দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ২০ মার্চ: চট্টগ্রাম সরকারি কলেজ ও মহসীন কলেজে বামপন্থী অধ্যক্ষ ও বিভাগীয় প্রধানদের যোগসাজশে ইসলামী ছাত্রশিবির অস্ত্র মজুতের আস্তানা গড়ে তুলেছে বলে অভিযোগ করেছে ছাত্রলীগ।শুক্রবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যানটিনে ছাত্রলীগের এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির সভাপতি এইচ এম বদিউজ্জামান এ অভিযোগ করেন। চট্টগ্রামে ওই দুটি কলেজে পুলিশের অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধারের ঘটনার কথা উল্লেখ করে এ অভিযোগ করেন তিনি।বদিউজ্জামান বলেন, গত ২৭ নভেম্বর চট্টগ্রামের এ দুটি কলেজের হোস্টেলগুলোতে বিশাল অস্ত্র ভান্ডারের সন্ধান পায় পুলিশ। কলেজ দুটির অধ্যক্ষ ও প্রতিটি বিভাগীয় প্রধান বামপন্থী ভাবধারায় বিশ্বাসী। কলেজ দুটিতে জামায়াত-শিবিরের ক্যাডারদের ওই অস্ত্র মজুতের আস্তানা গড়ে তোলার ক্ষেত্রে এ সকল শিক্ষকের প্রত্যক্ষ সহযোগিতা রয়েছে বলে আমরা জানতে পেরেছি।
ওই কলেজ দুটিতে বামপন্থী ও জামায়াত-শিবিরের মধ্যে এক ধরনের যোগসাজশ রয়েছে বলেও দাবি করেন ছাত্রলীগের সভাপতি।ওই দুটি কলেজের শিক্ষকদের বদলি করে সেখানে প্রগতিশীল ভাবধারায় বিশ্বাসী শিক্ষক ও কর্মচারী নিয়োগ এবং কলেজের ছাত্রাবাস বন্ধ করে মেধার ভিত্তিতে আসন বণ্টনের দাবি করা হয় সংবাদ সম্মেলনে। ওই ঘটনায় জড়িত কারও নাম উল্লেখ করা হয়নি।বদিউজ্জামান বলেন, চট্টগ্রাম ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়সহ বেশ কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এমন আরও অস্ত্রের মজুত রয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও প্রশাসন চাইলে আমরা তাদের সেই প্রতিষ্ঠানগুলোর তালিকা দিয়েও সহায়তা করতে পারি।গত নভেম্বরের এক ঘটনার উল্লেখ করে বদিউজ্জামান বলেন, চট্টগ্রাম সরকারি কলেজের এক অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রীকে ফুল দিতে গেলে কলেজ ফটকে শিবির ক্যাডাররা ছাত্রলীগকে ওই অনুষ্ঠানে যোগ দিতে বাধা দেয়। এ বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রীর হস্ত ক্ষেপ কামনা করলেও তিনি কোনো মন্তব্য করেননি। শিক্ষামন্ত্রীর নীরবতা ছাত্রলীগের রাজনীতিতে প্রভাব ফেলেছে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে দাবি করা হয়, হাজী দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের ক্যাম্পাসে অবস্থানের অন্তরায় হচ্ছে জামায়াত-শিবির চক্র ও স্বার্থান্বেষী মহল। বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য নিজেই স্বার্থান্বেষী মহলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। এসব স্বার্থান্বেষী মহলের বিরুদ্ধেও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়।এ সময় ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শামসুল কবির, মোস্তাফিজুর রহমান, দপ্তর সম্পাদক শেখ রাসেল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি মেহেদী হাসান ও সাধারণ সম্পাদক ওমর শরীফ উপস্থিত ছিলেন। লিখিত বক্তব্যে কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকী নাজমুল আলমের স্বাক্ষর থাকলেও তিনি উপস্থিত ছিলেন না।
গত বুধবার ভোররাত থেকে টানা ১২ ঘণ্টার মতো নগরীর গণবেকারি ও চন্দনপুরায় চট্টগ্রাম কলেজ ও মহসিন কলেজ ক্যাম্পাসে অভিযান চালায় পুলিশ।চট্টগ্রাম কলেজের দুটি ছাত্রাবাস থেকে নাশকতায় জড়িত সন্দেহে ৭২ শিবির কর্মীকে আটক করে পুলিশ। ক্যাম্পাসে স্টাফ কোয়ার্টার এলাকায় একটি গর্ত থেকে শিবিরের ব্যানারে মোড়ানো নয়টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়।পাশের মহসিন কলেজেও অভিযান চালিয়ে বিস্ফোরক দ্রব্য ও বোমা তৈরির নানা সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়। ক্যাম্পাসের মধ্যে একটি পাহাড়ি গুহা থেকে আটক করা হয় আট শিবির কর্মীকে।