দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ২৩ মার্চ: সাবেক রাষ্ট্রপতি ও বিকল্পধারার সভাপতি অধ্যাপক একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরী বলেছেন,বিএনপির যুগ্ম মহাসচিবকে খুঁজে না পাওয়া আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও সরকারের ব্যর্থতা। রাষ্ট্র এ দায় এড়াতে পারে না। সোমবার সকালে বিএনপির নিখোঁজ যুগ্ম-মহাসচিব সালাহ উদ্দিনের গুলশানের বাসায় পরিবারকে সান্ত্বনা দিতে গিয়ে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় বি. চৌধুরীর ছেলে ও বিকল্প ধারার যুগ্ম-মহাসচিব মাহী বি. চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।
সাবেক রাষ্ট্রপতি বলেন, রাষ্ট্রের প্রতিটি নাগরিকের নিরাপত্তার দায়িত্ব সরকারের। সরকার যদি নিরাপত্তা দিতে না পারে তাহলে ব্যর্থ সরকারে পরিণত হয়।আর এ ব্যর্থতার দায়ে সরকারের পদত্যাগ করা উচিত।সালাহউদ্দিনের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য চেয়ে বি. চৌধুরী বলেন, একজন মা হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আন্তরিকতা আশা করছি।তিনি সরকারের উদ্দেশে বলেন, আপনারা বিভিন্ন বিষয়ে ব্যর্থ হয়েছেন, কিন্তু এটি একটি মানবিক বিষয়। এক্ষেত্রে ব্যর্থ হওয়া চলবে না। তাকে খুঁজে দিন।
আসন্ন সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন নিয়ে সংশয় প্রকাশ করে একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরী বলেন, বিরোধীদলের আন্দোলন থামাতে এই নির্বাচন সরকারের একটি ফাঁদ হতে পারে। তাছাড়া নির্বাচন আদৌ দেবে কি না শেষ পর্যন্ত- সেটিও নিশ্চিত নয়। যদি নির্বাচন দেওয়াও হয়, নিজেদের অবস্থা বেগতিক দেখলে সরকার নির্বাচন শেষ পর্যন্ত নাও করতে পারে।
সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন সরকারের ট্র্যাপও হতে পারে বলে সংশয় প্রকাশ করেন সাবেক রাষ্ট্রপতি এবং বিকল্পধারা বাংলাদেশএর চেয়ারম্যান একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরী।তিনি বলেন, এই সিটি করপোরেশন নির্বাচন সরকারের ট্র্যাপও হতে পারে, নাও হতে পারে। বিএনপি বলেছে, আন্দোলন থেকে জনদৃষ্টি অন্যত্র নিতে এই নির্বাচন সামনে এনেছে। সরকার হচ্ছে সকল শক্তির আধার। যখন দেখবে জেতার সম্ভাবনা নেই, তখন তারা একটা মামলা ঠুকে দিয়ে নির্বাচন বন্ধ করে দিতে পারে।তিনি বলেন, আমি মনে করি, আসন্ন সিটি নির্বাচন হবে কিনা তা নিয়ে এখনো সন্দেহ রয়েছে। নির্বাচন হলেও তা সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে কিনা তা নিয়েও যথেষ্ট সংশয় আছে। কারণ এই সরকারের আমলে সুষ্ঠু নির্বাচনের বিষয়ে অতীতে আমাদের তিক্ত অভিজ্ঞতা রয়েছে।সরকারের উদ্দেশে বদরুদ্দোজা বলেন, ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি নির্বাচন করে যে অপরাধ আপনারা করেছেন, তার শাপমোচন করতে একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের ব্যবস্থা করুন।
২৮ এপ্রিল ভোটের দিন রেখে নির্বাচন কমিশন ঢাকার উত্তর, দক্ষিণ এবং চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের যে তফসিল ঘোষণা করেছে তাতে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার দিন রাখা হয়েছে ২৯ মার্চ। এরই মধ্যে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ঢাকা-চট্টগ্রামে নিজেদের পছন্দের প্রার্থীকে সমর্থন দিলেও নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে হরতাল-অবরোধ কর্মসূচিতে থাকা বিএনপির আনুষ্ঠানিক কোনো ঘোষণা আসেনি।
বিকল্পধারা বাংলাদেশ বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটে না থাকলেও গতবছর ৫ জানুয়ারির নির্বাচন বর্জন করে। ওই নির্বাচনে জয়ী হয়েই আওয়ামী লীগ টানা দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসে।দীর্ঘ আট বছর ধরে নির্বাচনের অপেক্ষায় থাকা ঢাকা সিটি করপোরেশন এখন দুই ভাগ হলেও ২০০২ সালে অবিভক্ত সিটির সর্বশেষ নির্বাচনে জয়ী হয়ে দীর্ঘদিন মেয়রের দায়িত্ব পালন করেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সাদেক হোসেন খোকা। আর চট্টগ্রামের মেয়রের দায়িত্বে থাকা এম মনজুর আলমও ২০১০ সালের নির্বাচন পার হয়েছিলেন বিএনপির সমর্থন নিয়ে। ক্ষমতাসীন দলের নেতারা বলছেন, সিটি করপোরেশন নির্বাচন অবরোধ-হরতালের কর্মসূচি থেকে বিএনপিকে বেরিয়ে আসার সুযোগ তৈরি করে দিয়েছে। আর বিএনপি জোট সেই সুযোগ নেবে বলেই তারা আশা করছেন।