দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ২৩ মার্চ: নাশকতাকারীদের দানব অভিহিত করে তাদেরকে হত্যা করার কথা বললেন প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম।তিনি বলেছেন, ৭১ সালে ইয়াহিয়া খানের কার্টুন একে শিল্পী কামরুল ইসলাম বলেছিলেন, আসুন এই দানবটিকে হত্যা করি। আজকেও আমরা বলি আসুন, আজকে যারা দানব সৃষ্টি হয়েছে, এই দানবদের হত্যা করি, দানবদের আমরা নিশ্চিহৃ করি। আর তাদের নিশ্চিহ্ন করতে পারলেই বাংলাদেশ মুক্তি পাবে।সোমবার ২৩ মার্চ ঐতিহাসিক জাতীয় পতাকা উত্তোলন দিবস উপলক্ষে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জাতীয় পতাকা উৎসব-২০১৫ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।এইচ টি ইমাম বলেন, স্বাধীনতাবিরোধী চক্র এখনো সক্রিয়। একাত্তরের পরাজিত শক্তি দেশে ও দেশের বাইরে ঘাপটি মেরে ছিল। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মধ্য দিয়ে পক্ষান্তরে দেশে স্বাধীনতা বিরোধীদের পুনর্বাসন করা হয়েছিল। আর সেই শক্তিই আজও দেশে সক্রিয়। তারা তালেবান, আল কায়েদা, আইএসআই ও বোকো হারামের মতো জঙ্গি তৎপরতা চালাচ্ছে।
তিনি বলেন, জিয়াউর রহমান স্বাধীনতা বিরোধীদের মদদ দিয়েছেন। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর খন্দকার মোস্তাক ক্ষমতায় থাকলেও দেশ চালিয়েছেন জিয়াউর রহমান।প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম বলেন, মা খালেদা ও বেটা তারেক, মাÑবেটা, জামায়াত এবং আইএসআই মিলে ভেবেছিল বাংলাদেশকে পাকিস্তান বানাবে। তাদের স্বপ্ন পূরন হয়নি।তিনি বলেন, বিশ্বের মৌলবাদী দলগুলো সব একসূত্রে গাথাঁ।তারা সবাই মিলে বাংলাদেশকে একটি অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত করতে চায়।রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম বলেন, আমাদের মুক্তিযুদ্ধের সময় রাজাকার আলবদর বাহিনী সৃষ্টি হলেও এরা পকিস্তান আমল থেকে বিরাজ করতো। আমাদের মুক্তিযুদ্ধ ছিল একটি জনযুদ্ধ।মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী বলেন, ২৩ মার্চ পাকিস্তানীরা পাকিস্তান দিবস পালন করতো। তাই তৎকালিন ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ এই দিনটি বেছে জাতিরজনকের হাতে বাংলাদেশের পতাকা তুলে দিয়েছিলেন। সেদিন বঙ্গবন্ধুর ডাকে পতাকা উড়েছিল।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানচিত্রে লাল বৃত্তের মধ্যে একটি সোনালী কাজ করা মানচিত্র ছিল। সে পতাকা থেকে পরবর্তীতে মানচিত্রটি তুলে দেয়া হয়। এর কারন মানচিত্র আকতে অনেকে ভূল করতো।তিনি বলেন, এ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার কথা বলেছিলেন। এ উদ্যানে পাক বাহিনী আত্ম সমর্পন করেছিলেন। এ উদ্যানে বঙ্গবন্ধু এমএনএ এমপিদের বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য শপথ করিয়েছিলেন এ জন্য এ স্থানটি খুবই পবিত্র।তিনি বলেন, একটির পর একটি ইট গেথে যেমন দালান তৈরী করা হয় ঠিক তেমনি বঙ্গবন্ধু ধীরে ধীরে দেশটিকে ম্বাধীন করেছেন।শিব নারায়ন দাস বলেন, ১৯৭০ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি পতাকার জন্ম হয়। এদিন আগরতলা মামালার আসামী সার্জেন্ট জহুরুল হকের প্রথম মৃত্যু বার্ষিকী ছিল। তিনি ছিলেন স্বাধীনতার প্রথম শহীদ।তিনি বলেন, পতাকা তৈরীতে এ কৃত্বিত সমগ্র জনতার।
সোহরাওর্দী উদ্যানে মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ পুলিশের যৌথ আয়োজিত ‘পতাকায় বিপ্লব, পতাকায় গৌরব’এ শ্লোগান ধারন করে জাতীয় পতাকা উৎসব-২০১৫অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথ্রি বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। পতাকা উৎসবের উদ্ধোধন করেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী অ্যাডভোকেট আ ক ম মোজাম্মেল হক। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাথেন উৎসবের সদস্য সচিব অধ্যাপক ড. খন্দকার বজলুল হক, পতাকার প্রথম নক্সাকারী শিব নারায়ন দাস, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মিজানুর রহমান, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. হারুন অর-রশিদ, সেক্টর কমান্ডার ফোরামের মেজর জেনারেল (অব:) কে এম শফিউল্লাহ,মুজিব সরকারের প্রথম গার্ড অব অনার প্রদানকারী মাহবুবউদ্দিন আহমেদ বীর বিক্রম ও পুলিশের আইজি একে এম শহীদুল হক প্রমুখ। এতে সভাপতিত্ব করেন অধ্যাপক মাকসূমা খানম।বাংলাদেশ পুলিশ সাংস্কৃতিক দল অনুষ্ঠানে জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন করেন। কবিতা আবৃত্তি করেন ভাস্কর বন্দোপাধ্যায় । সঙ্গীত পরিবেশন করেন অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার জাহাঙ্গীর আলম সরকার। পরে বিশাল এক পতাকা নিয়ে মুক্তিযোদ্ধা ও পুলিশের একটি মিছিল বের হয়।