Bibrity

দৈনিকবার্তা-খাগড়াছড়ি, ১৩ মার্চ: পার্বত্যচট্টগ্রামে জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আন্দোলনরত ৮ গণতান্ত্রিক সংগঠন (গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ, হিল উইমেন্স ফেডারেশন, পার্বত্য চট্টগ্রাম নারী সংঘ, সাজেক নারী সমাজ, সাজেক ভূমি রক্ষা কমিটি, ঘিলাছড়ি নারী নির্যাতন প্রতিরোধ কমিটি ও প্রতিরোধ সাংস্কৃতিক স্কোয়াড) শুক্রবার ১৩ মার্চ সংবাদ মাধ্যমে দেয়া এক যৌথ বিবৃতিতে ‘কাউন্টার টেররিজম ব্যাটেলিয়ন’ নামে নতুন একটি বাহিনী গঠনের সংবাদে গভীর উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা প্রকাশ করে এ থেকে বিরত থাকার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।

সংবাদ মাধ্যমে দেয়া বিবৃতিতে ৮ গণসংগঠনের নেতৃবৃন্দ সরকারের কঠোর সমালোচনা করে বলেছেন, সন্ত্রাস দমন নয়, অবৈধ পন্থায় ক্ষমতায় আঁকড়ে থাকার কারণে নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে এখন সরকারের চেলাচামু-ারা ভীষণ শংকিত। এ পরিস্থিতিতে ক্ষমতা ও গদি নিরাপদ রাখার মতলবে নতুন একটি রাষ্ট্রীয় ঠ্যাঙ্গারে বাহিনী গঠন করার পাঁয়তারা করছে।’

বিবৃতিতে ৮ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ সরকারকে এও স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেছেন, রক্ষী বাহিনী গঠনের পরিণাম ভাল হয়নি। বিরোধীদের দমনে লক্ষ্যে গঠিত র‌্যাপিড একশন ব্যাটেলিয়ন (র‌্যাব) জন্মদানকারী বিএনপি-ই এ বাহিনীর হাতে সবচে’ লাঞ্ছিত ও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। পরিহাস হচ্ছে এই, বিএনপি’ও এখন র‌্যাব বিলুপ্তির ব্যাপারে সোচ্চার। কাউন্টার টেররিজম ব্যাটেলিয়ন’ গঠন করলে একদিন আওয়ামী লীগকেও বিএনপি’ মত তাদের “সাধের সন্ত্রাস দমন বাহিনীর” জন্য চরম মাসুল দিতে হবে।বিবৃতিতে ৮ গণসংগঠনের নেতৃবৃন্দ দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বলেছেন, ‘কোন স্বেচ্ছাচারি পন্থা, আইন বা বাহিনী গঠন অবৈধভাবে কুক্ষিগত করা ক্ষমতা নিষ্কণ্টক ও নিরঙ্কুশ করা যায় না, ইতিহাসে তার নজীর নেই। এ দেশের জনগণের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য লড়াইয়ের দৃষ্টান্ত রয়েছে। গণবিরোধী স্বেচ্ছাচারি পদক্ষেপ জনগণ দীর্ঘদিন ধরে সহ্য করবে না।’

৮ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ পার্বত্য চট্টগ্রামে সীমান্ত এলাকার বাইরে অপ্রয়োজনে বিজিবি’র ক্যাম্প বাড়ানো, ব্যাটেলিয়ন সদর দপ্তর নির্মাণের নামে দীঘিনালা, রুমা ও অন্যান্য জায়গায় পাহাড়িদের বংশপরম্পরার বাস্তুভিটা থেকে উচ্ছেদকে গণবিরোধী সরকারের দমন নীতির নীলনক্সার অংশ বিশেষ হিসেবে বিবৃতিতে মন্তব্য করেন এবং এ সব গণবিরোধী পদক্ষেপ বন্ধের জন্য সরকারকে আহ্বান জানান, অন্যথায় তা থেকে উদ্ভুত যে কোন পরিণতির জন্য সরকারকে দায়-দায়িত্ব নিতে হবে বলে তারা কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন।

বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেছেন গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম (ডিওয়াইএফ)-এর সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক যথাক্রমে মাইকেল চাকমা ও অংগ্য মারমা; বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (পিসিপি)-এর সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক যথাক্রমে থুইক্যচিং মারমা ও রিটন চাকমা;হিল উইমেন্স ফেডারেশন(এইচডব্লিউএফ)-এর সভাপতি নিরূপা চাকমা, পার্বত্য চট্টগ্রাম নারী সংঘের সভাপতি সোনালী চাকমা, সাজেক নারী সমাজের সভাপতি নিরূপা চাকমা(২), সাজেক ভূমি রক্ষা কমিটির সভাপতি জ্ঞানেন্দু বিকাশ চাকমা, ঘিলাছড়ি নারী নির্যাতন প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি কাজলী ত্রিপুরা ও প্রতিরোধ সাংস্কৃতিক স্কোয়াডের সদস্য সচিব আনন্দ প্রকাশ চাকমা।

উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে হুইপ শহীদুজ্জামান সরকারের এক প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল এই ‘কাউন্টার টেররিজম ব্যাটেলিয়ন’ গঠনের কথা জানিয়েছেন। ৮ গণসংগঠনের কনভেনিং কমিটি সদস্য সচিব অংগ্য মারমা স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।