jail_murder_240462

দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ২৬ মার্চ: বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হত্যা মামলার খালাসপ্রাপ্ত ও জেল হত্যা মামলার যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামী ক্যাপ্টেন (অব.) কিসমত হাশেম (৬৫) কানাডায় মৃতু্যবরণ করেছেন৷ কিসমতের ছোট ভাই নারায়ণগঞ্জ নগর বিএনপি’র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও নারায়ণগঞ্জ সিটি কপের্ারেশনের ১২ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর শওকত হাসেম শকু জানান, বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ সময় ভোর সাড়ে ৬টায় কানাডার মন্ট্রিলে তিনি মারা গেছেন৷

কাউন্সিলর আরো জানান, নিজ বাসায় হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে কিসমত হাশেমের মৃতু্য হয়েছে৷ কানাডার সময় শুক্রবার জুমা’র নামাজের পর জানাজা শেষে তাকে মন্ট্রিলে দাফন করা হবে৷ তার কোন ছেলেমেয়ে নেই, স্ত্রীর নাম পারভীন হাসেম৷

তিনি জানান, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে হত্যা মামলার আসামী কিসমত হাশেমকে আদালতের রায়ে অব্যাহতি দেয়া হয়৷ পরবতর্ীতে ১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি জাতীয় চার নেতা মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বদানকারী সৈয়দ নজরম্নল ইসলাম, তাজউদ্দিন আহম্মেদ, ক্যাপ্টেন মনসুর আলী ও এ এইচ এম কামরুজ্জামানকে হত্যার ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় আদালত কিসমত হাশেমকে যাবজ্জীবন কারাদন্ডে দন্ডিত করেন৷

কেন্দ্রীয় কারাগারে জাতীয় চার নেতাকে হত্যায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত ক্যাপ্টেন (বরখাস্ত) কিসমত হাসেম কানাডায়া মারা গেছেন৷বাংলাদেশ সময় বৃহস্পতিবার ভোর ৬টায় কানাডার মন্ট্রিলে তিনি মারা যান বলে তার ছোট ভাই নারায়ণগঞ্জ নগর বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শওকত হাসেম শকু জানিয়েছেন৷ তার বয়স হয়েছিল ৬৫ বছর৷বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায়ও আসামি ছিলেন কিসমত৷ তবে রায়ে তিনি খালাস পান৷

পঁচাত্তরের শেষ দিকে জেল হত্যাকাণ্ডের পর দেশ ছেড়ে যাওয়া কিসমতের বিদেশে মৃতু্য হয়েছে এমন এক দিনে যখন স্বাধীনতার ৪৪তম বার্ষিকী উদযাপন করছে বাঙালি জাতি৷নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের ১২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শওকত হাসেম শকু জানান, কানাডার মন্ট্রিলে নিজের বাসায় হৃদরোগে মারা যান তার ভাই৷১৯৭৫ সালের ১৫ অগাস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার পর বাংলাদেশের ক্ষমতা দখল করে সেনাবাহিনীর একাংশ৷

এরপর বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের চার নেতা- সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দিন আহমেদ, ক্যাপ্টেন মুনসুর আলী ও এ এইচ এম কামরুজ্জামানকে গ্রেপ্তার করা হয়৷ক্ষমতা দখল নিয়ে সেনাবাহিনীতে অভ্যুত্থান-পাল্টা অভ্যুত্থানের মধ্যে ওই বছর ৩ নভেম্বর ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয় জাতীয় চার নেতাকে৷১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর এ হত্যাকাণ্ডের বিচার শুরু হয়৷

২০০৪ সালের অক্টোবরে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালত এ হত্যায় তিন সেনা কর্মকর্তা রিসালদার (অব.) মুসলেমউদ্দিন, দফাদার (বহিষ্কৃত) মারফরত আলী শাহ ও দফাদার (বহিষ্কৃত) আব্দুল হাসেম মৃধাকে মৃতু্যদণ্ড দেন৷ সেনাবাহিনী থেকে অব্যাহতি পাওয়া ক্যাপ্টেন কিসমত হাসেমসহ ১২ কর্মকর্তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয় আদালত৷ তাদের তিনজনকে বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় ফাঁসিতে ঝোলানো হয়েছে৷পরে হাই কোর্ট হয়ে মামলাটি আপিল বিভাগে এলে চূড়ান্ত রায়েও কিসমত হাসেমের দণ্ড বহাল থাকে৷

পাঁচত্তরের ৩ নভেম্বর চার নেতাকে হত্যার পর পরই দেশ ত্যাগ করেন কিসমত হাসেম৷ পরবর্তীতে সামরিক শাসক জিয়াউর রহমান ও এরশাদের শাসনামলে গোপনে কয়েকবার দেশে আসা- যাওয়া করেন তিনি৷তবে নব্বইয়ে সামরিক শাসনের অবসানের পর কিসমতকে আর দেশে দেখা যায়নি৷ তার পৈতৃক বাড়ি নারায়ণগঞ্জ শহরের ডনচেম্বার এলাকায়৷কিসমতকে গ্রেপ্তারে বাংলাদেশ পুলিশ সদর দপ্তর থেকে আন্তর্জাতিক পুলিশ সংস্থা ইন্টারপোলের মাধ্যমে রেড ওয়ারেন্ট জারি করা হয়েছিল৷ কানাডা থেকে তাকে ফিরিয়ে আনতে প্রচেষ্টা ছিল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়েরও৷