দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ২৩ মার্চ: বীর বেশে দেশে ফিরেছেন ১৫ ক্রিকেটার। রোববার সন্ধ্যায় বিমান বন্দরে হাজারো জনতা ফুলেল সংবর্ধনায় সিক্ত করে মাশরাফি বিন মর্তুজাদের। তবে দলের সঙ্গে ফেরেননি কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহেসহ কোচিং স্টাফদের অন্যরা। ছুটি কাটাতে অস্ট্রেলিয়াতেই থেকে গেছেন কোচ। কিন্তু সোমবার অস্ট্রেলিয়ার বাংলাদেশের সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে বোমা ফাটালেন বাংলাদেশ দলের শ্রীলংকান এই কোচ। তিনি বললেন, বিশ্বকাপে বাংলাদেশ সেরা একাদশ খেলাতে পারেনি। সেরা দল খেলাতে পারলে আরও ভালো করতে পারতো টিম বাংলাদেশ। সেরা একাদশ খেলানো হলে আগামীতে বাংলাদেশ বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল, এমনকি ফাইনাল খেলারও যোগ্যতা রাখে। একই সঙ্গে বিশ্বকাপে মাশরাফিদের পারফরম্যান্সে সন্তুষ্ট বলেও জানান তিনি।
দল নির্বাচনে ফুটবলে কোচের কথাই চূড়ান্ত। একচ্ছত্র অধিপতি তিনি। এ কারণে সব সাফল্য কিংবা ব্যর্থতার দায়ভার পুরোপুরিই বর্তায় কোচের ওপর। ক্রিকেটে তেমনটা নয়। দল নির্বাচনে থাকে নির্বাচক কমিটি। অধিনায়কের মতামত নিতে হয়। তবুও কোচের ভুমিকা কোন অংশে কম থাকে না।কিন্তু বাংলাদেশ দলে কোচের মতামতকে যে পুরোপুরি থোড়াই কেয়ার করা হয়, তা আজ তার এই বক্তব্যের পরই বোঝা গেল। তবে তার পছন্দের একাদশে কে ছিলেন, কাকে বাদ দেওয়া হয়েছে, পরিবর্তে কাকে নেওয়া হয়েছে কিংবা কে অযাচিত হস্তক্ষেপ করেছে একাদশ নির্বাচনে, সেটা জানাননি কোচ হাথুরুসিংহে।
রোববার সন্ধ্যায় দেশে ফিরেই বিশ্বকাপে অসাধারণ সাফল্যের নেপথ্য কারিগর হিসেবে কোচ হাথুরুসিংহের উচ্চসিত প্রশংসা করেছেন মাশরাফি। বলেছেন, তার কঠোর এবং অমানুসিক পরিশ্রমের ফলেই আমাদের এই সাফল্য এসেছে। কোচের প্রশংসায় যখন মাশরাফিরা পঞ্চমুখ, তখন অস্ট্রেলিয়ায় বোমা ফাটালেন তিনি।এমনিতেই বিশ্বকাপ খেলতে যাওয়ার পর অস্ট্রেলিয়ায় ম্যানেজার খালেদ মাহমুদ সুজনের সঙ্গে কোচের দ্বন্দ্বের গুঞ্জন এসেছিল মিডিয়ায়। যদিও সেটা চাপা পড়েছে দলীয় সাফল্যের কারণে। কিন্তু সেটা যে এতটা ভয়াবহ! তা বোঝা গেলো হাথুরুসিংহের বক্তব্যের পর।
এর আগেও বিশ্বকাপের জন্য ১৫ সদস্যের দল গঠন করার সময় কোচ হাথুরুসিংহের মতামতের কোন গুরুত্ব দেওয়া হয়নি বিসিবির পক্ষ থেকে। কোচ চেয়েছিলেন লেগ স্পিনার হিসেবে তরুন জুবায়ের হোসেন লিখনকে দলে নিতে। কিন্তু তাকে বাদ দেওয়া হয় ১৫ সদস্যের দল থেকে। এমনকি বোর্ড প্রেসিডেন্ট নাজমুল হাসান পাপন দল ঘোষণার সময় নিজেই স্বীকার করেছিলেন, নির্বাচকদের দেওয়া দলে তারা কিছুটা কাট-ছাট করেছেন।
ওই সময়ই এ নিয়ে মিডিয়ায় ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি হয়। প্রশ্ন ওঠে, নির্বাচক কমিটি থাকার পর, কোচ-অধিনায়কসহ তাদের তৈরী করা দলের ওপর কিভাবে কলম বসাতে পারে বিসিবির অন্য কর্মকর্তারা কিংবা বোর্ড প্রেসিডেন্ট! শেষ পর্যন্ত, বিশ্বকাপেও সেরা একাদশ নির্বাচন নিয়ে টিম ম্যানেজমেন্টের ওপর অযাচিত হস্তক্ষেপ করা হলো। প্রকাশ্য মিডিয়ায় তথ্যটি দিয়ে রীতিমত বোমাই ফাটালেন হাথুরুসিংহে, এটা নিশ্চিত বলা যায়।