দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ০৯ মার্চ: সংলাপ ও আলোচনার মাধ্যমে সরকার সমঝোতার পথ সৃষ্টি করলেই বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট তাদের চলমান অবরোধ কর্মসূচি স্থগিত করবে বলে জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য অবসরপ্রাপ্ত লেফ্টন্যান্ট জেনারেল মাহবুবুর রহমান ও ভাইস চেয়ারম্যান বেগম সেলিমা রহমান।সংলাপে বিএনপি কী নিয়ে কথা বলবে- এমন প্রশ্নের জবাবে মাহবুবুর রহমান বলেন, চলমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে বিএনপি সংলাপ ও আলোচনার মাধ্যমে একটি নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে জাতীয় সংসদ নির্বাচন চায়।একই বিষয়ে সেলিমা রহমান বলেন, ‘বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার ঘোষিত সাত দফা দাবির উপর সংলাপ হতে পারে। এছাড়া ওই সংলাপে নতুন কিছু দাবিও যুক্ত হতে পারে। তবে এখনই বলা যাচ্ছে না পরবর্তী দাবিগুলো কী হবে। যখন সরকার সংলাপে বসতে রাজি হবে তখনই বলা যাবে।চলমান সহিংসতার সমাধানে সরকারকেই প্রথম উদ্যোগী ভূমিকা নিতে হবে বলেও মন্তব্য করেন সেলিমা রহমান।
উল্লেখ্য, গত ৩১ জানুয়ারি বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া সরকারের কাছে সাত দফা দাবি তুলে ধরেন। খালেদা জিয়ার ঘোষিত সাত দফা হচ্ছে- নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে জাতীয় সংসদ নির্বাচন, গ্রহণযোগ্য নিরপেক্ষ, দক্ষ, যোগ্য ও সৎ ব্যক্তিদের সমন্বয়ে নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন, নির্বাচনী আইন ও বিধিমালার সঠিক প্রয়োগ নিশ্চিত করা, ভোটার তালিকার ত্র“টি-বিচ্যুতি দূর করা, নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে জাতীয় সংসদ ও মন্ত্রিসভা বিলুপ্ত করা, নির্বাচনের উপযোগী শান্তিপূর্ণ পরিবেশ সৃষ্টি এবং সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করতে তারিখ ঘোষণার পরপরই বেসামরিক প্রশাসনের সহায়তায় ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দিয়ে সারা দেশে সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের মোতায়েন করা, নির্বাচনী প্রচারাভিযান শুরুর আগেই চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার ও অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করা, প্রশাসন ও আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষপাতদুষ্ট ও বিতর্কিত হিসেবে চিহ্নিত সদস্যদের সব গুরুত্বপূর্ণ পদ থেকে প্রত্যাহার এবং কর্তব্য পালন থেকে বিরত রাখা, সব রাজনৈতিক বন্দিকে মুক্তি দেয়া, রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহার করা এবং বর্তমান সরকারের আমলে বন্ধ করে দেয়া সব সংবাদপত্র ও স্যাটেলাইট টেলিভিশন চ্যানেল খুলে দেয়াসহ সম্পাদক মাহমুদুর রহমানসহ আটক সব সাংবাদিককে মুক্তি দেয়া। বিএনপি নেতৃত্বধীন ২০ দলীয় জোটের চলমান অবরোধ ও হরতালের বিকল্প হিসেবে নতুন কর্মসূচি আসছে। নতুন এই কর্মসূচি জনগণকে জানাতে আগামী সপ্তাহে যে কেনো সময় সংবাদ সম্মেলন করতে পারেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া।
গুলশান কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, আগামী সপ্তাহে যে কোনো দিন বেগম খালেদা জিয়া সংবাদ সম্মেলন করবেন। চলমান আন্দোলনে নেতাকর্মীদের রাজপথে নামার আহ্বান জানাবেন তিনি।এছাড়া, আন্দোলনে যেসব নেতাকর্মী আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে নিহত হয়েছেন তাদের স্বজনদের সহযোগিতার আশ্বাস দেবেন বলেও জানা গেছে।বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সেলিমা রহমান বাংলামেইলকে বলেন, এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত আমি কিছুই জানি না। তবে ম্যাডাম সংবাদ সম্মেলন করলেও করতে পারেন। সেটা তার একান্ত ব্যক্তিগত বিষয়।নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে মধ্যবর্তী নির্বাচনের লক্ষ্যে সংলাপের উদ্যোগ নেয়ার দাবিতে বিএনপির লাগাতার অবরোধ ও ধারাবাহিক বিরতিতে হরতালের সোমবার ৬৩ দিন পেরিয়ে গেল। এ পর্যন্ত সহিংসতায় নিহত হয়েছে কমপক্ষে ১১৫ জন। আর ১ হাজার ৩১৭টি যানবাহনে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুর করা হয়েছে। মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে অর্থনীতি। শিক্ষাব্যবস্থা বিপর্যস্ত।এই সঙ্কট নিরসনে কূটনৈতিক তৎপরতাও লক্ষ্যনীয়। বিএনপি চেষ্টা করছে এই তৎপরতাকে সরকারের ওপর চাপ প্রয়োগের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করতে।কিন্তু এতে কতোটা সফল হলো খালেদা জিয়ার নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট? সরকার কিন্তু তাদের অবস্থান থেকে এক চুলও নড়েনি। মাঝে সংলাপের দরজা খোলা- বলে আশার বাণী শোনান ক্ষমতাসীন দলের নেতা ও মন্ত্রীরা। কিন্তু পরক্ষণেই শর্তারোপ করেন। বিএনপিকে পরোক্ষভাবে জঙ্গিবাদী দল আখ্যা দিয়ে সংলাপের জন্য সহিংসতা বর্জনের পূর্ব শর্ত জুড়ে দিচ্ছে।রাজনীতি পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন, স্বাভাবিক কর্মকাণ্ড বিঘিœত করে সরকারকে সংলাপের উদ্যোগী হতে বাধ্য করার কৌশল নিয়েছে বিএনপি। এ কারণেই টানা কর্মসূচি। মাঝে মাঝে তারা নমনীয় ভাবও দেখাচ্ছে।
কিন্তু সরকার তাতে গা করছে না। বল প্রয়োগের নীতিকেই গ্রহণ করছে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার। প্রধানমন্ত্রী সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, খুনি, জঙ্গিদের সঙ্গে কোনো সংলাপ নয়। আর তার কথারই প্রতিধ্বনি করছেন দলীয় নেতা থেকে মন্ত্রী-এমপি সবাই।গণমাধ্যমকর্মী এবং সরকারি নিরাপত্তাকর্মীদের তীক্ষ্ণ নজর এখন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার প্রতিক। গুলশানের ৮৬ নম্বর সড়কে খালেদা জিয়ার কার্যালয়ের সামনে বাদাম, মোয়া, পাঁপড় বিক্রেতাদের কামায় বেড়েছে। তার ৬ নম্বর বাড়ির সামনে বসে অলসরা তাস খেলে সময় কাটায়।আর খালেদা জিয়া মাত্র দুইটি কক্ষের মধ্যে সীমাবদ্ধ। মাঝে মধ্যে অনেকেই বলাবলি করে- খালেদা জিয়া কেন মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থি নেত্রী অং সান সু চির মতো কার্যালয়ের মধ্য থেকে নেতাকর্মী এবং জনগণের উদ্দেশে কেন কথা বলেন না। নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের তো ভূতুড়ে অবস্থা। খালেদা জিয়ার ৭৯ সড়কের বাসভবন ফিরোজায় এখন ঘুঘু আর চড়ুই পাখির আবাস। ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর মরদেহ আনা হলে কার্যালয়ে নিচে শোক বিহ্বল খালেদা জিয়াকে দেখা গেছে। সেই শেষ, এরপর আর গায়ে রোদ মাখেননি তিনি।গত দুই মাসে খালেদা জিয়ার বাড়ির সামনে বেশ কয়েকদিন একাধিক পাগলের উপস্থিতি দেখা গেছে। এদের মধ্যে একজন খালেদাকে হত্যার জন্য পুলিশের বাধা উপেক্ষা প্রবেশের চেষ্টা করেছে। আর দেশি-বিদেশি বিশিষ্টদের আনাগোনা তো রয়েছেই। প্রায়ই আসছেন কূটনীতিকরাও।
এদিকে জোটের সাংগঠনিক দুর্বলতার কারণে কর্মসূচি দিয়ে নেতাকর্মীরা রাজপথের বাইরে আত্মগোপনে থাকছে। কিন্তু তারপরও কর্মসূচি চলাকালে ব্যাপক সহিংসতা হচ্ছে। নাশকতার দায় সরকার বিরোধী জোটের নেতাকর্মীদের ওপর দিচ্ছে। তাদের নামে মামলা হচ্ছে, অসংখ্য নেতাকর্মী কারাগারে। নিঁখোজ রয়েছে বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী। বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছে অনেকে। ক্ষতিগ্রস্ত নেতাকর্মী ও তাদের পরিবারের সদস্যরা মানবেতর জীবনযাপন করছে। অপরদিকে বিএনপি জোটের কিছু নেতা দেশে বিদেশে বিলাসী জীবনযাপন করছেন।সরকারের দমন নীতি ছাড়াও প্রতি পদে পদে রাজনৈতিক চক্রান্তের শিকার হচ্ছে বিএনপি। বিএনপির সংস্কারপন্থি হিসেবে পরিচিত এবং বহিষ্কৃত নেতারা সক্রিয় হয়েছেন, পাশাপাশি খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের পদত্যাগ চেয়ে ‘আসল বিএনপি এক দাবিদারের আবির্ভাব ঘটেছে। এ নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনা রয়েছে।দাবি আদায়ে কার্যত এই সরকার বিরোধী জোট অন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দিকে ঝুঁকে পড়েছে। আন্তর্জাতিক সমর্থনের ক্ষেত্রে নেতাকর্মীদের মধ্যে অস্পষ্ট ধারণা রয়েছে। ভারতের ক্ষমতাসীন পার্টি বিজেপির সভাপতি অমিত শাহর ফোনকল নিয়ে ধোঁয়াশা এবং যুক্তরাজ্যের কয়েকজন সদস্যের ভুয়া বিবৃতিতে বিএনপি জোটকে বেশ অস্বস্তিতে পড়তে হয়েছে।
গত ৩ মার্চ যুক্তরাষ্ট্রসহ প্রভাবশালী দেশের কূটনীতিকরা নাটকীয়ভাবে বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে প্রায় দুই ঘণ্টার বৈঠক করেছে। গতবার জাতিসংঘের সহকারী মহাসচিব অস্কার ফার্নান্দেজ তারানকোর বৈঠক নিয়ে বিএনপি যেমন লুকোচুরি করছিল এবার তার ব্যত্যয় ঘটেনি। কর্মীদের ধারণা, সরকারের পক্ষে দূতিয়ালী করতে সেদিন প্রভাবশালী দেশের কূটনীতিকরা খালেদা জিয়ার সঙ্গে নাটকীয়ভাবে দেখা করে বৈঠক করেছেন। তাদের দৃষ্টিতে দ্রুত গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য সরকারের ওপর আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের চাপ নেই বললেই চলে।বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর মৃত্যু এবং সমবেদনা জানাতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার খালেদা জিয়ার কার্যালয়ে প্রবেশ করতে না পেরে ফিরে যাওয়ার ঘটনা, খালেদা জিয়ার কার্যালয়ের বিদুৎ, স্যাটেলাইট টিভি, ইন্টারনেটসহ অন্যান্য সংযোগ বিচ্ছিন্ন এবং পুনঃস্থাপন, খাবার বন্ধ, গুলশান থেকে বিএনপির কূটনীতি বিষয়ক নেতা রিয়াজ রহমানের ওপর হামলা, মন্ত্রী, এমপিসহ গুলশান এলাকায় দিনমজুর, খেটে খাওয়া শ্রমিক, ক্ষমতাসীনসহ সমমনা বিভিন্ন সংগঠনের নেতাদের খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তুলতে তার কার্যালয় অভিমুখে প্রায়শই মিছিল, গুলশানে নৌমন্ত্রী শাজাহান খানের মিছিলে বোমা হামলা প্রভৃতি ঘটনা দেশ-বিদেশে উদ্বেগের কারণ হয়েছে।
তবে এসব বিষয় মানুষ ভুলে যেতে বসেছে। নতুন আকর্ষণ হচ্ছে খালেদা জিয়ার কার্যালয় তল্লাশির জন্য আদালতের অনুমতি এবং তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা। তল্লাশির অনুমতি পুলিশ পেলেও, গ্রেপ্তারি পরোয়না এর বেশ কয়েকদিন আগে জারি করা হলেও পরোয়ানার কপি পাওয়া কথা স্বীকার করেনি থানা পুলিশ।সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এলাকা এবং মহল্লা পর্যায়ে নাশকতা প্রতিরোধে কমিটি করার ঘোষণা দেন। এর কয়েকদিন পর প্রধানমন্ত্রীর কাউন্টার দেয় বিরোধী জোট। তারাও সন্ত্রাস প্রতিরোধে পাল্টা কমিটির ঘোষণা দেয়। যদিও এখনও কোনো পক্ষের সংগ্রাম কমিটির অস্তিত্ব দেখা মেলেনি। এর আগেও বিএনপির এই ধরনের একটি কমিটির ঘোষণা দিয়েছিল। কিন্তু তা আলোর মুখ দেখেনি।গত ৩ জানুয়ারি থেকে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া তার গুলশানের কার্যালয়ে কার্যত অবরুদ্ধ। ৫ জানুয়ারি কার্যালয়ের নিচে অনির্দিষ্টকালের অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা দেন খালেদা জিয়া। সেই থেকে চলছে এখনও, আন্দোলনের প্রথম দিকে স্থানীয়ভাবে হরতাল দেয়া হলেও এবার কেন্দ্রীয়ভাবেই অবরোধের পাশাপাশি নিয়মিত বিরতিতে হরতাল দেয়া হচ্ছে। সাংগঠনিক সীমাবদ্ধতা কটিয়ে উঠতে না পারায় এসব কর্মসূচিতে সাধারণ মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত সমর্থন দেখা যাচ্ছে না। মানুষ চরম উদ্বেগ আর উৎকণ্ঠা নিয়ে বাধ্য হয়ে জীবিকার তাগিদে বাইরে বের হচ্ছে।প্রথম দিকে বিশ্ব এজতেমা এবং মাধ্যমিক পরীক্ষার কথা বিবেচনায় আন্দোলনে বিরতি দেয়ার প্রসঙ্গ উঠে এলেও বিএনপি তাতে কর্ণপাত করেনি। এসময় সমালোচনার মুখে পড়ে তারা।এ বিষয়ে প্রশ্নের কোনো যথার্থ জবাব দিতে পারেননি বিএনপি েেচয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট আহমেদ আযম খান। তবে আন্দোলন এতো দীর্ঘায়িত হওয়ার জন্য সরকারকেই দোষারোপ করেছেন তিনি। তিনি বলেন, এ আন্দোলন সরকারের এক সপ্তাহের বেশি চলতে দেয়া ঠিক হয়নি। সরকার যদি দেশপ্রেমিক হতো তাহলে ম্যাডাম খালেদা জিয়ার সঙ্গে আলোচনা করে তারা নির্বাচনের পথে চলে যেতো। সরকারের কারণে আন্দোলন ৬৩ দিনে পৌঁছেছে। এতে জান মালের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে।
দুই মাসের অধিক সময় ধরে চলমান আন্দোলন প্রাণহানি ও অর্থনৈতিক ক্ষতির দায়ভারও নিতে রাজি হননি আযম খান। তার মতে সরকার বিশ্বের কাছে বিএনপির গণতান্ত্রিক আন্দোলনকে জঙ্গি রূপ দেখানোর জন্য নাশকতা করছে।বিএনপির দাবির সপক্ষে কোনো পরিবেশ বা পরিস্থিতি তৈরি না হলেও গত ৬২ দিনের আন্দোলনকে সফল দাবি করছেন আহমেদ আযম খান। তার দাবি, এই পুরোটা সময়ই রাজপথ বিএনপি জোটের দখলে ছিল। রাজধানীতে হয়তো তারা নামতে পারছেন না কিন্তু তাদের প্রতি এখানকার মানুষের নীরব সমর্থন রয়েছে। আন্দোলন যে অব্যাহত থাকবে সে কথাও জানিয়ে দিলেন তিনি।রোববার গণমাধ্যমে বিবৃতি পাঠিয়ে বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব সালাহ উদ্দিন আহমেদ অভিযোগ করেছেন, রাজনৈতিক সঙ্কট আড়াল করতেই আওয়ামী লীগ জঙ্গিবাদের জিগির তুলে দেশবাসী ও আন্তর্জাতিক মহলকে বিভ্রান্ত করতে চায়।সালাহ উদ্দিন আরো বলেছেন, বেগম খালেদা জিয়ার দণ্ড ঘোষনা করেছেন গতকালের প্রকাশ্য জনসভায় প্রধানমন্ত্রী। আইন-আদালত, বিচার ব্যবস্থার কোনো কার্যকারিতা এরপরে আর অবশিষ্ট থাকে না। প্রধানমন্ত্রীর নিজের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত ১৩টিরও বেশি মামলায় তাকে কোনদিন হাজিরাও দিতে হয়নি, মোকাবেলাও করতে হয়নি; নিয়ন্ত্রিত বিচার ব্যবস্থার কল্যানে তাকে সকল মামলা থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। আওয়ামী নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত হাজার হাজার মামলা প্রত্যাহার করে নেয়া হয়েছে। আওয়ামী মন্ত্রী-এমপিদের বিরুদ্ধে দুদকের আওতাধীন সকল অভিযোগ ও মামলায় দায়মুক্তি সনদ প্রদানের হিড়িক পড়েছে। মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাংকের অভিযোগও শেষ পর্যন্ত আমলে নেয়া হয়নি। হলফনামার মাধ্যমে নির্বাচন কমিশনে দাখিলকৃত আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিদের স্বঘোষিত দুর্নীতির খতিয়ান দেশের জনগণ ও সারাবিশ্ব প্রত্যক্ষ করেছেন; অথচ তাদেরকেও পুতপবিত্র চরিত্রসনদ প্রদান করেছে দুদক সরকারি প্রভাবে। আমরা আগেও বলেছি-শাসন বিভাগ নিয়ন্ত্রিত বিচার ব্যবস্থায় আইনের শাসন কামনা করা যায় না।
বিচার বিভাগে নগ্ন হস্তক্ষেপের ফলে বিরোধী দলীয় নেতা-কর্মীদের ন্যায় বিচার প্রত্যাশা তিরোহিত হয়েছে অনেক আগেই। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার দন্ড ঘোষনা করেছেন গতকালের প্রকাশ্য জনসভায় প্রধানমন্ত্রী। আইন-আদালত, বিচার ব্যবস্থার কোন কার্যকারিতা এরপরে আর অবশিষ্ট থাকেনা। প্রধানমন্ত্রীর নিজের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত ১৩টিরও অধিক মামলায় তাকে কোনদিন হাজিরাও দিতে হয়নি, মোকাবেলাও করতে হয়নি; নিয়ন্ত্রিত বিচার ব্যবস্থার কল্যানে তাকে সকল মামলা থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। আওয়ামী নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত হাজার হাজার মামলা প্রত্যাহার করে নেয়া হয়েছে। আওয়ামী মন্ত্রী-এমপি’দের বিরুদ্ধে দুদকের আওতাধীন সকল অভিযোগ ও মামলায় দায়মুক্তি সনদ পদানের হিড়িক পড়েছে। মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাংকের অভিযোগও শেষ পর্যন্ত আমলে নেয়া হয়নি। হলফনামার মাধ্যমে নির্বাচন কমিশনে দাখিলকৃত আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপি’দের স্বঘোষিত দুর্নীতির খতিয়ান দেশের জনগণ ও সারাবিশ্ব প্রত্যক্ষ করেছেন; অথচ তাদেরকেও পুতপবিত্র চরিত্রসনদ প্রদান করেছে দুদক সরকারী প্রভাবে। আমরা আগেও বলেছি-শাসন বিভাগ নিয়ন্ত্রিত বিচার ব্যবস্থায় আইনের শাসন কামনা করা যায় না। বিচার বিভাগে নগ্ন হস্তক্ষেপের ফলে বিরোধী দলীয় নেতা-কর্মীদের ন্যায় বিচার প্রত্যাশা তিরোহিত হয়েছে অনেক আগেই। তারপরেও বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দায়েরকৃত সকল মিথ্যা মামলা আইনিভাবেই মোকাবেলা করা হবে। রোববার বিকেলে পাঠানো এই বিবৃতিতে আরো বলা হয়েছে, আন্দোলনকারী জনগণের লাশের স্তুপ মাড়িয়ে সারাদেশে রক্তগঙ্গা বইয়ে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী অবৈধ ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার প্রানান্তকর কুৎসিত অপচেষ্টায় বাংলাদেশ নামক এই জনপদ এখন মৃত্যু উপত্যকায় পরিণত হয়েছে। ভয়ঙ্কর এই পুলিশী রাষ্ট্রে জনগণ আইন-আদালতের প্রতি আস্থা হারিয়ে ফেলেছে। গণতন্ত্রের শরীরে এতো রক্তপাত জনগণ ইতোপূর্বে কখনো প্রত্যক্ষ করেনি।