দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ২৫ মার্চ: ফ্রান্সে বিধ্বস্ত জার্মানীর বিমানে থাকা আরোহীদের লাশ উদ্ধারে বুধবার ভোরে তৎপরতা শুরু হয়েছে। ফ্রান্সের মাটিতে গত কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনা এটি। এদিকে ইউরোপীয় নেতারা বিমান দুর্ঘটনায় নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে ঘটনাস্থলে যাচ্ছেন।
জার্মানীর এ-৩২০উড়োজাহাজ গতকাল মঙ্গলবার আল্পস পর্বতমালার ফরাসি অংশের একটি দুর্গম এলাকায় বিধ্বস্ত হয়। এতে উড়োজাহাজটির ১৫০ আরোহীর সবাই নিহত হয়। আরোহীদের মধ্যে ৬৭ জন জার্মান এবং ৪৫ জনের মতো স্প্যানিশ ছিলেন। উড়োজাহাজে জার্মানির একটি বিদ্যালয়ের ১৬ জন শিশুশিক্ষার্থী এবং তাদের দুই শিক্ষকও ছিলেন।বিধ্বস্ত উড়োজাহাজটির ব্লাকবক্স উদ্ধার করা হয়েছে। দুর্গম এলাকা হওয়ায় উদ্ধারকাজ ব্যাহত হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র উদ্ধারকাজে সহায়তা দেওয়ার প্রস্তাব করেছে।জার্মানউইংসের এয়ারবাসটি স্পেনের উপকূলীয় শহর বার্সেলোনা থেকে জার্মানির ডুসেলডর্ফ শহরে যাচ্ছিল। জার্মানউইংস হচ্ছে জার্মানির বিমান সংস্থা লুফথানসার সহযোগী সংস্থা, যারা কম খরচে যাত্রী পরিবহন করে থাকে।
জার্মানউইংস এক বিবৃতিতে বলেছে, কী কারণে উড়োজাহাজটি বিধ্বস্ত হয়েছে, তা তারা এখনই বলতে পারছে না। তবে কারণ অনুসন্ধানে তারা সবকিছু করবে। ফ্রান্সের বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ ও জার্মানউইংসের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ৪ইউ ৯৫২৫ ফ্লাইটটিতে ১৪৪ জন যাত্রী ও ছয়জন ক্রু ছিলেন। বুধবার স্থানীয় সময় পৌনে ১১টার দিকে উড়োজাহাজটি থেকে বিপৎসংকেত পাঠানো হয়। এ সময় উড়োজাহাজটি ফ্রান্সের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় বার্সালোনেত্তি এলাকায় ছিল।
বার্তা সংস্থা এএফপি’র খবরে বলা হয়েছে, ৩শ’র বেশি পুলিশ ও ৩৮০ জন দমকল কর্মী ঘটনাস্থলে গেছেন। লেফটেন্যান্ট কর্নেল জেন-মার্ক মেনিচিনি বলেন, পার্বত্য উদ্ধারকারী পুলিশের ৩০ জনের একটি স্কোয়াড বুধবার ভোরে হেলিকপ্টারে করে ঘটনাস্থলে যাওয়ার চেষ্টা করবেন। এছাড়া আরো ৬৫ জন পুলিশ পায়ে হেঁটে ঘটনাস্থলে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। পাঁচ তদন্তকারী ঘটনাস্থলেই রাত কাটান।
তিনি বলেন, ঘটনাস্থল প্রত্যন্ত হওয়ায় সেখানে পুরোপুরি উদ্ধার তৎপরতা চালাতে কমপক্ষে এক সপ্তাহএবং লাশ উদ্ধার করতে আরো কয়েকদিন লাগতে পারে।বিমানে ঘটনাস্থল পরিদর্শনকারী ¯’ানীয় এক এমপি জানান, বিমানটি পুরোপুরি বিধ্বস্ত হয়েছে। তিনি সামগ্রিক চিত্রকে ভয়াবহ বলে উল্লেখ করেন।বার্সালোনেত্তি ও দিগনে-লেস-বেইন্সের মধ্যে একটি সংকটকালীন সেল প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া ওলাঁদ, জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মেরকেল ও স্পেনের প্রধানমন্ত্রী মারিয়ানো রাজয় বুধবার স্থানীয় সময় ঘটনাস্থলে যেতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। ওলাঁদ বলেছেন, এটা ট্র্যাজেডি। এর কারণ খুঁজে বের করতে আমরা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। তিনি বলেন, উড়োজাহাজে জার্মানি, স্পেন ও সম্ভবত তুরস্কের নাগরিকেরা ছিলেন।ফ্রান্সের মাটিতে ২০০০ সালের পর এটাই প্রথম বিমান দুর্ঘটনা।ওই বছরের জুলাইয়ে প্যারিসের বাইরে এয়ার ফ্রান্স কনকর্ড বিধ্বস্ত হয়ে ১১৩ জন নিহত হয়।