দৈনিকবার্তা-নীলফামারী, ১২ মার্চ: নীলফামারী জেলার বিভিন্ন উপজেলায় অবস্থিত ঐতিহাসিক নিদর্শন সমুহ সংরক্ষণের অভাবে চিরতরে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। জেলার ডোমার উপজেলার হরিণচড়া ইউনিয়নের আটিয়াবাড়ী গ্রামে ঐতিহাসিক ময়নামতির কোর্ট বা গড় অবস্থি’ত। পার্শ্ববতী জলঢাকা উপজেলার ধর্মপাল ইউনিয়নে ধর্মপালের গড় যা চারিদিকে পরিখা বেষ্টিত একাধিক প্রাচীর ঘেরা। পাল বংশের সময় নির্মিত হয় এটি। ১৯৮৭-৮৮ সালে খনন এবং সংরক্ষণের উদ্যোগ নেয়া হলেও কার্যকর না হওয়ায় অস্তিত্ব বিলীন হতে বসেছে। জলঢাকা উপজেলার খুটামারা ইউনিয়নে রাজা হরিশচন্দ্রের প্রাসাদ ও মন্দির কালের বিবর্তনে মাটির নীচে চাপা পড়ে বর্তমানে উঁচু ঢিবি এবং বড় বড় পাথর খন্ড কালের সাী হয়ে রয়েছে। প্রতœতত্ব বিভাগ কয়েক দফা উদ্যোগ নিলেও প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দের অভাবে খনন কাজ চালাতে পারেনি। একই উপজেলার ধর্মপাল ইউনিয়নের হাজীপাড়ায় অবস্থি’ত ১৭৯৫ খ্রিষ্টাব্দে নির্মিত হাজী তালেঙ্গা মসজিদ এবং পিছনে একটি বড় আকারে কবর রয়েছে। স্থ’ানীয় জনগণ সংস্কার করে মসজিদটির অস্তিত্ব ধরে রেখেছে।
সদর উপজেলার দারোয়ানী- খানসামা সড়কে তিন গম্বুজ বিশিষ্ট আঙ্গোরা মসজিদটি মোগল স্থ’াপত্য আমলে প্রায় ২শ’ বছর আগে নির্মিত। স্থ’ানীয় ধর্মপ্রাণ ব্যক্তিরা স্বীয় অর্থ ব্যয় করে কালের সাক্ষী হিসাবে মসজিদটিকে কোনো রকমে সংরক্ষণ করে চলেছে। জেলার কিশোরীগঞ্জ উপজেলার সদর ইউনিয়নে অবস্থি’ত ভীমের চুলাটি বিলীন হতে চলেছে। নীলকর সাহেবদের আবাসিক ভবন যা ¯স্থানীয় নীলকুঠি নামে পরিচিত। তার অস্তিত্ব প্রায় বিলীন। ১৮৭৬ সালে মহকুমা হওয়ায়র পর মহকুমা প্রশাসকের বাসভবন, ১৯৮৪ সালে নীলফামারী জেলায় উন্নীত হওয়ার পর জেলা প্রশাসকের বাসভবন হিসাবে নীলকুঠি ব্যবহৃত হয়। ১৯৮৭-৮৮ অর্থ বছরে জেলা প্রশাসকের নতুন বাসভবনটি নির্মিত হওয়ার পর অফিসার্স কাব হিসাবে নীলকুঠি ব্যবহৃত হলেও সংরক্ষণের অভাবে অস্তিত্ব বিলীন হতে বসেছে। জেলার ডোমার উপজেলার সোনারায় ইউনিয়নে সোনারায় গ্রামে হযরত শাহ্ কলন্দর (রাঃ) মাজার শরীফ অবস্থি’ত। ইসলামের প্রথম যুগে এই এলাকায় এসে ইসলাম প্রচার শুরু করেন। হযরত শাহ কলন্দর (রাঃ) ইন্তেকাল করলে সেখানেই তাঁকে দাফন করা হয়। প্রতি বছর বৈশাখ মাসে সেখানে বিশাল ওরস অনুষ্ঠিত হয়। মাজার সংস্কার ও মাদ্রাসা পরিচালনার জন্য প্রচুর জমি থাকলেও একটি মহল বংশনুক্রমে ভোগ দখল করলেও মাজারটির উন্নয়ন ও সংস্কার হয়নি। জেলার সৈয়দপুর উপজেলায় অনুরুপভাবে ঐতিহ্যবাহী মুর্তজা ইন্সটিটিউট, ফিদা আলী ইন্সটিটিউট, দর্শনীয় গির্জা প্রয়োজনীয় মেরামত ও সংস্কারের অভাবে ঐতিহ্য হারাতে বসেছে।