দৈনিকবার্তা-লক্ষ্মীপুর, ৩১ মার্চ: রাজধানী ঢাকার তেজগাঁওয়ে দুষ্কৃতিকারীদের হাতে নিহত বস্নগার ওয়াশিকুর রহমান বাবুর জানাযা শেষে দাফন সম্পন্ন হয়েছে৷ আজ মঙ্গলবার সকালে লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলার চন্ডীপুর ইউনিয়নের হাজীপুর গ্রামের আবদুল করিম হাজী বাড়ীর নিজ কবরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন হয়৷ এর আগে সকাল ৯টায় স্থানীয় উত্তর হাজীপুর দাইগড়া জামে মসজিদ মাঠে তার নামাজে জানাযা অনুষ্ঠিত হয়৷ জানাযায় ইমামতি করেন স্থানীয় মসজিদের খতিব মাওলানা আবুল কালাম৷ এর আগে ভোর ৪টার দিকে ঢাকা মেডিকেলে ময়নাতদনত্ম শেষে নিহতের মরদেহ তার গ্রামের বাড়ী নিয়ে আসা হলে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন তার স্বজনরা৷ এ সময় পুরো এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে৷এ সময় কান্না কন্ঠে স্বজনরা জানায়, ওয়াশিকুর রহমান বাবু কোন রাজনৈতিক কর্মকান্ডের সাথে জড়িত নয়৷ ছোট বেলা থেকেই খুবই ধামর্ীক ছিলো, সে খুব মেধাবী ছাত্র ছিলো, যারাই এই নির্মম ভাবে ওয়াশিককে হত্যা করেছে সরকারের কাছে, দেশ ও জাতির কাছে আমরা এ হত্যা কান্ডের সুষ্ঠ বিচার চাই৷
এলাকাবাসী জানায়, ২০০৪ সালে স্থানীয় চন্ডীপুর চরমনসা উচ্চ বিদ্যালয়ে থেকে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এসএসসি পাশ করেই ঢাকায় পড়াশুনার জন্য যায় ওয়াশিক৷ ২০১৪ অনার্স শেষ করে বিবিএ পড়ার জন্য অপেক্ষায় রয়েছে বাবু৷ পরিবার ও স্থানীয়দের দাবী, বাবু পড়ালেখায় অত্যনত্ম মেধাবী ছিলেন৷ পড়ালেখার পাশাপাশি বাবু ‘কুচ্ছিত হাঁসের ছানা’ কিংবা ‘গন্ডমূর্খ’ নামেও লিখালিখি করায় বস্নগে ওয়াশিকুর বাবু নামেই পরিচিত ছিলেন৷ এ ছাড়া পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম বাবা, বড় বোন শিমু ও নিহত বাবু সহ তিনজনের সাজানো সংসার ছিলো তাদের৷ প্রায় ২০ বছর আগেই মা রেহানা পারভিন মারা যান৷ সম্প্রতি বাবার উপর কিছুটা ছাপ কমাতে পড়াশুনা, লেখালিখির পাশাপাশি নিজেও সামান্য বেতনে রাজধানী মতিঝিলের শাপলা চত্বরের পাশে ফারইস্ট এ্যাভিয়েশন এজেন্সিতে ট্রেনার হিসেবে কাজ করছিলেন ছিলেন বলে জানা যায়৷ স্থানীয়রা আরো জানায়, অত্যনত্ম সত্, ভদ্র, বিনয়ী এবং আত্নপ্রত্যয়ী এই বস্নগার কোন রাজনীতিতে সম্পৃক্ত থাকতে কেই দেখেনি৷ কারো সাথে কখোনো বিরোধে জড়াতে দেখেনি কেউ৷ বাজে কোন অভ্যাসও ছিলোনা তার৷ তার কোনো শত্রু থাকতে পারে এমনটা মনে করছেন না গ্রামবাসী৷ অথচ বস্নগার হিসাবে গণমাধ্যমে তাকে হত্যার কথা শুনে সবাই হতবাক এবং বিক্ষুব্দ হয়ে উঠেন তারা৷
চন্ডীপুর চরমনসা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিৰক মোঃ হারম্নন অর রশিদ জানায়, ওয়াশিকুর রহমান বাবু ২০০৪ সালে এ স্কুলের বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এসএসসি পরীৰায় উত্তীর্ণ হয়ে ঢাকা চলে যায়৷ সে ছাত্র হিসাবে খুবই ভালো ও মেধাবী ছিলো৷ এ ব্যাপারে চন্ডিপুর ইউপি চেয়ারম্যান শোকসনত্মব পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়ে বলেন, ওয়াশিকুর রহমান বাবু আমারই এলাকার ছেলে৷ সামান্য লেখালেখীর কারনে ঢাকার বাড়িতে ঘাতক দূস্কৃতিকারীরা তাকে কুপিয়ে হত্যা করেছে৷ আমরা এ নির্মম হত্যাকান্ডের বিচার চাই৷