দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ২৫ ফেব্রুয়ারি: রাজধানীর পিলখানায় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) (তত্কালীন বিডিআর) সদর দপ্তরে বিডিআর’র বিদ্রোহ ও সহিংস ঘটনায় শহীদ সেনা কর্মকর্তাদের ষষ্ঠ শাহাদাত্ বার্ষিকী ছিল বুধবার ৷ নানা কর্মসূচির মধ্যদিয়ে বিজিবি প্রতিবছরের ন্যায় এবারো বেদনাবিধুর পিলখানা হত্যা দিবস পালন করে৷২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রম্নয়ারি বর্বরোচিত হত্যাযজ্ঞে ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তা, একজন সৈনিক এবং দু’জন সেনা কর্মকর্তার স্ত্রীসহ ৭৪ ব্যক্তি নিহত হন৷পিলখানায় সংঘটিত হত্যাকান্ডে শহীদ সেনাকর্মকর্তদের স্মরণে আয়োজিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে শহীদদের রুহেরর মাগফিরাত কামনায় পিলখানাসহ বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সকল রিজিয়ন,সেক্টর ও ইউনিটের উদ্যোগে বুধবার বাদফজর খতমে কোরআন এবং বিজিবি’র সকল মসজিদ এবং বিওপিগুলোতে দোয়া ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়৷
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ব্যবস্থাপনায় সকাল ৯টায় বনানী সামরিক কবরস্থানে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী এবং স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর পক্ষে তাঁদের প্রতিনিধিবৃন্দ, তিন বাহিনীর প্রধানগন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব এবং বিজিবি মহাপরিচালক শহীদদের স্মৃতিসত্মম্ভে পুষ্পসত্মবক অর্পণের মাধ্যমে শহীদ সেনাকর্মকর্তাদের স্মুাতর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন৷এছাড়াও এ দিবস উপলক্ষে বুধবার সকাল থেকে শহীদ সেনা কর্মকর্তাদের আত্মার প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে তাদের স্ত্রী, পুত্র-কণ্যাসহ পরিবারের সদস্য ও আত্মীয়স্বজনরা বনানী সামরিক কবরস্থানে সমবেত হন এবং শহীদদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন৷
দিবসটি উপলক্ষে জাতীয়তাবাদী দল বিএনপিও শহীদ সেনা কর্মকর্তাদের আত্মার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছে৷ বেলা ১১টার দিকে বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক সেনাবাহিনী প্রধান লে. জে.(অব.) মাহবুবুর রহমানের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল বনানীস্থ সামরিক কবরস্থানে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান৷এদিকে, বিডিআর হত্যাকান্ডের ঘটনায় আগামীকাল বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৪টায় পিলখানায় বীরউত্তম ফজলুর রহমান খন্দকার মিলনায়তনে শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ দোয়া ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে৷
দোয়া ও মিলাদ মাহফিলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব, বিজিবি মহাপরিচালক, শহীদদের নিকটাত্মীয়, পিলখানায় কর্মরতত অফিসার, জেসিও, অন্যান্য পদবির সৈনিক এবং বেসামরিক কর্মচারীরা অংশগ্রহণ করবেন৷
উলেস্নখ্র, ২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি সকালে পিলখানায় তত্কালীন বিডিআর সদর দফতরে দরবার চলাকালে বিডিআর বিদ্রোহীরা নৃশংস হত্যাযজ্ঞ চালায়৷ ওই দিন দরবার হলে একদল বিদ্রোহী বিডিআর সদস্য দরবার হরে ঢুকে সেনা কর্মকর্তাদের ওপর গুলি চালায়৷ তারা নির্বিচারে সেনা কর্মকর্তাদের হত্যা কওে এবং তাদের পরিবারকে জিম্মি করে৷
পুরো পিলখানায় তখন এক ভীতিকর অবস্থার সৃষ্টি হয়৷ এ সময় বিদ্রোহীরা পিলখানার চারটি প্রবেশ গেট নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আশপাশের এলাকায় এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়তে থাকে৷ গুলিতে একে একে লুটিয়ে পড়েন মেধাবী সেনা কর্মকর্তারা৷ বিদ্রোহীরা সেনা কর্মকর্তাদের শুধু খুনই করেনি তাদের লাশগুলোর যথাযথভাবে সত্কার না করে মাটি চাপা দেয়৷
ঘটনার পরের দিন গণকবর থেকে সেনা কর্মকর্তাদের লাশ উদ্ধার করা হয় ৷এদিকে এই হত্যাকান্ডের ঘটনায় জড়িত থাকার দায়ে ইতোমধ্যে ১৫২ জনকে মৃতু্যদন্ড,১৬১ জনকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড এবং ২৬২ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা প্রদান করা হয়েছে৷অপরাদকে বিদ্রোহের ঘটনায় বিবিন্ন ব্যাটারিয়ানে ৫৭টি মামলা দাযের করা হয়৷ এসব মামলায় ৫ হাজার ৯শ’ ২৫ জন বিদ্রোহীকে তাদেও সমাপৃক্ততার মাপকাঠি অনুযায়ি সর্বোচ্চ ৭ বছর ও বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেয়া হয়েছে৷