দৈনিকবার্তা-ঠাকুরগাঁও, ০২ মার্চ: ঠাকুরগাঁও জেলার আম্রপালি জাতের আম বাগানে গাছ ভরে মুকুল এসেছে। অন্যান্য জাতের আম গাছেও প্রচুর মুকুল এসেছে। গত বছর ছিল আমের অন ইয়ার। কিন্তু এবার বিলম্বে হলেও জেলার আম বাগানের গাছে গাছে আমের ব্যাপক মুকুল দেখে উদ্যানতত্ববিদ এবারও আমের অন ইয়ার বলে মত দিয়েছেন।ঠাকুরগাঁও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আমিনুল ইসলাম জানান, জেলার প্রায় সাড়ে ৬ শত আম্রপালির আম বাগানে এবার প্রচুর মুকুল এসেছে। তিনি জানান, হাই ব্রিড জাতের সব বাগানের অবস্থাই ভালো। তবে স্থানীয় জাতের বাগানে মুকুল এসেছে ফাঁকা ফাঁকা। সামগ্রিক ভাবে মুকুল এসেছে আশানুরুপ। উদ্যানতত্ববিদদের মতে আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে এবার আমের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে।
তিনি আরো জানান, এবার এই এলাকায় মুকুল এসেছে দেরিতে। গুটি হওয়ার সময় স্বাভাবিক আবহাওয়া বিরাজ করলে ফলন হবে আশাতীত। কিন্তু শুষ্ক আবহাওয়া ও উষ্ণ বাতাস বয়ে গেলে মুকুল ও গুটি ঝরে যাবে। তখন ফলনে বিপর্যয় নেমে আসবে। জেলার প্রায় ৬৫০ টি আম্রপালি আম বাগানে প্রতিবারের মতো এবারও প্রচুর মুকুল এসেছে। মুকুল এসেছে মল্লিকা ও সুবর্ণরেখা আম গাছেও। বাগানগুলিতে দেখা গেছে ৯০ শতাংশ গাছে মুকুল এসেছে। তবে এই ধরনের আম বাগান রয়েছে ছোট ছোট। জেলার বিখ্যাত সূর্যাপূরী জাতের আম বাগানগুলিতে স্বাভাবিক মুকুল এসেছে। ল্যাংড়া, ফজলি, গোপালভোগ, মিশ্রিভোগ ও বান্দিগড়ি আম বাগানের গাছগুলির মুকুল তুলনা মূলকভাবে কম।
কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক জানান, আম গাছে মুকুল হলেই যে বেশি আম ধরবে তার কোন নিশ্চয়তা নেই। আকাশ মেঘাচ্ছন্ন বা কুয়াশাচ্ছন্ন থাকলে বা তাপমাত্রা কমে গেলে মুকুল নষ্ট হয়ে যায়। তারা জানান, ৯৯ ভাগ মুকুল থেকে কোন গুটি হয়না। আবার বিভিন্ন কারনে গুটিও ঝরে পরে। মাটিতে প্রয়োজণীয় রস না থাকলে গুটি ঝরে পরে বেশি। তাছাড়া নিয়ম ভঙ্গ করে গ্রামে গ্রামে ইট ভাটা ও হাস্কিং মিল স্থাপিত হওয়ায় এর ছাই প্রতি বছর আমের মুকুলের ক্ষতি করছে। যদিও এবার গাছে গাছে প্রচুর আমের মুকুল এসেছে, তবে ফলন নির্ভর করবে পরবর্তী আবহাওয়ার উপর।ঠাকুরগাঁও জেলার রাণীশংকৈল, হরিপুর, পীরগঞ্জ ও বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার বেশ কয়েকটি আম বাগানে ঘুরে দেখা গেছে প্রায় সব বাগানের আম গাছে মুকুল এসেছে। মুকুলও বেশ সতেজ। মুকুল তেমন নষ্ট না হলে রেকর্ড পরিমান ফলন হতে পারে।কৃষিবিদগন জানান, যে বছর আমের ফলন বেশি হবে সে বছর গাছের কার্বন ও নাইট্রোজেনের তারতম্য ঘটে। ফলে পরের বছর আমের ফলন কমে যায়। গত বছর ঠাকুরগাঁওয়ে আমের ফলন হয়েছিল ভালো। কিন্ত কার্বন ও নাইট্রোজেনের তেমন তারতম্য ঘটেনি। এখন গাছের পরিচর্যার উপর অনেককিছু নির্ভর করবে।