7609b0ef0a0d70a6d49aeb80acbe0b19

দৈনিকবার্তা-কক্সবাজার, ২৭ মার্চ: গ্রাহকদের লেনদেন যথাযথভাবে মনিটরিং করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড.আতিউর রহমান।তিনি বলেন, বাংলাদেশ অর্থনৈতিকভাবে দাঁড়িয়ে যাচ্ছে।এ কারণে দেশি-বিদেশি অপশক্তি মানি লন্ডারিংরের মাধ্যমে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নকে বাধাগ্রস্তের অপচেষ্টা চালাচ্ছে। সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে ষডযন্ত্রকে নসাৎ করতে কাজ করতে হবে।শুক্রবার সকালে কক্সবাজারে হোটেল ওশান প্যারাডাইসে প্রধান মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ পরিপালন কর্মকর্তা সম্মেলন ২০১৫’ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।তিনি বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে জঙ্গি সংগঠনের আবির্ভাব ঘটছে। এ জঙ্গি তৎপরতা বাংলাদেশের জন্যও হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। ব্যাংকিং খাতের মাধ্যমে যাতে জঙ্গি সংশ্লিষ্ঠ কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে অর্থায়ন করা না হয় সে ব্যাপারে সবসময় সর্তক থাকতে হবে।গভর্নর বলেন, গ্রাহক পরিচিতির সঠিক ও পূর্ণাঙ্গ তথ্য সংগ্রহ করতে হবে। গ্রাহকদের লেনদেন যথাযথভাবে মনিটরিং করতে হবে। জাতীয় পরিচয়পত্রের যে নতুন ডাটা বেইজ তৈরি হয়েছে তার সঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংক যুক্ত হয়েছে। অন্যান্য ব্যাংকও শিগগিরই যুক্ত হবে। এটি মানি লন্ডারিং প্রতিরোধে কার্যকর ভূমিকা রাখবে।

তিনি আরো বলেন, মানি লন্ডারিং ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধে বিএফআইইউ বিভিন্ন নির্দেশনা দেয়। এসব নির্দেশনা পরিচালিত হচ্ছে কিনা তা প্রধান মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ কর্মকর্তাদের তদারকি করতে হবে।গভর্নর বলেন,মানিলন্ডারিং ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধে বাংলাদেশের আইনগত কাঠামো এখন আন্তর্জাতিক পর্যায়ে উন্নীত হওয়াসহ শক্তিশালী অবস্থায় উপনীত হয়েছে। মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ কার্যক্রমের আওতায় মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২, সন্ত্রাস বিরোধী আইন ২০০৯ (২০১২ ও ২০১৩ সালের সংশোধনীসহ), মিউচ্যুয়াল লিগ্যাল এ্যাসিস্ট্যান্স এ্যাক্ট ইন ক্রিমিনাল ম্যাটারস ২০১২, মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ বিধিমালা ২০১৩, সন্ত্রাস বিরোধী বিধিমালা ২০১৩ ও মিউচ্যুয়াল লিগ্যাল এ্যাসিস্ট্যান্স এ্যাক্ট ইন ক্রিমিনাল ম্যাটারস রুলস ২০১৩ উল্লেখযোগ্য। এছাড়া, ন্যাশনাল মানিলন্ডারিং ও টেরোরিস্ট ফাইন্যান্সিং রিস্ক এ্যাসেসমেন্ট ও ন্যাশনাল এন্টি-মানিলন্ডারিং ও কমব্যাটিং ফাইন্যান্সিং অব টেরোরিজম শীর্ষক ২০১৫-২০১৭ সালের জন্যে কৌশলপত্রের প্রণয়নের কাজ চলছে যা খুব শিগগিরই প্রকাশ করা হবে।তিনি আরো বলেন, আগের কৌশলপত্রে আইনগত কাঠামোর ওপর জোর দেয়া হয়েছিল। খুশির খবর এই যে, এতে ২৫০টি বিষয়ের মধ্যে নব্বই শতাংশের বেশি কৌশল ইতোমধ্যে বাস্তবায়িত হয়েছে। আগামী কৌশলপত্রে এন্টি-মানিলন্ডারিং ও কমব্যাটিং ফাইন্যান্সিং বিষয়গুলোর বাস্তবায়ন ও কার্যকারিতার ওপর জোর দেয়া হবে।

ড. আতিউর রহমান বলেন, এ বছরের অক্টোবর মাসে অনুষ্ঠিতব্য মানিলন্ডারিং এর এশিয়া প্যাসিফিক গ্র“পের (এপিজি) তৃতীয় পর্যায়ের মিউচ্যুয়াল ইভালুয়েশন প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশে মিউচ্যুয়াল ইভালুয়েশন অনুষ্ঠিত হবে। এ প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করতে বিএফআইইউ, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, রিপোর্ট প্রদানকারী সংস্থা হিসেবে ব্যাংকসহ বিভিন্ন সংস্থার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। উক্ত মূল্যায়নে মানিলন্ডারিং ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধে বাংলাদেশের গৃহীত পদক্ষেপসমূহ এবং মানিলন্ডারিং ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধে বাংলাদেশের সক্ষমতা যাচাই করা হবে। এ ক্ষেত্রে আমাদের ব্যাংকগুলোর গৃহীত পদক্ষেপ এবং সক্ষমতাকে গুরুত্বে সাথে বিবেচনা করা হবে।বাংলাদেশ ব্যাংকের মহাব্যবস্থাপক ও অপারেশন হেড অব বিএফআইইউ মো.নাসিরুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও ডেপুটি হেড অব বিএফআইইউ ম. মাহফুজুর রহমান এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের চট্টগামের নির্বাহী পরিচালক মো. মিজানুর রহমান।সম্মেলনে দেশের ৩৫টি ব্যাংকের ব্যবস্থাপক, কর্মকর্তা ও মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ পরিপালন কর্মকর্তারা অংশ নেয়।