দৈনিকবার্তা-চট্টগ্রাম, ০৯ মার্চ: চট্টগ্রামে উত্পাদনশীল খাতে বিনিয়োগ দিন দিন কমছে৷ চার বছরের ব্যবধানে চট্টগ্রামে বিনিয়োগ অর্ধেকে নেমে এসেছে৷ উদ্যোক্তাদের মতে, রাজনৈতিক অস্থিরতার সাথে ব্যাংক ঋণের উচ্চ সুদ,গ্যাস ও অবকাঠামো সমস্যার পাশাপাশি নতুন শিল্পাঞ্চল গড়ে না ওঠায় দেশী বিদেশী বিনিয়োগ মুখ থুবড়ে পড়েছে৷এক্ষেত্রে রাজনৈতিক অচলাবস্থা বজায় থাকলে নতুন শিল্পকারখানা প্রতিষ্ঠার বদলে আমদানি নির্ভরতা বৃদ্ধি ও বেকার সমস্যা ডকট হওয়ার আশংকা করছেন শিল্প উদ্যোক্তারা৷২০১৪ সালের জানুয়ারিতে নির্বাচনের পর রাজনৈতিক পরিস্থিতি কিছুটা স্থিতিশীল হলেও শঙ্কামুক্ত ছিল না উদ্যোক্তারা৷ তাই ভৌগলিক অবস্থানের কারণে চট্টগ্রামকে বিনিয়োগের আদর্শ জায়গা ধরা হলেও বিনিয়োগ না বেড়ে বরং কমেছে৷ বিনিয়োগ বোর্ডের হিসাবে, ২০১০ সালে চট্টগ্রামে ২\’শ ৯২টি শিল্প প্রতিষ্ঠানের বিপরীতে ২ হাজার ৯\’শ ৫৬ কেটি টাকা বিনিয়োগ নিবন্ধন হয়৷
অথচ চার বছরের ব্যবধানে ২০১৪ সালে বিনিয়োগ কমে ১ হাজার ৩\’শ ৪কোটিতে দাঁড়িয়েছে৷ যা ২০১৩\’র চেয়েও এক হাজার ৪০ কোটি টাকা কম৷ এজন্য ব্যবসায়ীরা রাজনৈতিক অস্থিরতার পাশাপাশি ব্যাংকের উচ্চ সুদ, গ্যাস সংকট, জমির স্বল্পতা ও প্রাতিষ্ঠানিক হয়রানিকে দায়ী করেছেন৷চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, চট্টগ্রামে জমির দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে গেছে৷ গ্যাস সংযোগ নেই বললেই চলে৷ যার কারণে চট্টগ্রামে এই বিনিয়োগ মুখ থুবড়ে পরে আছে৷বিজিএমইএ পরিচালক অঞ্জন শেখর দাশ বলেন, \’উদ্যোক্তারা যখন এদেশে বিনিয়োগের জন্য চট্টগ্রামকে খুঁজতে শুরু করলো, ঠিক সে সময়ই শুরু হলো এদেশে নৈরাজ্য ও অসহযোগ৷তরুণ উদ্যোক্তাদের মতে, বর্তমান অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে মুনাফার সম্ভাবনা না থাকায় উত্পাদনশীল খাতে নতুন বিনিয়োগ হচ্ছেনা৷ এতে আমদানি নিভর্রতা বেড়ে বেকারত্ব প্রকট হবে৷
জুনিয়র চেম্বার ইন্টারন্যাশনাল সহ-সভাপতি চিটাগাং প্রকৌশলী মাশফিক আহমেদ বলেন, সব ব্যবসায়ীরা নিজেদের মুনাফার কথা নিশ্চয়ই চিন্তা করবে৷তবে এ অর্থনীতিবিদের মতে, বিনিয়োগ বাড়াতে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার পাশাপাশি দুর্নীতি দমন ও বিদেশে অর্থ পাচারের সুযোগ বন্ধ করতে হবে৷চট্টগ্রাম চ্যাপ্টার বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতি সাবেক সভাপতি প্রফেসর মইনুল ইসলাম বলেন, পরিবেশ সৃষ্টি করতেই হবে৷ সেখানে প্রথম যেটা প্রয়োজন সেটা হলো এই রাজনৈতিক অচলাবস্থা কাটিয়ে উঠতেই হবে৷এ অবস্থায় চট্টগ্রামে বিনিয়োগ বাড়াতে অবকাঠামো উন্নয়নের পাশাপাশি সরকারের প্রস্তাবিত নতুন দুটি অর্থনৈতিক অঞ্চলের দ্রুত বাস্তবায়ন চান ব্যবসায়ীরা৷