দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ১৬ মার্চ: হরতাল ও অবরোধের কারণে চলতি বাজেটের অর্ধেকেরও বেশি ক্ষতি হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি কাজী আকরাম উদ্দিন আহমেদ। সোমবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে টাইম ওয়াচ আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন কাজী আকরাম।অর্থনীতিতে রাজনৈতিক অস্থিরতার প্রভাব অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, এ বছর মূল বাজেটের অর্ধেকের বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে আমাদের অর্থনীতি। বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন ব্যবসায়ীরা। তাদের পাশাপাশি কৃষক, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও বিভিন্ন যানবাহনের চালকরাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
দেশে বর্তমানে সাড়ে তিন কোটি ব্যবসায়ী দাবি করে এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি বলেন, এই চলমান সঙ্কটে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে আমাদের পরিবহন খাত। এ খাত যাতে ভেঙে পড়ে এবং মানুষ যাতে কোনভাবেই যাতায়াত করতে না পারে তার জন্য ট্রাকে আগুন দেয়া হয়েছে।প্রায় দুই মাস ধরে চলা টানা অবরোধে যারা নিহত হয়েছেন তাদের ৭৫ শতাংশই ট্র্রাকচালক দাবি করে কাজী আকরাম বলেন, পরিবহন ছিল অবরোধকারীদের টার্গেট। তাই তারা চালকদের পুড়িয়ে মেরেছে।
মানববন্ধন, সমাবেশ, বিক্ষোভের মতো কর্মসূচি পালন করে ব্যবসায়ীরা আজ ক্লান্ত হয়েছে মন্তব্য করে এই ব্যবসায়ী নেতা বলেন, আমরা আজ ভাগ্যহত, আশাহত। আমরা ভেঙে পড়েছি। আর কোনো সমাধানের কোন পথ খুঁজে পাচ্ছি না। তাই আজ আমরা কান্না শুরু করেছি।বাংলাদেশের অর্থনীতি ২০১৪ সালে বিশ্বের জন্য রোল মডেল হয়েছিল- এমন মন্তব্য করে তিনি বলেন, এই অর্থনীতিকে আজ ধ্বংস করা হয়েছে। আমরা উন্নয়নের যে শিখরে গিয়েছিলাম তা থেকে ছিটকে পড়েছি। যদি এখুনি হরতাল ও অবরোধের মত অর্থনীতি ধ্বংস করা কর্মসূচি বন্ধ করা হয় তবে আগামী এক বছরের মধ্যে আবার অর্থনীতির সেই অবস্থায় ফিরে যাওয়া সম্ভব।
সরকারের উদ্দেশে কাজী আকরাম বলেন, মানুষের জানমালের নিরাপত্তা দেয়া আপনাদের দায়িত্ব। তাই মানুষের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করুন। আর অন্যদের বলবো আর ভোগাবেন না। সংলাপ ও সমাঝোতা যেভাবেই হোক সঙ্কট নিরসন করুন।অর্থনীতির ক্ষতির কথা যত বলা হবে বোমাবাজরা ততবেশি উৎসাহ পাবে, তত বোমা মারবে বলেও অভিমত এই ব্যবসায়ী নেতার।
অনুষ্ঠানে অন্যান্য বক্তরা বলেন, রাজনীতিবিদরা যদি সত্যিই দেশের মানুষকে ভালবাসতেন তবে তারা তাদের কথা ভাবতেন এবং কোনো ধ্বংসত্মক কর্মসূচি দিতেন না। তারা তো আমাদের কোনো কথাই শোনেন না। হরতাল ও অবরোধ বন্ধ করুন। আমরা অবশ্যই সরকারকে অনুরোধ করবো সংলাপের জন্য বসতে। কিন্তু অযৌক্তিক কর্মসূচি দিয়ে যৌক্তিক কোনো সমাধানে আসা সম্ভব নয়।
আইবিএফবির সভাপতি হাফিজুর রহমানের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন- অ্যামচেমের সভাপতি আফতাব উল ইসলাম, রিহ্যাব সভাপতি আলমগীর শামসুল আলমীন, পর্যটন অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি জামিউল আহমেদ, এসএমই ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আলী জামান, বাংলাদেশ সিএনজি অ্যাসোসিয়েশনের আহ্বায়ক মাসুদ খান ও নওগাঁ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাষ্টিজের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ আলী দ্বীন প্রমুখ।