Barkak-Ullah-Bulu_20-Dal3

দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ২৯ মার্চ: বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০-দলীয় জোট সোমবার থেকে আবারও হরতাল ডেকেছে।এবার ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগর ছাড়া সারা দেশে সোমবার সকাল ছয়টা থেকে বুধবার সকাল ছয়টা পর্যন্ত টানা ৪৮ ঘণ্টার হরতাল ডাকা হয়েছে।রোববার এক বিবৃতিতে জোটের পক্ষে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব বরকত উল্লাহ এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন।সর্বশেষ গত সপ্তাহের বুধবার সকালে টানা ৭২ ঘণ্টার হরতাল শেষ হয়। এর মধ্যে স্বাধীনতা দিবস ও সিটি করপোরেশন নির্বাচনকে সামনে রেখে এই কর্মসূচি থেকে বিরত ছিল বিএনপি। জোটের সূত্র জানায়, সিটি করপোরেশন নির্বাচনকে সামনে রেখে ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগর হরতালের আওতামুক্ত রাখা হয়েছে। তবে সারা দেশে লাগাতার অবরোধ অব্যাহত থাকছে।

বিবৃতিতে জানানো হয়, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সালাহ উদ্দিন আহমেদসহ বিরোধী দলের গুম করা নেতা-কর্মীদের অবিলম্বে তাঁদের পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া, অন্যায়ভাবে মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তার করা বিএনপি ও ২০-দলীয় জোটের নেতাদের মুক্তি এবং নির্দলীয় ও নিরপেক্ষ সরকার ব্যবস্থার অধীনে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দাবিতে এই কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে।এতে বলা হয়, ৪৮ ঘণ্টার এ হরতাল কর্মসূচি শান্তিপূর্ণভাবে পালন করতে নেতা-কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ২০ দলীয় জোট নেত্রী খালেদা জিয়া।এর আগে শনিবার বুলুর নামেই একটি বিবৃতি পাঠিয়ে রোববার সারাদেশে বিক্ষোভ মিছিলের কর্মসূচি দেওয়া হয়।তবে তাতে হরতাল-অবরোধের উল্লেখ না থাকার খবর গণমাধ্যমে এলে সংশোধিত বিবৃতি আসে। সংশোধিত বিবৃতিতে হরতালের উল্লেখ না থাকলেও অবরোধ চলবে বলে যুক্ত করা হয়; যদিও হরতাল-অবরোধের তেমন কোনো প্রভাব বেশ কিছুদিন ধরে জনজীবনে দেখা যাচ্ছে না।

নির্দলীয় সরকারের অধীনে মধ্যবর্তী নির্বাচনের দাবিতে গত ৫ জানুয়ারি থেকে অবরোধ চালিয়ে আসা বিএনপি জোট ফেব্র“য়ারির শুরু থেকে বিবৃতি পাঠিয়ে সপ্তাহের পাঁচ দিন হরতালের বার্তা দিচ্ছিল।সর্বশেষ ১৩ মার্চ সংবাদ সম্মেলনে এসে খালেদা জিয়া আন্দোলন কর্মসূচি অব্যাহত রাখার কথাই বলেছিলেন। তবে এরপর ২৪ মার্চ বুলুর নামে আসা বিবৃতিতে এর ব্যতিক্রম দেখা যায়। তাবে অবরোধের কথা থাকলেও হরতালের ঘোষণা ছিল না।২৬ মার্চ স্বাধীনতার দিবসের কারণে বৃহস্পতিবার ছিল সরকারি ছুটি। ফলে ২৫ মার্চই ছিল গত সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস। আর শুক্র-শনি পার করে রোববার সিটি নির্বাচনের মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন। এদিনও হরতালের কোনো ঘোষণা ছিল না।গত জাতীয় নির্বাচন বর্জন করলেও এবার সিটি নির্বাচনে বিএনপি নেতারা অংশ নিচ্ছেন, যদিও দলের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক বক্তব্য আসেনি। শনিবার বুলুর নামে পাঠানো বিবৃতিতেও ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী বিএনপি নেতাদের জয়ের আশাবাদ প্রকাশ করা হয়।

বিবৃতিতে বলা হয়, বর্তমান অবৈধ এবং লুটেরা সন্ত্রাসী সরকার অবৈধ পন্থায় জাতির ঘাড়ে চেপে বসার পর স্বৈরতান্ত্রিক আচরণের মাধ্যমে দুর্নীতিবাজ ও ক্ষমতালোভী মন্ত্রী-এমপি ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর কর্তাব্যক্তিরা প্রতিনিয়ত জনগণের আন্দোলন ও গণদাবী নিয়ে কটুক্তি ও নির্জলা মিথ্যাচারের আশ্রয় নিয়ে বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছেন।বুলু আরো বলেন, আমরা স্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই-খাঁচায় বন্দী সিংহের গায়ে খোঁচা দেয়া যত সহজ, মুক্ত সিংহের গায়ে খোঁচা দেয়া ততো সহজ নয়। অবৈধ ও বাকশালী পন্থায় ক্ষমতায় থেকে জনগণের সাথে মশকরা না করে গণদাবী অনুযায়ী নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার ব্যবস্থার অধীনে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা করে গণমানুষের কাতারে আসুন, তখন দেখবেন জনরোষের আগ্নেয়গিরি ও স্ফুলিঙ্গের দহনে কিভাবে আপনাদের ক্ষমতার মসনদ জ্বলে পুড়ে ধুলায় মিশিয়ে যায়। এখনও সময় আছে-আলোচনার মাধ্যমে জাতীয় এই মহাসংকট উত্তরণে উদ্যোগী হোন, মানুষের বাক-ব্যক্তি স্বাধীনতাসহ সকল গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরিয়ে দিয়ে দেশে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনুন। অন্যথায় ৭১ এর মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্দীপ্ত হয়ে জনগণ তাদের দাবী আদায়ে যেকোনো ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত ২০ দলীয় জোট ।