দৈনিকবার্তা-বান্দরবান, ১১ মার্চ: পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (জেএসএস) সভাপতি ও আঞ্চলিক পরিষদ চেয়ারম্যান সন্তু লারমার গাড়ি বহরে হামলা চালিয়েছে বান্দরবান জাগো পার্বত্যবাসী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। এঘটনায় পাহাড়ি-বাঙালি সংগঠনগুলোর নেতাকর্মীরা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এতে আহত হয়েছে উভয় পক্ষের অন্তত ১০ জন।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে শহরের বিভিন্ন স্থানে বিপুল সংখ্যক সেনা, বিজিবি ও পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। হরতাল চলাকালে বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে শহরের বালাঘাটা বাজার এলাকার বান্দরবান-রাঙামাটি সড়কে এ ঘটনা ঘটে।পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ চেয়ারম্যান জোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় ওরফে সন্তু লারমার বান্দরবান সফরের প্রতিবাদে জাগো পার্বত্যবাসী ব্যানারে ডাকা হরতালে আজ বুধবার সহিংস ঘটনা ঘটেছে। এতে অন্তত পাঁচজন আহত হয়েছে।
নাম প্রকাশ না করে কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শীর দেওয়া তথ্যমতে, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সম্মেলন ও দলীয় কাজে তিন দিনের সফরে সন্তু লারমা আজ বান্দরবান আসেন। তাঁর আগমনের প্রতিবাদে ডাকা হরতালে সকাল থেকে জাগো পার্বত্যবাসী ব্যানারে কর্মীরা বালাঘাটা ও সদরের ট্রাফিক চত্বরে মিছিল সমাবেশ ও পিকেটিং করতে থাকেন। এ সময় বান্দরবান-চন্দ্রঘোনা সড়কের একটি বেইলি সেতুর পাটাতন তুলে ফেলে হরতাল-সমর্থকরা। পরে সেনাসদস্যরা এটি মেরামত করেন।
জনসংহতি সতিমির কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কে এস মং মারমার অভিযোগ, সন্তু লারমা আসার পরই বালাঘাটায় হারতাল-সমর্থকদের সঙ্গে ক্ষুদ্র নৃতাত্ত্বিক গোষ্ঠীর সদস্যদের সংঘর্ষ হয়। এতে পাঁচজন সদস্য আহত হন। তাঁদের চারজনকে বান্দরবান সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
ট্রাফিক চত্বরে সংঘর্ষ ও হামলার ছবি তুলতে গিয়ে স্থানীয় একটি অনলাইন পত্রিকার সাংবাদিক হামলার শিকার হয়েছেন। তাঁর ক্যামেরা কেড়ে নেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেন ওই সাংবাদিক।
প্রত্যক্ষর্দশীরা জানায়, দুপুর সাড়ে ১২টার সময় বান্দরবান জেএসএসের সম্মেলনে যোগ দিতে রাঙামাটি থেকে বান্দরবানে আসেন সন্তু লারমা। তাকে বহনকারী গাড়ি বহর বান্দরবান শহরের বালাঘাটা বাজার এলাকায় পৌঁছলে জাগো পার্বত্যবাসী সংগঠনের নেতাকর্মীরা বহর উদ্দেশ করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে।এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে জাগো পার্বত্যবাসী সংগঠন ও জেএসএসের নেতাকর্মীরা সংর্ঘষে জড়িয়ে পড়ে। পরে সেনাবাহিনী ও পুলিশের সদস্যরা দীর্ঘক্ষণ চেষ্টা চালিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। সংর্ঘষে উভয় পক্ষের অন্তত ১০ নেতাকর্মী আহত হয়। এঘটনায় শহরের বিভিন্ন স্থানে বিপুল সংখ্যক সেনা, বিজিবি ও পুলিশ মোতায়েন করা হয়।
প্রসঙ্গত, ১০ মার্চ পাহাড়ে চাঁদাবাজি, গুম, হত্যা ও সন্তু লারমার আগমনের প্রতিবাদে আওয়ামী লীগ-বিএনপির নেতাদের সম্প্রতি গঠন করা জাগো পার্বত্যবাসী নামে একটি বাঙালি সংগঠন বান্দরবানে ১১, ১২ ও ১৩ মার্চ ৭২ ঘণ্টা হরতালের ডাক দেয়। বুধবার হরতাল চলাকালে সন্ত লারমার গাড়িবহরে হামলা করা হয়।