09-03-15-PM_Cabinet-1

দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ০৯ মার্চ: স্বেচ্ছাসেবী যুব সংগঠনগুলোকে অনুদান দেওয়ার বিধান রেখে পূর্ণাঙ্গ আইন করার প্রস্তাবে সম্মতি দিয়েছে সরকার। সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার বৈঠকে ‘যুবকল্যাণ তহবিল আইন, ২০১৫ এর খসড়ায় চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়।বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ মোশাররাফ হোসাইন ভূইঞা সাংবাদিকদের জানান, সামরিক শাসনামলে জারি করা দি ইয়ুথ ওয়েলফেয়ার ফান্ড অর্ডিনেন্স ১৯৮৫’ দিয়ে এতোদিন যুবকল্যাণ তহবিল পরিচালিত হয়ে এসেছে। মন্ত্রিসভার নির্দেশনা অনুযায়ী পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় বাংলায় এই আইন করার প্রস্তাব উপস্থাপন করে।স্বেচ্ছাসেবী যুব সংগঠনগুলোকে এখন প্রকল্পভিত্তিক অনুদান দেওয়া হয়। এজন্য অনুদান দিতে আলাদা তহবিল গঠন করা হয়েছিল। ১৯৮৫ সালে এ তহবিল যখন হয় তখন ১৫ কোটি টাকা সিড মানি দেয় সরকার। রাষ্ট্রয়াত্ত ব্যাংকে রেখে তার মুনাফা থেকে ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা করে অনুদান দেওয়া হয়।১৯৮৫ সাল থেকে এ পর্যন্ত প্রায় ১০ হাজার যুব সংগঠনকে প্রায় ১২ কোটি টাকা অনুদান দেওয়া হয়েছে বলে জানান সচিব।তিনি বলেন, শিক্ষা, বিজ্ঞান, তথ্য-প্রযুক্তি ও কারিগরি খাতসহ কোন কোন ক্ষেত্রে এই তহবিল থেকে অনুদান দেওয়া যাবে তা খসড়া আইনে উল্লেখ করা হয়েছে। অন্য খাত থেকেও তহবিলে টাকা নেওয়ার সুযোগ রাখা হয়েছে।মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, দুই স্তরের একটি ব্যবস্থাপনা কমিটির মাধ্যমে এই তহবিল পরিচালিত হবে।

সিলেকশন কমিটির প্রধান হবেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব। অন্যান্য মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিরাও থাকবেন। অনুদানের প্রস্তাব পরীক্ষা নিরীক্ষা করে এ কমিটি সুপারিশ করবে। আর অনুদান অনুমোদন করবে পরিচালনা বোর্ড, যার প্রধান হবেন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী। বোর্ড চাইলে তহবিল পরিচালনার জন্য নীতিমালা করতে পারবে। সরকারও ইচ্ছা করলে বিধিমালা করতে পারবে।এছাড়া এ বোর্ডের জন্য আইন অনুযায়ী জনবল নিয়োগ দেওয়া যাবে বলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান।এদিকে, এক বছরে কত টার্গেট অর্জন করবে- সে বিষয়ে ৩৫টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সঙ্গে ‘অ্যানুয়াল পারফরম্যান্স এগ্রিমেন্ট (এপিএ) স্বাক্ষরিত হয়েছে। সোমবার সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে মন্ত্রিসভার বৈঠকের শুরুতে মন্ত্রিপরিষদ সচিব ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়-বিভাগের সচিবের সঙ্গে এপিএ স্বাক্ষরিত হয়।

বেঠকে শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ মোশাররাফ হোসাইন ভূইঞা সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।এর আগে ২৩ ফেব্র“য়ারি প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে প্রথম ১০টি এপিএ স্বাক্ষরিত হয়। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, অভিজ্ঞতার আলোকে প্রত্যেক মন্ত্রণালয় ও বিভাগ এক বছরে কী পারফর্ম করবে তা নিয়ে একটি খসড়া তৈরি করে। সেই প্রস্তাব মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠালে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিবের (সংস্কার ও সমন্বয়) নেতৃত্বে কমিটি অনুমোদন দিয়ে মন্ত্রণালয়ে পাঠায়। মন্ত্রণালয় থেকে আবার চূড়ান্ত করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠানো হয়।টার্গেট অর্জনে সহায়তার জন্য প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব ও বাস্তবায়নের জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিবরা এপিএ স্বাক্ষর করেন।মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, এপিএ’র ফলে একদিকে পারফরম্যান্স বাড়বে, অন্যদিকে জবাবদিহিতাও নিশ্চিত হবে। কে কোন কাজ করবে তাও বলা রয়েছে এপিএতে।মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, প্রধানমন্ত্রী আশা করেন, প্রত্যেক মন্ত্রণালয়ের সচিব ও কর্মকরতারা যতœবান হবেন এবং নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করবেন। এর মধ্যদিয়ে সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের মধ্যে সমন্বয় হবে।প্রধানমন্ত্রী মন্ত্রণালয়ের ওনারশিপ হিসেবে মন্ত্রীদের কাজের প্রশংসা করে আশা প্রকাশ করেছেন কাজগুলো আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে পারব।স্বাক্ষরের জন্য ৩৮টি এপিএ উপস্থাপন করা হলেও ধর্মসচিব এবং পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব দেশের বাইরে থাকায় তা স্বাক্ষরিত হয়নি। একইসঙ্গে অর্থ বিভাগের সচিব সোমবার বিদেশ থেকে আসায় স্বাক্ষরিত হয়নি সেটিও।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন,এ তিনটি এপিএ পরবর্তীতে অনানুষ্ঠানিকভাবে স্বাক্ষরিত হবে।মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে অনির্ধারিত আলোচনায় ভূমিমন্ত্রী শামসুর রহমান শরীফ ঈশ্বরদী বিমানবন্দরে উড়োজাহাজ চালুর জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ করেন। দীর্ঘদিন ধরে ওই বিমানবন্দরে উড়োজাহাজ চলাচল বন্ধ রয়েছে।মন্ত্রিসভার এক সদস্য বলেন, প্রধানমন্ত্রী ভূমিমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে বলেন, আপনি রানওয়ের জন্য জায়গা দিতে পারবেন কি না। ভূমিমন্ত্রী বলেন, পাকিস্তান আমলে একমাস আগে প্লেনের টিকিট বুকিং হতো। এখন চলাচলই করছে না।এসময় তিনি দ্রুত উড়োজাহাজ চলাচলের ব্যবস্থা করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ করেন।