031b1b8b01417c39dd84818caf03af8a-15

দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ০৭ মার্চ: বাংলাদেশে টেকসই নির্বাচনী ব্যবস্থা গড়ে তুলতে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানসমূহ শক্তিশালী করার পাশাপাশি রাষ্ট্রপতির সাংবিধানিক ক্ষমতা বৃদ্ধি এবং সুশাসন নিশ্চিত করা জরুরী৷ একইসাথে রাজনৈতিকদলগুলোতে গণতান্ত্রিক চর্চা আরো বাড়াতে হবে৷ তাহলেই কেবলমাত্র টেকসই গণতন্ত্র এবং টেকসই নির্বাচনী ব্যবস্থা গড়ে তোলা সম্ভব৷

শনিবার রাজধানীর বনানীতে বেসরকারী গবেষণা সংস্থা পলিসি রিসার্চ ইন্সটিটিউটের (পিআরআই) সভাকক্ষে আয়োজিত এক সেমিনারে অর্থনীতিবিদ, রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ও গবেষকরা এ অভিমত তুলে ধরেন৷পিআরআই এবংআনত্মর্জাতিক রাষ্ট্রবিজ্ঞান সমিতি (আইপিএসএ) যৌথভাবে ‘গণতন্ত্রায়নে পুনঃভাবনা: সুফলের জন্য ঐক্যমত পোষণ’ শীর্ষক এই সেমিনারের আয়োজন করে৷

ইউনিসেফের সাবেক শিৰা উপদেষ্টা ড. মনজুর আহমেদের সঞ্চলনায় সেমিনারে বেসরকারী গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক রেহমান সোবহান, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ড. আকবর আলী খান, সিপিডির সম্মানিত ফেলো ড. রওনক জাহান, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ইনাম আহমেদ চৌধুরী, সাবেক অর্থমন্ত্রী এম সাইদুজ্জামান, সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ টি এম শামসুল হুদা, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় রাষ্ট্র বিজ্ঞানের অধ্যাপক ড. আতাউর রহমান, সুজন সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার, পিআরআই নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর প্রমূখ আলোচনায় অংশ নেন৷
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন যুক্তরাষ্ট্রের ইউসকনসিন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমিরিটাস অধ্যাপক ড. জিল্লুর রহমান খান৷

আলোচনাকালে রেহমান সোবহান বলেন, গত ২৫ বছর যাবত্‍ সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানসহ সব সরকারী প্রতিষ্ঠান দলীয়করণ করা হয়েছে৷ এখন এসব প্রতিষ্ঠান শক্তিশালী না করে দেশে কোনভাবেই টেকসই নির্বাচনী ব্যবস্থা গড়ে তোলা সম্ভব নয়৷ তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোতে গণতান্ত্রিক চর্চা কমে যাচ্ছে৷ দেশে টেকসই গণতন্ত্র আনতে হলে রাজনৈতিক দলগুলোতে এর চর্চা বাড়াতে হবে৷ তিনি রাষ্ট্রপতির সাংবিধানিক ক্ষমতা বৃদ্ধির পক্ষে মত দেন৷

ড. আকবর আলী খান টেকসই নির্বাচনী ব্যবস্থা গড়ে তুলতে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানসমূহ সংস্কারের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরে বলেন, দেশে যেভাবে রাজনৈতিক বিভাজন শুরম্ন হয়েছে তাতে কোন তত্ত্ববধায়ক সরকারের পৰেও এখন নিরপেক্ষ নির্বাচন করা সম্ভব নয়৷ এর জন্য সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানসমূহ শক্তিশালী এবং সংবিধানের যেসব দুর্বল দিক রয়েছে, সেগুলো সংস্কার করা প্রয়োজন৷তিনি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানসমূহে দলীয়করণ কমাতে সাংবিধানিক পদগুলোতে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় রাষ্ট্রপতির পূর্ণ ক্ষমতা প্রদানের পরামর্শ দেন৷

সেমিনারে সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ টি এম শামসুল হুদা গণতন্ত্র রক্ষায় সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানসমূহ সংস্কারে আকবর আলী খানের সাথে একমত পোষণ করে বলেন, এসব প্রতিষ্ঠান শক্তিশালী করা ছাড়া দেশে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়৷ অন্যদিকে, মেধাবী নতুন প্রজন্মকে রাজনীতিতে আনা যাবে না৷

বদিউল আলম মজুমদার বলেন, শানত্মিপূর্ণভাবে ৰমতা বদলের স্থায়ী পদ্ধতি খুঁজে পেতে একটি জাতীয় সংলাপ হওয়া প্রয়োজন৷ তিনি টেকসই গণতন্ত্রের জন্য সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্বশীল সরকার এবং স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা গড়ে তোলার ওপর গুরুত্বারোপ করেন৷ জিল্লুর রহমান খান তার মূল প্রবন্ধে বলেন, সুষ্ঠু গণতন্ত্রে ক্ষমতার ভারসাম্য থাকা জরুরী৷ এর জন্য তিনি দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদ চালু করার পক্ষে মত দেন৷