দৈনিকবার্তা-রংপুর, ০১ এপ্রিল: অবশেষে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) ২৭টি প্রশাসনিক পদ থেকে ১৪ শিক্ষকের পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। বুধবার সকালে তাদের পদত্যাগপত্র গ্রহণ করা হয়েছে জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মো. মোর্শেদ উল আলম রনি স্বাক্ষরিত চিঠি সংশ্লিষ্ট শিক্ষকদের জানিয়ে দেয়া হয়েছে।জানাগেছে, কিছু দাবি আদায়ের লক্ষ্যে গত ৯ থেকে ১৭ ডিসেম্বরের মধ্যে ১৮ জন শিক্ষক মোট ৩৫ টি প্রশাসনিক পদ থেকে পদত্যাগ করেন। এরমধ্যে ৪ শিক্ষক ৮টি পদে তাদের পদত্যাগপত্র প্রত্যাহার করে দায়িত্বে যোগদান করেন। বাকি ১৪ শিক্ষক ২৭টি পদে তাদের পদত্যাগপত্র প্রত্যাহার না করায় অবশেষে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাদের পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেছে।
রেজিস্ট্রার মোরশেদুল আলম রণি (অতিরিক্ত) জানিয়েছেন, পদত্যাগকারী শিক্ষকদের পদত্যাগপত্র প্রত্যাহার করার জন্য মৌখিকভাবে বহুবার এবং লিখিতভাবে সময় দিয়ে তিনবার অনুরোধ জানানো হলেও তারা তাদের পদত্যাগপত্র প্রত্যাহার করেননি। এমনকি শিক্ষক সমিতিও লিখিত বা মৌখিকভাবে এ ব্যাপারে কোন কিছুই জানায়নি। ফলে তাদের পদত্যাগপত্র গ্রহণ করা হয়েছে। যাদের পদত্যাগপত্র গ্রহণ করা হয়েছে তারা হলেন, বিজ্ঞান অনুষদের ডিন, শহীদ মুখতার ইলাহী হলের প্রভোস্ট এবং গণিত, কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ও পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধানের পদ ৫টি পদ) থেকে পদত্যাগকারী ড. আর এম হাফিজুর রহমান (সেলিম), কলা অনুষদের ডিন, শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের প্রভোস্ট, বাংলা বিভাগের প্রধান ও অর্থ কমিটির পদ (৪টি পদ) থেকে পদত্যাগকারী ড. সাইদুল হক (শিমুল মাহমুদ), পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক (ভারপ্রাপ্ত), বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের প্রভোস্ট, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা এবং লোক প্রশাসন বিভাগের প্রধান পদ (৫টি পদ) থেকে পদত্যাগকারী ড. মোরশেদ হোসেন, সিন্ডিকেট সদস্য ও অর্থ কমিটির সদস্য পদ (২টি পদ) থেকে পদত্যাগকারী ড. সরিফা সালোয়া ডিনা, ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের প্রধান ও অর্থ কমিটির সদস্য পদ (২টি পদ) থেকে পদত্যাগকারী রফিউল আজম খান (নিশার), ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের সহকারী প্রভোস্ট পদ থেকে পদত্যাগকারী তানিয়া তোফাজ, সাইদুর রহমান ও শেখ মাজেদ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের সহকারী প্রভোস্ট পদ থেকে পদত্যাগকারী ড. শফিকুর রহমান, শরীফুল ইসলাম, কমলেশ চন্দ্র রায় ও আজিজুর রহমান, রসায়ন বিভাগের প্রধান পদ থেকে পদত্যাগকারী এইচ. এম তারিকুল ইসলাম এবং ইংরেজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান পদ থেকে পদত্যাগকারী আলী রায়হান সরকার।
পদত্যাগপত্র গ্রহণ করায় এসব শুন্য পদে তাৎক্ষণিভাবে কাউকে নিয়োগ দেওয়া না হলেও অতিদ্রুত নিয়োগ দেওয়া হবে বলেও জানার রেজিস্টার। এদিকে এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি ড. আর এম হাফিজুর রহমান জানান, আগামীকাল বৃহস্পতিবার আমাদের পদত্যাগ পত্র প্রত্যাহার করার কথা ছিল তার আগেই আমাদের পদত্যাগপত্র গ্রহণ করা হয়েছে। আমরা পদত্যাগ করার জন্যই পদত্যাগপত্র দিয়েছিলাম। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি ড. পরিমল চন্দ্র বর্মণ জানান, আমরা চেয়েছিলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফিরে আসুক। এই কারণে আমরা মিটিং করে পদত্যাগপত্র প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়ে ছিলাম। আগামী ২ এপ্রিল আমাদের পদত্যাগ পত্র প্রত্যাহার করবো বলে কর্তৃপক্ষকে মৌখিকভাবে জানিয়েছিলাম। তার আগেই আমাদের পদত্যাগপত্র গ্রহণ করা হলো। আমরা কিছুটা বিভ্রান্ত। উপাচার্য মহোদয় যদি মনে করেন আমাদের ছাড়া অন্যদের দিয়ে কাজ চলবে তাহলে আমাদের কিছু বলার নেই। এ ব্যাপারে উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ কে এম নূর-উন-নবী বলেন, দীর্ঘ অপেক্ষার পরেও তাদের (পদত্যাগকারী শিক্ষক) কোন সাড়া না পেয়ে ৯০ হাজার শিক্ষার্থীর কথা ভেবে ভর্তি পরীক্ষা গ্রহণ ও ক্যাম্পাসের স্বাভাবিক পরিবেশ রক্ষার জন্য উপায়হীন হয়েই তাদের পদত্যাগপত্র গ্রহণ করা হয়েছে।