Towfiq-460

দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ২০ মার্চ: ২০২১ সালের মধ্যে দেশের সব মানুষ বিদ্যুৎ পাবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই ইলাহী চৌধুরী। তিনি বলেন, বেশি গরমে এবং সেচে বিদ্যুৎ চাহিদা বেড়ে ৮ হাজার থেকে সাড়ে ৮ হাজার পৌঁছবে। এ পরিমাণ বিদ্যুৎ উৎপাদনে আমরা চেষ্টা করছি। তারপরও ত্রুটি হতে পারে। সবার কাছে অনুরোধ রাখবো ছোট খাটো সমস্যাকে যেন বড় করে না দেখা হয়।

শুক্রবার রাজধানীর বিদ্যুৎ ভবনে এক অনুষ্ঠান শেষে তিনি সাংবাদিকদেও এ কথা বলেন। বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে আয়োজিত দুই দিনব্যাপী কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তৌফিক-ই ইলাহী প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। বিদ্যুৎ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ড.আহমদ কায়কাউসের সভাপতিত্বে উদ্বোধীন অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের মুখ্য সচিব মো. আবুল কালাম আজাদ,পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান ইশতিয়াক আহমেদ, বাংলাদেশ পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ডের (বিপিডিবি) চেয়ারম্যান শাহীনুল ইসলাম খান প্রমুখ।

কর্মশালার প্রথমদিনে আজ নবায়ণযোগ্য জ্বালানিতে বাংলাদেশের সুযোগ শীর্ষক নোট পেপার উপস্থাপন করেন বিদ্যুৎ সচিব মনোয়ার ইসলাম। দুই দিনব্যাপী এ কর্মশালা শনিবার বিকেলে শেষ হবে।তৌফিক-ই ইলাহী বলেন, বর্তমানে দেশের ৭০ ভাগেরও বেশি মানুষ বিদ্যুতের আওতায় এসেছে। প্রতিনিয়ত বিদ্যুতের চাহিদা বাড়ছে। এ চাহিদা পূরণের জন্য সরকার চেষ্টা করে যাচ্ছে। প্রতি মাসে দেড় লাখের মতো বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়া হচ্ছে। এর অধিকাংশই গ্রাম এলাকায়।বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর বিষয়ে তিনি বলেন, বিদ্যুতের দামের বিষয়টি দেখে বিইআরসি (বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন)। সেখানে তারা বিভিন্ন কোম্পানির বিদ্যুৎ-গ্যাসের দাম বৃদ্ধির প্রস্তাবের ওপর শুনানি করেছে। তারা যেমন সংশ্লিষ্ট কোম্পানির লাভ লোকসানের কথা চিন্তা করে আবার সাধারণ মানুষের কষ্টের কথাও ভাবে।

তৌফিক-ই ইলাহী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে এ খাতের উন্নয়ন হয়েছে। একসময় দিনে ৫-৭ ঘণ্টা লোডশেডিং হতো। এখন আর এভাবে লোডশেডিং হয় না। ক্রিকেট বিশ্বকাপ চলছে এ সময় কী লোডশেডিং হয়েছে? হয়নি। কর্মশালায় যোগদানকারীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, কর্মক্ষেত্রে আপনারা নেতা। আজকে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ক্ষেত্রে সরকারের যে সফলতা তার ভাগিদার আপনারা। কাক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছতে আপনাদের আরো দক্ষ ও বিকশিত হতে হবে।বিদেশিরা বিদ্যুতের দাম বাড়াতে বললেও বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপটে অনেক সময় সেটা সম্ভব হয় না বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী।

তৌফিক-ই-ইলাহী বলেন, দাতা সংস্থার লোকজন বলে, তোমরা বিদ্যুতে ভর্তুকি দিচ্ছো। বিদ্যুতের দাম বাড়িয়ে সেই টাকা দিয়ে অনেকগুলো হাসপাতাল স্থাপন করতে পারো। তাদের সেই পরামর্শ আমাদের আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপটে মেলানো যায় না। তিনি বলেন, দাম বাড়ানোর সঙ্গে অনেক বিষয় জড়িত। কাগজে লিখে সমাধান দেওয়া যায় না। প্রধানমন্ত্রী চান না জনগণ দুর্ভোগের শিকার হোক। এ প্রসঙ্গে তৌফিক ই-ইলাহী বলেন, নিরাপত্তা শব্দটি আপেক্ষিক বিষয়। পুরোপুরি নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব নয়। এখন যাকে নিরাপত্তা বলছি, দশ বছর পর তা বদলে যেতে পারে। সারা দেশে বিদ্যুতের সুবিধাভোগী বলা হচ্ছে ৬৮ শতাংশ। আমার মনে হয় এই হিসাব সঠিক নয়। এখন সুবিধাভোগী ৭০ শতাংশ ছাড়িয়ে গেছে।আসন্ন গ্রীষ্ম মৌসুমে লোডশেডিং প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এ মৌসুমে চাহিদা সাড়ে আট হাজার ছাড়িয়ে যাবে। আমাদের সক্ষমতা রয়েছে। তবে কিছুটা সমস্যা হলে জনগণকে মেনে নেওয়ার অনুরোধ করছি।

সেক্টর লিডারদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনারা রাষ্ট্রের বড় বন্ধু। সবচেয়ে ভালো সেবা দিলে সব কিছুই অর্জন করা সম্ভব। ২০২১ সালের মধ্যে সবার ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়া কঠিন বিষয় মনে করি না।প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিব আবুল কালাম আজাদ বলেন, বিদ্যুতের সঙ্গে জ্বালানি সরাসরি জড়িত। এতে সামঞ্জস্য করা না গেলে জটিলতা তৈরি হতে পারে। এখানে আরও মনোযোগ দেওয়ার সুযোগ রয়েছে।