দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ০২ মার্চ :ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) আওতায় সরকারি-বেসরকারি ২৮টি কাঁচাবাজার রয়েছে। এসব কাঁচাবাজার ফরমালিনমুক্ত করার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে বলে সংসদে জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম। সোমবার বিকেলে জাতীয় সংসদে এম আবদুল লতিফের টেবিলে উত্থাপিত প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এ কথা বলেন।
সংসদে মন্ত্রীর দেওয়া তথ্যানুযায়ী, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের আওতায় ২৮টি কাঁচাবাজার রয়েছে। এসব কাঁচাবাজার ফরমালিকমুক্ত করতে ২৮ জানুয়ারি নগর ভবনের সেমিনার কক্ষে কাঁচাবাজার ব্যবসায়ী সমিতির নেতৃবৃন্দের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। ব্যবসায়ীরা বাজারগুলো ফরমালিন মুক্ত করার বিষয়ে একমত হয়েছেন।ডিএসসিসির আওতাধীন ১৩টি সরকারি কাঁচাবাজার ও ১৫টি বেসরকারি কাঁচাবাজার রয়েছে। এসব বাজার ফরমালিকমুক্ত করতে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে কিছু বাজারে ফরমালিনমুক্ত ব্যানার টাঙানো হয়েছে। বাকি বাজারগুলোতেও আগামী ৩ মাসের মধ্যে ফরমালিনমুক্ত করে ব্যানার টাঙানো হবে বলেও জানান মন্ত্রী। তিনি বলেন, আগামী ৩ মাসের মধ্যে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের আওতাভুক্ত কাঁচাবাজরসমূহ ফরমালিনকমুক্ত ঘোষণা এবং ফরমালিন শনাক্তকরণ বুথ স্থাপন করা হবে। প্রথম ধাপে ডিএসসিসির মালিকানাধীন ১৫টি কাঁচা বাজারে ফরমালিন শনাক্তকরণের লক্ষ্যে বুথ স্থাপন এবং ফরমালিনমুক্ত ঘোষণা করা হবে। দ্বিতীয় ধাপে কর্পোরেশনের আওতাভ্ক্তু বেসরকারি বা ব্যক্তিগত মালিকানাধীন কাঁচাবাজারসমূহ ফরমালিকমুক্ত করা হবেবাসস
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বলেন, প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্নপ্রসূত একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পের মাধ্যমে সারাদেশে ২৫ লাখ দরিদ্র পরিবারের ১ কোটি ২৫ লাখ ব্যক্তিকে দারিদ্র বিমোচনে সেবা প্রদান করা হচ্ছে। তিনি আজ সংসদে সরকারি দলের সদস্য মুহিবুর রহমান মানিকের এক প্রশ্নের জবাবে এ তথ্য জানান। মন্ত্রী বলেন, এ প্রকল্প দেশের দরিদ্র ও প্রান্তিক চাষীদের তহবিল গঠনের কৃষি কাজে বিনিয়োগের মাধ্যমে উৎপাদন বৃদ্ধি করে দারিদ্র্য বিমোচনে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখে যা”েছ। এ প্রকল্প বর্তমানে দেশের সকল উপজেলার সব ইউনিয়নের প্রতিটি ওয়ার্ডে একটি করে মোট ৪০ হাজার ৫২৭টি গ্রামে বাস্তবায়িত হচ্ছে।
তিনি বলেন, এ প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য গ্রামে গ্রামে উপকারভোগী দরিদ্র জনগোষ্ঠীর অংশীদারিত্বমূলক স্থায়ী পুঁজি গঠন করা। সমিতিভুক্ত উপকারভোগী সদস্যদের মাসিক ২শ’ টাকা সঞ্চয়ের বিপরীতে সরকারের পক্ষ থেকে মাসে ২শ’ টাকা উৎসাহ বোনাস প্রদান করা হয়। অন্যদিকে সদস্য প্রতি ২শ’ টাকা হারে বছরে সমিতির তহবিলে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা ঘূর্ণায়মান তহবিল প্রদান করা হয়। এভাবে প্রতি গ্রাম সমিতিতে ৮ থেকে ১০ লাখ টাকার স্থায়ী তহবিল গড়ে উঠেছে । এ তহবিল তাদের নিজস্ব ব্যাংক হিসাবে জমা থাকে। এটি তাদের স্থায়ী তহবিল, যা সরকার কখনোই ফেরৎ নেবে না।মন্ত্রী বলেন, সারাদেশে সৃজিত ৪০ হাজার ৫২৭টি সমিতির মোট তহবিল ২ হাজার ১৬ কোটি টাকা যেখানে তাদের নিজস্ব সঞ্চয় ৬শ’ কোটি টাকা। সরকার প্রদত্ত উৎসাহ বোনাস ৬শ’ কোটি টাকা এবং প্রদত্ত ঘূর্ণায়মান তহবিল ৮১৬ কোটি টাকা। নিজেদের প্রয়োজন, নিজস্ব পেশা ও অভিজ্ঞতার উপর ভিত্তি করে উঠান বৈঠকের মাধ্যমে গ্রাম সংগঠনের সদস্যগণ অগ্রাধিকারভিত্তিতে তাদের চাহিদামাফিক ১৩ লক্ষাধিক ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র আয়বর্ধক সমিতি গড়ে তুলেছে যেখানে বিনিয়োগ হয়েছে ১৫শ’ কোটি টাকা।
তিনি বলেন, এ কার্যক্রমকে স্থায়ীরূপ দিতে ও গরিবের অর্থ কেউ যাতে নষ্ট করতে না পারে সেজন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করেছেন। এ ব্যাংকের মালিক গ্রাম বাংলার খেটে খাওয়া দরিদ্র জনগোষ্ঠী। এ ব্যাংকের ১ টাকা লাভ হলেও তা পাবেন এ দরিদ্র জনগণ। মন্ত্রী বলেন, এ প্রকল্প সম্প্রসারণের মাধ্যমে ২০২১ সালের মধ্যে দেশকে দারিদ্র্য শূন্য করার প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। দেশের সর্বশেষ দরিদ্র মানুষকে এ প্রকল্পভুক্ত করে দারিদ্র্য বিমোচন করা হবে।