kader-siddiki

দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ২১ মার্চ: নতজানু নির্বাচন কমিশন -ইসি দিয়ে সিটি নির্বাচন সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেছেন কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি কাদের সিদ্দিকী।তবে নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের অধীনে এ নির্বাচন হলে সরকার দল সমর্থিত টওার্থীদের জামানত বাজেয়াপ্ত হবে বলে মনে করেন কাদের সিদ্দিকী।

মতিঝিলে নিজের পার্টি অফিসের সামনে শনিবার অবস্থান কর্মসূচির ৫৩তম দিনে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।দুপুর ১২টার দিকে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, তিন মাস ধরে দেশে একদিকে অবরোধ, অন্যদিকে সরকারি বাহিনীর নিপীড়ন চলছে। দেশে রক্তের বন্যা বয়ে যাচ্ছে। কিন্তু সেদিকে সরকারের কোনো নজর নেই। তারা ক্রন্দনরত বাচ্চাদের ললিপপ দিয়ে শান্ত্বনা দেয়ার মতো করে চলমান সঙ্কটের মধ্যেই সিটি করপোরেশনের তফসিল ঘোষণা করেছে।দেশে শান্তি ফিরিয়ে আনতে দুই নেত্রীর আলোচনার কোনো বিকল্প নেই বলেও জানান তিনি।কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বলেছেন, সিটি নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা তামাশা ছাড়া কিছুই না। সুষ্ঠু নির্বাচন হলে সরকার সমর্থিত প্রার্থীদের নিশ্চিৎ ভরাডুবি হবে। বর্তমান নির্বাচন কমিশনের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। কারণ এটা একটা নতজানু কমিশন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্য করে বঙ্গবীর বলেন, যদি বিএনপি এই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে তাহলে আপনারা নির্বাচন ভণ্ডুলের চেষ্টা করবেন।এমন কি নির্বাচন দুই চার বছর পেছাতেও পারেন।তিনি বলেন,দলীয় নেতাকর্মীদের আপনারা ( শেখ হাসিনা) টেন্ডারবাজি শিখিয়েছেন।কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে সংসদ নির্বাচন দিচ্ছেন না। যদি সেখানে নির্বাচন দিতেন তাহলে দেশে আরো দশ হাজার নেতা সৃষ্টি হতো। আপনিতো সিটি নির্বাচন দিয়েছেন শ্বাস নেয়ার জন্য। আরো যদি শ্বাস নিতে চান তাহলে আলোচনায় বসুন।

প্রধানমন্ত্রীকে ইঙ্গিত করে তিনি আরো বলেন, বর্তমানে যেকোনো নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী গণভবনে ডেকে নিয়ে প্রার্থী ঠিক করেন। এমনকি মেথরপট্টি নির্বাচনেও তিনি নিজে প্রার্থী ঠিক করে দেন। অথচ বঙ্গবন্ধু কখনো দলীয় নির্বাচন ছাড়া অন্য কোনো নির্বাচনে প্রার্থী দিতেন না। দেশের সমস্ত সমস্যার মূলে শেখ হাসিনা ও খালেদা জিয়া উল্লেখ করে কাদের সিদ্দিকী বলেন,যেদিন এ দুইজন আলেচনায় বসবেন সেদিন জাতি ক্রিকেটের কোয়ার্টার ফাইনাল জেতার চেয়ে বেশি আনন্দিত হবে।

খালেদা জিয়াকে উদ্দেশ্য করে কাদের সিদ্দিকী বলেন, আপনার ব্যর্থ আন্দোলন প্রত্যাহার করুন। আন্দোলন আপনার হাতে নেই। আন্দোলন এখন সরকারের গোয়েন্দা বাহিনীর হাতে।আপনি কি জানেন, আপনার অবরোধের নামে কারা পেট্রোল বোমা মারছে,মানুষ পোড়াচ্ছে? আমিতো মনে করি, পেট্রোলবোমা ছড়াচ্ছে সরকারের গোয়েন্দা বাহিনী।অথচ সরকার সমগ্র বিশ্বে প্রমাণ করাচ্ছে আন্দোলনের নামে আপনার দলের লোকজনই বোমা মারছে, মানুষ পোড়াচ্ছে।

খালেদা জিয়াকে ঘরের বাইরে এসে আলোচনায় বসার আহ্বান জানিয়ে কাদের সিদ্দিকী বলেন, ঘরের বাইরে বেরিয়ে আসেন, সবাইকে ডাকেন, এমনকি প্রধানমন্ত্রীকেও ডাকেন, আলোচনায় বসেন।আপনি তিন বারের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন, তখন কয়জনের বাড়িতে আপনি গিয়েছিলেন? আপনি এখন পা তুলে বসে আছেন, আপনি মনে করছেন আপনার বাড়িতে সবাই যাবে। এটা ভুল ভাবছেন। আপনি বাইরে বেরিয়ে এসে আলোচানার জন্য সবার কাছে যান।

উল্লেখ্য,খালেদার প্রতি অবরোধ প্রত্যাহার এবং প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আলোচনায় বসার দাবি জানিয়ে গত ২৮ জানুয়ারি থেকে অবস্থান কর্মূসীচিতে বসেছেন বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী। শনিবার অবস্থান কর্মসূচির ৫৩তম দিনে তিনি সংবাদ সম্মেলন করে সিটি নির্বাচনের ব্যাপারে তার বক্তব্য জানালেন।সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মাঝে উপস্থিত ছিলেন,কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের যুগ্ম সম্পাদক ইকবাল সিদ্দিকী, সাংগঠনিক সম্পাদক শফিকুল ইসলাম দেলোয়ার, কেন্দ্রীয় নেতা ফরিদ আহমেদ, যুব আন্দোলনের আহ্বায়ক হাবিব উন-নবী সোহেল প্রমুখ নেতারা।