দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ২৩ মার্চ: দেশের প্রতি উপজেলার মাধ্যমিক স্তরের ৩টি করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে স্টুডেন্টস কেবিনেট গঠনের উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। কিশোর বয়স থেকে গণতন্ত্রেও চর্চা ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়া, পরমতসহিষ্ণ–তা, নেতৃত্ব গুণ সৃষ্টি, বিদ্যালয়ের শিখন-শিখানো কার্যক্রমে শিক্ষকদেরকে সহযোগিতা করা, বিদ্যালয়ে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ উন্নত করার ক্ষেত্রে স্টুডেন্টস কেবিনেট ভুমিকা রাখবে।
জাতীয় শিক্ষা ব্যবস্থাপনা একাডেমী (নায়েম) সেমিনার কক্ষে সোমবার মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে স্টুডেন্টস কেবিনেট গঠনের লক্ষ্যে এক জাতীয় কর্মশালায় এ মতামত পাওয়া গেছে। শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ এ কর্মশালায় প্রধান অতিথি ছিলেন। মন্ত্রী বলেন শিশু-কিশোরকাল থেকে পরমতসহিষ্ণ–তা, নেতৃত্বগুণ, পরের জন্য কাজ করা, দেশ ও জাতির প্রতি দায়িত্ববোধ সৃষ্টিতে স্টুডেন্টস কেবিনেট কার্যকরী অবদান রাখবে। পর্যায়ক্রমে এ উদ্যোগ বাস্তবায়ন করা হবে।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের গত পাঁচ বছরের অভিজ্ঞতাপ্রসূত ফল থেকে শিক্ষা নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। তিনি প্রাথমিক স্তরের শিক্ষার্থীদেও থেকে মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীদেও বয়স, বৈশিষ্ট্য, গতিপ্রকৃতি বিবেচনায় রেখে কর্মপন্থা প্রণয়ন করার ওপর জোর দেন। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের সভাপতিত্বে কর্মশালায় শিক্ষাসচিব মো: নজরুল ইসলাম খান, অতিরিক্ত সচিব এ এস মাহমুদ, স্বপন কুমার সরকার, নায়েমের মহাপরিচালক প্রফেসর মো: হামিদুল হক প্রমুখ বক্তৃতা করেন। কর্মশালায় মন্ত্রণালয়ের অন্যান্য উর্ধ্বতন কর্মকতৃবৃন্দ, শিক্ষা মন্ত্রণালয়াধীন বিভিন্ন অধিদপ্তর, পরিদপ্তর, সংস্থা, প্রকল্পের প্রধানগণ, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের ৯টি অঞ্চলের উপপরিচালক, জেলা শিক্ষা অফিসার, উপজেলা শিক্ষা অফিসারগণ উপস্থিত ছিলেন। কর্মশালায় একটি খসড়া ম্যানুয়েলের ওপর আলোচনা হয়। আলোচকবৃন্দ শিক্ষাসচিবের সঞ্চালনে স্বাধীনভাবে মতামত প্রকাশ করেন।
উল্লেখ্য, প্রতিটি কেবিনেটে ছাত্রছাত্রীদের সরাসরি ভোটে নির্বাচিত ৭ জন সদস্য থাকবে। ৬ষ্ঠ থেকে ১০ শ্রেণির প্রতি ক্লাস থেকে একজন কওে সদস্য এবং বাকি দু’জন সর্বোচ্চ ভোটে যে কোনো ক্লাস থেকে নির্বাচিত হবে। এ কেবিনেটের মেয়াদ হবে এক বছর। এ কেবিনেট পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতাসহ পরিবেশ সংরক্ষণ, পুস্তক ও শিখন সামগ্রী, স্বাস্থ্য, ক্রীড়া ও সংস্কৃতি, পানিসম্পদ, বৃক্ষরোপন ও বাগান তৈরী, অভ্যর্থনা ও আপ্যায়নসহ বিভিন্ন কর্মকান্ডে ভুমিকা রাখবে। নির্বাচিত প্রতিনিধিরা নিজেদের মধ্যে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে চাহিদার ভিত্তিতে সাংবাৎসরিক কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করবে। নির্বাচন কমিশনার, প্রিজাইডং অফিসার, পোলিং অফিসার, পোলিং এজেন্ট সবাই শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে হবে। ৬ষ্ট থেকে ১০ম শেনিতে অধ্যয়নরত ও ভোটারতালিকাভুক্ত ছাত্রছাত্রীরাই নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবে। তবে এনির্বাচনে কোনো প্রতীক ব্যহৃত হবে না। নির্বাচনে মূদ্রিত কোনো পোস্টার, ফেস্টুন, লিফলেট ব্যবহার করা যাবে না। হাতে লেখা পোস্টার, ফেস্টুন, লিফলেট ব্যবহার করতে হবে। ২০১০ সাল থেকে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের অধীনে ৩য় থেকে ৫ম শ্রেণিতে এধরনের কেবিনেট গঠন কার্যক্রম চলছে। সর্বশেষ ২০১৪ সালে ৬১,১৯১টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এ নির্বাচিত স্টুডেন্ট কেবিনেট গঠিত হয়েছে।