maxresdefault1

দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ২৫ ফেব্রুয়ারি: বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে একটি মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি প্রসঙ্গে সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, রাজনৈতিক নেতারা জনগণের স্বার্থে, জনগণের কল্যাণে বহুবার গ্রেপ্তার হয়েছেন৷ আমাদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াও জনগণের স্বার্থে গ্রেপ্তার হতে পারেন বা হবেন৷ এটাই স্বাভাবিক৷

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে জারি হওয়া গ্রেফতারি পরোয়ানাকে বেআইনি বলে আখ্যায়িত করেন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির এই সভাপতি ৷বুধবার দুপুরে সুপ্রিমকোর্ট আইজীবী সমিতির সভাপতির কক্ষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন৷

প্রসঙ্গত,সোয়া পাঁচ কোটি টাকা দুর্নীতির দুই মামলায় ধার্য তারিখে হাজির না হওয়ায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে আদালত৷বুধবার ঢাকার তিন নম্বর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক আবু আহমেদ জমাদার এই তিনজনের জামিন বাতিল করে পরোয়ানা জারির আদেশ দেন৷ বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা ছাড়া বাকি দুজন হলেন,মাগুরার সাবেক সাংসদ কাজী সালিমুল হক কামাল,ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ৷খালেদার আইনজীবীরা পরে পরোয়ানা বাতিলের আবেদন করলে তাও নাকচ করে দেয় আদালত৷

খালেদাকে গ্রেপ্তার করলে আপনার কী করবেন? এমন প্রশ্নের জবাবে খন্দকার মাহবুব বলেন, রাজনীতি করলে গ্রেপ্তার হতে হয়, এটা অস্বাভাবিক কিছুই না৷ রাজনৈতিক নেতারা জনগণের স্বার্থে জনগণের কল্যাণে বহুবার গ্রেপ্তার হয়েছেন, হবেন৷ আমরা আইনিভাবে চেষ্টা করবো তার জামিন করাতে৷তিনি বলেন, সারা পৃথিবীর মানুষ জানে ৫১ দিন ধরে বেগম খালেদা জিয়া অভুক্ত, অসুস্থ এবং অবরুদ্ধ আছেন৷ আমরা বলেছি- পরবর্তী তারিখ পর্যন্ত তাকে সময় দেয়া হোক৷ আমরা আইনের সমস্ত ব্যাখ্যা দিয়েছি৷ কিন্তু আদালত আমাদের কথা শোনেননি৷

বিএনপিপন্থি প্রবীন এ আইনজীবী বলেন, এই আদালতের প্রতি আমাদের আস্থা নাই৷ আমাদের বিশ্বাস আমরা এই আদালতে ন্যায় বিচার পাবো না৷মাহবুব আরো বলেন, এ মামলা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত৷ আমরা সিনিয়র আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলে চ্চ আদালতে যাবো৷ এমনকি আইনিভাবে যা যা করা দরকার তার সবই করবো৷ আমরা আশা করি সেখানে ন্যায়বিচার পাবো৷ এটা বিচার প্রার্থীদের নৈতিক অধিকার৷ এ সময় আরো উপস্তিত ছিলেন; খালেদা জিয়ার আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী ও ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন৷

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে গ্রেফতারে পরোয়ানা জারির খবর সকালেই জেনেছে বাংলাদেশ৷ সেই জেরে মিডিয়ার নজর এখন গুলশানে৷ বিভিন্ন গণমাধ্যমকর্মীদের আনাগোনা ক্রমেই বাড়ছে তার কার্যালয় ঘিরে৷ সবই জেনেছেন খালেদা, তবে ‘উদ্বিগ্ন নন তিনি৷এমন দাবি তার সঙ্গে কার্যালয়ে অবস্থানরত একাধিক সূত্রের৷বুধবার দুপুর থেকেই মনোযোগের কেন্দ্রে রয়েছে গুলশান৷ এখানেই নিজ কার্যালয়ে ৩ জানুয়ারি থেকে বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী ও স্টাফদের নিয়ে অবস্থান করছেন খালেদা৷সূত্র জানায়, পরোয়ানা জারির খবর তাত্‍ক্ষণিক জানানো হয়েছে বিএনপি প্রধানকে৷ জবাবে খালেদা ছিলেন নিরুত্তর৷ প্রতিদিনের মতোই নির্দিষ্ট কক্ষটিতে সময় কাটছে তার৷

সূত্রের দাবি, খালেদা শারীরিক ও মানসিক সীমাহীন চাপ নিতে অভ্যস্ত৷ এতো বড় দলের দায়িত্বে থাকা প্রধান নেতা গ্রেপ্তার আতঙ্কে ভুগবেন না- এটাই স্বাভাবিক৷এদিকে খালেদার গ্রেফতারি পরোয়ানা থানায় পৌঁছেছে কি-না, কখন বা কবে নাগাদ খালেদা গ্রেফতার হবেন, আদৌ গ্রেফতার করা হবে কি-না তিনবারের সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীকে- এসবই এখন টক অব দ্য টাউন৷

শুধু তাই নয়, তাকে গ্রেফতার নিয়ে নানা রকম অনুমাননিভর্র আলোচনাও চলছে৷ কেউ বলছেন, খালেদা জিয়াকে গ্রেফতার করে কার্যালয়েই রাখা হবে এক প্রকার হাউজ-অ্যারেস্ট করে৷ এক্ষেত্রে তার বর্তমান সঙ্গী-সাথীদের হয়তো বের করে আনা হবে৷আবার কেউ বলছেন, খালেদার অপেক্ষায় রয়েছে কাশিমপুর কারাগার৷ সেখানে তার জন্য ইতোমধ্যে প্রস্তুত রয়েছে ভিআইপি সেল, গ্রেফতার করে তাকে সেখানেই রাখা হবে৷