেষে বেরিয়ে বিকেল পৌনে ৫টার দিকে অপেক্ষমাণ সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তারা।এ সময় হান্নান শাহ বলেন, দলীয় কার্যালয় খুলে দেয়া, বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থীদের পুলিশি হয়রানি না করা সহ আসন্ন সিটি নির্বাচনে সেনা মোতায়েনের দাবি জানিয়েছি আমরা। সিইসি আমাদের দাবিগুলো বিবেচনার আশ্বাস দিয়েছেন।এ ছাড়াও বিএনপির নয়াপল্টনের কার্যালয় ও দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক কার্যালয়ের তালা খুলে দেওয়ার জন্য প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী রকিবউদ্দীন আহমদকে অনুরোধ জানায় দলটি। সিইসির সঙ্গে এক বৈঠকে দলের পক্ষ থেকে এসব দাবি জানানো হয়।
ঢাকা ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচন বিষয়ে একগুচ্ছ দাবি নিয়ে বেলা তিনটার দিকে সিইসির সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে যান বিএনপির সাত সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল। আ স ম হান্নান শাহ ছাড়াও স্থায়ী কমিটির অপর সদস্য জমির উদ্দিন সরকার, বিএনপি নেতা সৈয়দ সুজাউদ্দিন ও মুশফিকুর রহমান, নির্বাচন কমিশনের সাবেক সচিব আব্দুর রশীদ সরকারসহ সাতজন নির্বাচন কমিশনে যান। আব্দুর রশীদ সরকার এক এগারোর আগের নির্বাচন কমিশনের সচিব ছিলেন। সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন আ স ম হান্নান শাহ ও জমির উদ্দিন সরকার।হান্নান শাহ সাংবাদিকদের বলেন, সিইসি কাজী রকিব উদ্দিন আহমদ তাঁদের কথা মনোযোগ দিয়ে শুনেছেন। আইনের মধ্যে থেকে নির্বাচন সুষ্ঠু করতে যা যা করা দরকার তিনি করবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন। হান্নান শাহ বলেন, তাঁরা রাজনৈতিক দল হিসেবে সিইসির কাছে কিছু পয়েন্ট দিয়েছেন।
তিনি বলেন, বিএনপির নয়াপল্টনের অফিস ও খালেদা জিয়ার অফিসের তালা খুলে দেওয়ার জন্য সরকারকে অনুরোধ করতে সিইসিকে তাঁরা অনুরোধ করেছেন।হান্নান শাহ বলেন,‘নির্বাচন সুষ্ঠু করার জন্য সবার জন্য সমান সুযোগ (লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড) দরকার। আমাদের প্রার্থীরা যাতে ভোটারদের কাছে যেতে পারে, সে জন্য আমরা সেনা মোতায়েনের দাবি করেছি। নির্বাচনী এলাকায় যাতে সন্ত্রাসী-মাস্তানি না হয় সে জন্য ব্যবস্থা নিতে বলেছি। আর ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের তালিকা আগেই প্রকাশ করতে বলেছি যাতে বিতর্কিত কেউ যেন নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করতে না পারে।স্থায়ী কমিটির অপর সদস্য জমির উদ্দিন সরকার সাংবাদিকদের বলেন, আমাদের দুটি পার্টি অফিসে তালা, এটা মৌলিক অধিকারের পরিপন্থী।
অজ্ঞাতনামা দুই হাজার ব্যক্তির নামে মামলা আছে, এই অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের ধরার নামে যেন আমাদের দলীয় লোকদের ধরে নিয়ে না যায়। যে লোক জামিনে আছে তাদের যেন হয়রানি না করা হয়। কারও বিরুদ্ধে আদালত কর্তৃক চার্জ গঠনের আগে কাউকে ধরা বেআইনি। সিইসি বলেছেন, সামনে আইনশৃঙ্খলা কমিটির মিটিং আছে, সেখানে বিষয়গুলো আলোচনা করবেন। সাংবাদিকেরা জানতে চান, তাঁরা সিইসির বক্তব্যে সন্তুষ্ট কি-না? এর জবাবে সাবেক এই স্পিকার বলেন, সন্তুষ্টি নির্ভর করছে সিইসির কাজের ওপর।হান্নান শাহ বলেন, প্রার্থী যদি ভোটারের কাছে যেতে না পারে, তাহলে সেটা আর ভোট হবে না। সিইসি বলেছেন ভোটাররা যাতে নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারে সে জন্য ম্যাজিস্ট্রেটের সংখ্যা বাড়িয়ে দেবেন। তিনি বলেন, করণিক ভুলের কারণে আবদুল আউয়াল মিন্টুর মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে। তাঁরা সিইসিকে বিষয়টি বলেছেন। তিনি (সিইসি) আপিল করতে বলেছেন, বিবেচনার আশ্বাস দিয়েছেন।