দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ১৬ মার্চ: বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের স্পিকার এবং সিপিএ নির্বাহী কমিটি’র চেয়ারপার্সন ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেছেন, নারীদের রাজনৈতিক সচেতনতা বৃদ্ধির কোন বিকল্প নেই। নারীরা রাজনৈতিকভাবে সচেতন হলেই রাজনীতিতে নারী প্রতিনিধিত্বের সুষ্ঠু বিকাশ সম্ভব। টেকসই উন্নয়ন ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ বিকাশে নারী নেতৃত্ব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।রোববার নিউইয়র্কের ইউ এন ওয়ান হোটেলে কমনওয়েলথ ন্যাশনাল ওমেন্স মেশিনারীস (এনডব্লিউএম) এর বার্ষিক পরামর্শ সভায় বক্তৃতাকালে তিনি একথা বলেন।
তিনি বলেন, গণতান্ত্রিক উন্নয়ন এবং টেকসই আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে নারী নেতৃত্ব মূল্যবান অবদান রাখবে। সেক্ষেত্রে রাজনৈতিক দলগুলোর বিদ্যমান গঠনতন্ত্রে নারীদের জন্য অংশগ্রহণমূলক গণতান্ত্রিক নেতৃত্ব সৃষ্টির প্রয়াস থাকতে হবে। যাতে নারীরা নিজেদের অধিকার সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে গণতান্ত্রিক রাজনীতিতে নিজেদের সমৃদ্ধ করে আগামী দিনে জাতীয় সংসদসহ সকল ক্ষেত্রে নিজেদের প্রতিনিধিত্ব বজায় রাখতে পারে এবং নারী ক্ষমতায়নকে এগিয়ে নিয়ে নিজেদের নেতৃত্বের আসনে সুপ্রতিষ্ঠিত করতে পারে।
তিনি আরো বলেন, ২০১৫ পরবর্তী নতুন উন্নয়ন এজেন্ডার সামগ্রিক লক্ষ্য হওয়া উচিত দারিদ্র্য দূরীকরণ। কিন্তু সেখানে মানবকল্যাণের বিষয়টির উপর জোর দিতে হবে। জীবনযাত্রার গুণগত মান উন্নয়নের মাধ্যমেই সেটি অর্জন করতে হবে। নারীর জীবন যাত্রার মানোন্নয়নের মাধ্যমে নারীকে আর্থ-সামাজিক, রাজনৈতিক সকল ক্ষেত্রে ক্ষমতায়িত করতে হবে। তাহলেই মানব কল্যাণ নিশ্চিত হবে। কেননা সমাজের এই বৃহৎ জনগোষ্ঠীকে বাদ রেখে কোন মানব কল্যাণ হতে পারে না।
স্পিকার বলেন, রাজনীতিতে সকলের সমান সুযোগ গণতন্ত্রের মূলবাণী। রাজনীতিতে নারীদের অংশগ্রহণের বিভিন্ন ধরনের প্রতিবন্ধকতা রয়েছে। রাজনীতিতে সমানাধিকার প্রতিষ্ঠায় নারীদের রাজনৈতিক প্রতিনিধিত্বের সকল বাধা দূর করতে হবে। রাজনৈতিক নেতৃত্বে নারীদের অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ বিশ্বে একটি রোল মডেল। আগামী দিনে বিশ্বরাজনীতির চ্যালেঞ্জ মোকাবেলাসহ সকল জাতীয় আন্তর্জাতিক ফোরামে নারীদের রাজনৈতিক প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে হবে। রাজনীতি ও সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় নারীদের সমানাধিকার নিশ্চিতকরণে সিডো কাজ করে যাচ্ছে। এছাড়া ‘বেইজিং প্ল্যাটফর্ম’ সহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সেমিনার ও সংগঠনের মাধ্যমে নারীদেরকে রাজনৈতিক নেতৃত্বে আরও ব্যাপক অন্তর্ভুক্তির বিষয়ে অনেক অগ্রগতি হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, নারীদের রাজনৈতিক প্রতিনিধিত্ব রাজনৈতিক প্রভাব ও সিদ্ধান্ত গ্রহণে ভূমিকা রাখে। তাই ক্ষমতার ভারসাম্য প্রতিষ্ঠায় নারী নেতৃত্বকে এগিয়ে নিয়ে নারীকে সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় সম্পৃক্ত করে নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন সুপ্রতিষ্ঠিত করতে হবে।অনুষ্ঠানে উগান্ডা পার্লামেন্টের স্পিকার রেবেকা কাডাগা, নাইজেরিয়ার মহিলা ও সামাজিক উন্নয়ন মন্ত্রী হাজিয়া জইনব মাইনা, কমনওয়েলথ এর ডেপুটি সেক্রেটারি জেনারেল ড. জোসেফাইন ওজিয়াম্বো বক্তৃতা করেন। এছাড়া ইউএন ওমেন, কমনওয়েলথ ফাউন্ডেশন, ওইসিডি সহ বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধিবৃন্দ বক্তৃতা করেন। জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি আব্দুল মোমেন এ সময় উপস্থিত ছিলেন।