দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ২০ মার্চ: বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব সালাহ উদ্দিন আহমেদের সন্ধানে সরকারের মন্ত্রী-এমপিরা যে ধরনের বক্তব্য রাখছেন তা নিছক রসিকতা ছাড়া আর কিছু নয় বলে মন্তব্য করেছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য লে. জে (অব.) মাহবুবুর রহমান।শুক্রবার সকালে গুলশানস্থ সালাহ উদ্দিন আহমেদের বাসায় তার পরিবারকে সমবেদনা জানাতে গিয়ে তিনি সাংবাদিকদের কাছে এ কথা বলেন।শুক্রবার সকালে বিএনপির ‘নিখোঁজ’ যুগ্ম মহাসচিব সালাহ উদ্দিন আহমেদের গুলশানের বাসায় গিয়ে তার পরিবারের সদস্যদের সহানুভূতি জানানোর পর নির্বাচন নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন মাহবুবুর রহমান।ঢাকা ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে অংশগ্রহণ নিয়ে দলের মধ্যে দুই মত থাকার কথা জানিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মাহবুবুর রহমান বলেছেন, শিগগিরই এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানানো হবে।
শুক্রবার এ বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বিএনপির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরামের এই সদস্য বলেন, বিএনপি এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি। নির্বাচনে যাবে কি যাবে না, কী করা উচিৎ- তা নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। শিগগিরই সিটি করপোরেশন নির্বাচনের বিষয়ে দল চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে।প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ গত বুধবার রাজধানী ঢাকা ও বন্দরনগরী চট্টগ্রামের তিন সিটি করপোরেশন নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন। ওই তিন করপোরেশনে ভোট হবে আগামী ২৮ এপ্রিল, প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র জমা দিতে হবে ২৯ মার্চের মধ্যে।দীর্ঘ আট বছর ধরে নির্বাচনের অপেক্ষায় থাকা ঢাকা সিটি করপোরেশন এখন দুই ভাগ হলেও ২০০২ সালে অবিভক্ত সিটির সর্বশেষ নির্বাচনে জয়ী হয়ে দীর্ঘদিন মেয়রের দায়িত্ব পালন করেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সাদেক হোসেন খোকা। আর চট্টগ্রামের মেয়রের দায়িত্বে থাকা এম মনজুর আলমও ২০১০ সালের নির্বাচন পার হয়েছিলেন বিএনপির সমর্থন নিয়ে।
মনজুর আলম নিজে নির্বাচনে অংশ নিতে আগ্রহী হলেও দলের চেয়ারপার্সনের সিদ্ধান্তের’অপেক্ষায় থাকার কথা বলেছেন। তবে বিএনপিপন্থি কাউন্সিলরদের অনেকেই প্রয়োজনে দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে ভোটে দাঁড়ানোর ইংগিত দিয়েছেন ইতোমধ্যে। ঢাকার পরিস্থিতিও মোটামুটি একইরকম। সরকারবিরোধী আন্দোলনে নেমে হরতাল-অবরোধে থাকলেও সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর এই ভোটে অংশ নেওয়ার বিষয়টি সরাসরি নাকচ করেননি দলের কোনো নেতা।তিনি বলেন, সিটি করপোরেশন নির্বাচনের বিষয়ে দলে দুই রকমের ভাবনা-চিন্তা চলছে। তৃণমূল পর্যায়ে এ নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। একপক্ষ বলছেন, দলের ব্যাপক জনসমর্থন রয়েছে। এই নির্বাচনে সরকারকে ফাঁকা মাঠে ছেড়ে দেওয়া উচিৎ নয়।
আরেক পক্ষ বলছেন- কীভাবে নির্বাচন হবে? দলের প্রার্থী যারা হবে, তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা। েেনতা-কর্মীরা অনেকেই জেলে আছেন।এ রকম পরিস্থিতিতে কীভাবে নির্বাচনে আমরা অংশ নেব?নিজের ব্যক্তিগত অভিমত তুলে ধরে সাবেক এই সেনা প্রধান বলেন, দেশের যে পরিস্থিতি আজ সৃষ্টি হয়েছে, আজ আমাদের জাতীয় নির্বাচন নিয়ে বেশি ভাবতে হবে। দশম যে সংসদ চলছে, তা একটি প্রশ্নবিদ্ধ সংসদ। তাই দেশে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের বিষয়ে এখন গুরুত্ব দিতে হবে।তবে সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়ে দলে যে মত শক্তিশালী হবে সে অনুযায়ীই সিদ্ধান্ত হবে বলে প্রত্যাশা করছেন মাহবুবুর রহমান।মাহবুবুর রহমান বলেন, সালাহ উদ্দিন আহমেদের সন্ধানে সরকার জনগণকে যে বিভ্রান্তিকর তথ্য দিচ্ছে তাতে প্রমাণ হয় আইন শৃঙ্খলা বাহিনীতে কতটা দুর্বলতা রয়েছে।
তার নিখোঁজ হওয়ার ঘটনায় আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর বর্তমান অবস্থা প্রতিফলন হয়েছে।সরকারের কাছে অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, খুব শিগগির তাকে খুঁজে বের করে তার পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দিন। কারণ সালাহ উদ্দিনের নিখোঁজের ঘটনায় দেশবাসী উদ্বিগ্ন।আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তার স্বামীকে তুলে নিয়ে গেছে আবারো এমন দাবি করে হাসিনা আহমেদ বলেছেন, আমার স্বামীকে তারা তুলে নিয়ে গেছে একথা তারা অস্বীকার করতে পারবে না। দ্রুত তাকে আদালতে বা জনসম্মুখে হাজির করার জন্য আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে আহ্বান জানান তিনি।প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, অক্ষত অবস্থায় আমার স্বামীকে আমার কাছে ফিরিয়ে দিন।