DoinikBarta_দৈনিকবার্তা Barkak-Ullah-Bulu

দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ০১ এপ্রিল: ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারী ভোটারবিহীন প্রহসনের নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতাসীন বর্তমান লুটেরা ও খুনী সরকার তাদের অপশাসন ও অবৈধ কর্মকান্ডকে জনদৃষ্টির আড়ালে রাখতে জনপ্রশাসন, বিচার বিভাগ, আইন শৃঙ্খলা বাহিনী ও নিয়ন্ত্রিত গণমাধ্যমকে ইচ্ছামতো ব্যবহার করে দেশে সামাজিক ও রাজনৈতিক অঙ্গনে যেকোনো ধরণের অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটলেই তাতে বিরোধী দলের সম্পৃক্ততার কল্পকাহিনী নির্দিধায় প্রচার করে যাচ্ছে। বুধবার বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব বরকত উল্লাহ বুলু স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ কথা বলেন।বিবৃতিতে বলা হয়, বরগুনা জেলার তালতলীর হিন্দু পরিবার উচ্ছেদের ঘটনার কোনো সুষ্ঠু তদন্ত ব্যতিরেকে বিরোধী রাজনৈতিক কর্মীদের দায়ী করা হচ্ছে; অথচ এই ন্যাক্কারজনক ঘটনায় সরকার দলীয় লোকজনই জড়িত বলে এলাকাবাসীর দাবী।

স্বাধীনতার উষালগ্ন থেকে আজ অবধি আওয়ামী লীগ দলীয় লোকজন হিন্দু সম্প্রদায়ের যতো সম্পত্তি দখল ও আত্মসাৎ করেছে তার সঠিক পরিসংখ্যান বা ফিরিস্তি উদঘাটন করা এখন সময়ের দাবীতে পরিণত হয়েছে। ইতোপূর্বে ২০১৪ সালে পাবনাসহ দেশের বিভিন্ন জেলাতেও সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়ীঘর দখল ও লুটপাটের ঘটনা ঘটিয়েছিল সরকার দলীয় লোকজন; যা পরবর্তীতে অনুসন্ধানের মাধ্যমে সত্য প্রকাশিত হয়েছে। সরকারের লুটেরা প্রবৃত্তির কারণেই আজ দেশের সর্বত্র টেন্ডারবাজি, জমি-নদী-খাল-ডোবা এমনকি সরকারী সম্পত্তিও তাদের দখল ও আত্মসাতের লোভাতুর দৃষ্টি থেকে রেহাই পাচ্ছে না। প্রতিদিনের সংবাদ পত্রে এই সকল ঘটনার খবর নিয়মিত প্রচার ও প্রকাশিত হচ্ছে।

বুলু বিবৃতিতে বলেন, সম্পত্তি, অর্থ, হাট-বাজার, ব্যাংকের অর্থ, শেয়ার মার্কেট লুন্ঠনের মতো দুর্নীতি করতে করতে বিরোধী দলীয় জনপ্রতিনিধিদের পদও আজ দখলের নগ্ন থাবায় আক্রান্ত হচ্ছে। এই হলো বর্তমান অবৈধ তুঘলকী শাসনের বাস্তব চিত্র। ঢাকা মহানগরীসহ সারাদেশে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে শাসকগোষ্ঠীর ব্যক্তিগত ও দলীয় স্বার্থে ব্যবহারের ফলে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি সম্পূর্ণ ভেঙ্গে পড়েছে; ফলে একের পর এক হত্যাযজ্ঞ সংঘটিত হচ্ছে রাজধানীসহ সারাদেশে। জনগণ আওয়ামী লীগের এই জঘন্য অপশাসন থেকে মুক্তি চায়।তিনি বলেন, তিন সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে সরকার দলীয় সন্ত্রাসী ও লুটেরাদের অবাধ বিচরণ এবং অবৈধ সরকারের মন্ত্রী, এমপি, প্রার্থী ও সমর্থকদের দ্বারা নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের সুস্পষ্ট অভিযোগ সত্ত্বেও নির্বাচন কমিশন কর্তৃক তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনী ব্যবস্থা গ্রহণে উদাসীনতার কারণেই তিন সিটি কর্পোরেশনের ভোটার ও নাগরিক সমাজ সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়ে সন্দিহান ও শংকিত।

বুলু বলেন,২০ দলীয় জোটের গণআন্দোলন জনগণের মুক্তির জন্য। স্বৈরাশাসনের নগ্ন থাবা ও দেশের অচলাবস্থা নিরসনে জনগণ অচিরেই তাদের কাঙ্খিত মুক্তি তথা ভোটের অধিকার, নাগরিক অধিকার, বাক-ব্যক্তি স্বাধীনতা ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করবেই। জনগণের গণতান্ত্রিক আন্দোলনকে দমিয়ে রাখতে শত ষড়যন্ত্র ও কুটকৌশল প্রয়োগ করেও অতীতের স্বৈরশাসকরা যেমন ইতিহাসের আস্তাকুঁড়ে নিক্ষিপ্ত হয়েছিল; ঠিক একইভাবে বর্তমান ক্ষমতাসীনদের দাম্ভিকতার স্বপ্নবিলাসও ধুলিস্যাৎ হবে। তাই সরকারের নিকট আবারো আহবান জানাই-অবিলম্বে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার ব্যবস্থার অধীনে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের উদ্যোগ গ্রহণ করে দেশকে সংঘাত ও নৈরাজ্যের কবলমুক্ত করুন। ২০ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতৃবৃন্দসহ সকল পর্যায়ের কারাবন্দী নেতা-কর্মীদের অবিলম্বে মুক্তি এবং রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দকে রিমান্ডের নামে হয়রানী বন্ধ করে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনুন।

বিএনপি’র অন্যতম যুগ্ম মহাসচিব সালাহ উদ্দিন আহমেদসহ বিরোধী দলীয় অন্যান্য গুমকৃত নেতা-কর্মীর সন্ধান এখনও পর্যন্ত দিচ্ছে না সরকার কিংবা আইন শৃঙ্খলা বাহিনী। ২০ দলীয় জোট এবং দেশবাসীর প্রত্যাশা-সরকার অবিলম্বে বিএনপি’র যুগ্ম মহাসচিব সালাহ উদ্দিন আহমেদসহ বিরোধী দলের অন্যান্য গুমকৃত নেতা-কর্মীদেরকে অক্ষত ও সুস্থ অবস্থায় তাদের পরিবারের নিকট ফিরিয়ে দিবে।২০ দলীয় জোটের উদ্যোগে আজ সারাদেশে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল অত্যন্ত শান্তিপূর্ণভাবে পালিত হওয়ায় জোটের সকল পর্যায়ের নেতা-কর্মীসহ দেশবাসীকে জোট নেতা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার পক্ষ থেকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানানো হয়।”