1424073865

দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ১৬ ফেব্রুয়ারি: বিএনপিচেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার গুলশান কার্যালয় ঘেরাও কর্মসূচিতে দুই দফায় ককটেল হামলা চালিয়েছে দুর্বৃত্তরা। সোমবার শ্রমিক পেশাজীবী মুক্তিযোদ্ধা সমন্বয় পরিষদের আহ্বায়ক শাজাহান খানের নেতৃত্বে তারা খালেদা জিয়ার ঘেরাও করতে এলে এ হামলার ঘটনা ঘটে।পুলিশের গুলশান থানার পেট্রোল ইনসপেক্টর আমজাদ হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেন।জানা যায়, বেলা ১২ টার দিকে ওয়ান্ডার ল্যান্ড পার্ক থেকে কার্যালযের অভিমুখে যাত্রা করলে গুলশান -২ চত্বরে শ্রমিকদের মিছিলকে উদ্দেশ্য করে ২টি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। এতে ৬ জন আহত হয়। এর মধ্যে বাবুল নামে একজনকে গুরুতর অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

এদিকে কার্যালয় ঘেরাও কর্মসূচিতে শাজাহান খানের বক্তব্য দেওয়ার সময় গুলশানের ৯৪ নম্বর রোডের মাথায় দুটি ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। সেখানে জাহাঙ্গীর, আল আমিন ও শরীফসহ স্থানীয় শ্রমিকলীগের ৪ জন আহতকে ভর্তি করা হয়েছে। তারা সবাই গুলশানে ককটেল হামলায় আহত।এছাড়া গুরুতর আহত ১ জনকে ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সূত্র।অবরোধ-হরতাল প্রত্যাহারের দাবিতে বিএনপি চেয়াপারসন খালেদা জিয়ার কার্যালয় ঘেরাও কর্মসূচি পালন করেছে শ্রমিক-কর্মচারী-পেশাজীবী-মুক্তিযোদ্ধা সমন্বয় পরিষদ।দুপুরে সমন্বয় পরিষদের আহবায়ক নৌমন্ত্রী শাজাহান খানের েেনতৃত্বে নেতাকর্মীরা খালেদা জিয়ার কার্যালয়ে যাওয়ার প্রবেশ পথে পৌঁছান। এ সময় পুলিশের বাধার মুখে তারা সেখানে অবস্থান নিয়ে ম্লোগান দেন। মিছিল নিয়ে কার্যালয়ে আসার সময় গুলশান-২ মোড়ের কাছে দুর্বৃত্তরা ৪টি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটায় এতে ৬ জন আহত হন।

এর আগে গুলশানের সেন্ট্রাল পার্কে আয়োজিত সমাবেশে নৌ-মন্ত্রী শাজাহান খান প্তার না ২৪ ঘণ্টার মধ্যে খালেদা জিয়াকে সরকার গ্রেকরলে জনগণই তাকে গ্রেপ্তার করবে বলে হুঁশিয়ারি দেন।প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে শাজাহান খান বলেন, খালেদা জিয়াকে গ্রেপ্তার করা না হলে জনগণই তাকে গ্রেপ্তার করে কাশিমপুর কারাগারে নিয়ে যাবে।ঘেরাও কর্মসূচি সম্পর্কে তিনি বলেন, আজকে আমরা জানান দিচ্ছি পুলিশ ভাইয়েরা আমাদের যত দূর পর্যন্ত যেতে দেবে, ততো দূর পর্যন্ত যাবো। কেউ যেন কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা না করে। আমাদের কর্মসূচি চলবে। আমরা যুদ্ধংদেহী মনোভাব নিয়ে যাব। তবে আমাদের কর্মসূচি হবে শান্তিপূর্ণ।এ সময় তিনি কর্মসূচি ঘোষণা করেন আগামী ১৮ তারিখ রাজধানীতে ট্রাক মিছিল, ১৯ তারিখে মতিঝিল থেকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার পর্যন্ত পতাকা মিছিল করবে এবং যতদিন পর্যন্ত অবরোধ- হরতাল প্রত্যাহার না করা হবে ততদিন পর্যন্ত তাদের কর্মসূচি চলিয়ে যাওয়ার শপথ নেয়া হবে।

সকাল থেকে গুলশান সেন্ট্রাল পার্কে জমায়েত হতে থাকেন সমন্বয় পরিষদের নেতা-কর্মীরা। বাসে করে ঢাকা ও ঢাকার আশপাশের এলাকা থেকে নেতাকর্মীরা সেখানে আসতে থাকেন। এ কর্মসূচির কারণে গুলশান ও বনানী এলাকায় যানজটের সৃষ্টি হয়। সেন্ট্রাল পার্কে উপস্থিত হন শাজাহান খান, ১৪ দলের নেত্রী শিরিন আক্তারসহ অন্য নেতারা। একপর্যায়ে সেখানে বক্তব্য দেন নৌমন্ত্রী। গুলশান থেকে খালেদা জিয়ার কার্যালয় সরিয়ে নেয়ার জন্য সরকারের প্রতি দাবি জানান তিনি।এদিকে, হরতাল-অবরোধ প্রত্যাহার ও সহিংসতা বন্ধের দাবিতে সকালে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার গুলশানে কার্যালয় ঘেরাও করেন আওয়ামী মহিলা লীগের নেতা-কর্মীরা। আওয়ামী মহিলা লীগের কমপক্ষে ৫০ জন নেতা-কর্মী এ কার্যালয় ঘেরাও করতে যান।

এ সময় গুলশান ২-এর ৮৬ নম্বর সড়কের প্রবেশমুখে তাদের থামিয়ে দেয় পুলিশ। পুলিশের বাধা পেয়ে আওয়ামী মহিলা লীগের নেতা-কর্মীরা ৮৬ নম্বর সড়কের প্রবেশমুখে অবস্থান নেন। তারা সেখানে মিছিল- স্লোগান দেন।পুলিশের গুলশান জোনের সহকারি কমিশনার নুরুল আলম বলেন, নিরাপত্তার জন্য সব ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। খালেদা জিয়ার গুলশান কার্যালয় ঘেরাওয়ে যাওয়ার পথে নৌমন্ত্রী শাজাহান খানের মিছিলে হাতবোমা হামলায় অন্তত ১১ জন আহত হয়েছেন।আহতদের মধ্যে কয়েকজনের আঘাত গুরুতর বলে জানিয়েছেন মুক্তিযোদ্ধা আবুল কালাম আজাদ, যিনি নিজেও মিছিলে ছিলেন।তিনি বলেন, বেলা সোয়া ১২টার দিকে মিছিলটি গুলশান দুই নম্বর মোড়ের মেট্রোপলিটন শপিংমল পার হওয়ার সময় মার্কেটের ওপর থেকে ৬-৭টি বোমা ফেলা হয়। নৌমন্ত্রী ছিলেন মিছিলের সামনে সারিতে। তিনি মার্কেট পার হয়ে যাওয়ার পর মিছিলের মাঝামাঝি হামলা হয়।আবুল কালাম আজাদ জানান, হামলার পর মিছিলের লোকজন প্রাণভয়ে ছুটোছুটি শুরু করে। আশপাশের দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়। রাস্তায় গাড়ি চলাচলও কিছুসময় বন্ধ থাকে।

ঘটনাস্থল মেট্রোপলিটন শপিংমলের সামনের রাস্তায় অন্তত তিন জায়গায় রক্ত পড়ে থাকতে দেখা যায়। বিস্ফোরণের পরপরই মার্কেটটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। বোমা হামলায় আহতদের মধ্যে বাবুল আহমেদ (৫৪), মোতালেব খালাসি (২২) ও ওবায়দুল খালাসি (২১) নামের তিনজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়।এদের মধ্যে বাবুলের ডান-পা ও মাথায় জখম রয়েছে বলে মেডিকেল পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক মোজাম্মেল হক জানান। কর্মসূচি শেষে আহতদের দেখতে ঢাকা মেডিকেলে যান নৌমন্ত্রী শাজাহান খান।ইউনাইটেড হাসপাতালের জরুরি বিভাগের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না শর্তে জানান, তাদের হাসপাতালে রুবেল আহমেদ ও আবু তাহের ইমন নামে দুইজন প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে গেছেন।রুবেল মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্ম লীগের গেণ্ডারিয়া থানার সভাপতি এবং ইমন যুগ্ম সম্পাদক। বিস্ফোরণের সময় রুবেল পা এবং ইমন হাতে আঘাত পেয়েছেন বলে হাসপাতালের ওই কর্মকর্তা জানান।এ ঘটনায় আহত আরও অন্তত ছয়জন ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন বলে গুলশান পুলিশের উপ কমিশনার লুৎফুল কবির জানান।

ঘটনাস্থলে উপস্থিত সাংবাদিকদের তিনি বলেন, মার্কেটের ছাদ থেকে বোমাগুলো মিছিলের ওপর ফেলা হয় বলে আমরা ধারণা করছি। গুলশান থানার অপারেশন কর্মকর্তা ফিরোজ কবির জানান, এ ঘটনায় গুলশান থানা এলাকা থেকে ১০ জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে পুলিশ। সোমবার কয়েক হাজার কর্মী নিয়ে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয় ঘেরাও কর্মসূচিতে বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কার্যালয়ের বিদ্যুৎ এবং খাবার ঢোকা বন্ধ করে দেওয়ার হুমকির পর এবার খালেদা জিয়াকে বন্দি করার হুমকি দেন নৌমন্ত্রী শাজাহান খান।মন্ত্রিসভায় নিয়মিত বৈঠকে অংশ না নিয়ে এই কর্মসূচিতে যোগ দেন শাজাহান খান। খালেদার কার্যালয়মুখী তার মিছিলে গুলশানে হাতবোমা হামলা হয়, এতে অন্তত ১১ জন আহত হন।লাগাতার অবরোধ ডেকে নিজের কার্যালয়ে অবস্থানরত খালেদা জিয়াকে ঘেরাওয়ে শাজাহান খানের নেতৃত্বে এই কর্মসূচি পালিত হয় শ্রমিক-কর্মচারী-পেশাজীবী-মুক্তিযোদ্ধা সমন্বয় পরিষদের ব্যানারে।

পুলিশের বাধার মুখে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ের সামনে যেতে না পেরে ৮৬ নম্বর সড়কের মুখে সমাবেশে করেন শাজাহান খান।ঘণ্টাব্যাপী সমাবেশে বক্তব্যে শ্রমিক-কর্মচারী-পেশাজীবী-মুক্তিযোদ্ধা সমন্বয় পরিষদের আহ্বায়ক শাজাহান খান বলেন, আমি স্পষ্টভাষায় খালেদা জিয়াকে বলে দিতে চাই, অবিলম্বে আপনি অবরোধ-হরতাল বন্ধ করুন। অন্যথায় কেউ আপনাকে রক্ষা করতে পারবে না। একই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ জানাব, মানুষ হত্যাকারী দানবকে বন্দি করুন। দেশ ও মানুষকে বাঁচান।খালেদা জিয়াকে গ্রেপ্তার করা না হলে জনগণই তাকে কোলে করে কাশিমপুর কারাগারে নিয়ে যাবে, বলেন মন্ত্রী।সমাবেশে জাসদ ও শ্রমিক জোটের নেত্রী শিরীন আখতার বলেন, খালেদা জিয়াকে বলতে চাই, আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে আপনি অবরোধ-হরতাল তুলে নিন। নইলে আপনি এই কার্যালয়ে থাকতে পারবেন না। আপনাকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যাওয়া হবে।এছাড়া আমাদের আর কোনো উপায় থাকবে না, বলেন ক্ষমতাসীন ১৪ দলের এই সংসদ সদস্য।গত ৩ জানুয়ারি পুলিশের বাধায় কার্যালয় থেকে বের হতে না পেরে ৮৬ নম্বর সড়কের ওই ভবনে অবস্থান নেন খালেদা। দুদিন পর ফের বের হতে বাধা পেয়ে লাগাতার অবরোধ ডাকেন তিনি।২০ দলীয় জোটের ব্যানারে চলমান এই কর্মসূচিতে নাশকতায় প্রায় একশ মানুষ নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে অধিকাংশ মৃত্যু ঘটেছে গাড়িতে আগুন দেওয়া ও পেট্রোল বোমায় অগ্নিদগ্ধ হয়ে।

পরিবহন শ্রমিক সংগঠনগুলো অবরোধ প্রত্যাহারের জন্য খালেদার প্রতি দাবি জানিয়ে আসছেন। এর মধ্যে তাদের কর্মসূচিতে শাজহান খান বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ের বিদ্যুৎ সংযোগ এবং খাবার বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দেন।তার হুমকির পর দুই সপ্তাহ আগে খালেদার কার্যালয়ের বিদ্যুৎ সংযোগ ২০ ঘণ্টার জন্য বন্ধ ছিল। গত ছয় দিন ধরে ওই কার্যালয়ে খাবার ঢুকতে বাধা দিচ্ছে পুলিশ।এরপর বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠন গত কয়েকদিন ধরে ওই কার্যালয় ঘেরাও কর্মসূচি পালন করে আসছিল। তার মধ্যেও কর্মসূচি চালিয়ে যেতে অনড় খালেদার কার্যালয় ঘেরাও কর্মসূচিতে সোমবার নিজেই যোগ দেন শাজাহান খান।মিছিলে হাতবোমা হামলার বিষয়ে তিনি বলেন, বিএনপি-জঙ্গি-তালেবানরা আজ এক হয়ে দেশে মানুষ হত্যা করছে, পেট্রোল বোমা ছুড়ছে। আজও আমাদের সমাবেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা তারা চালিয়েছে।

দুপুর ১২টা ১০ মিনিটে গুলশান ২ নম্বর গোল চত্বরের দক্ষিণ পাশে ওয়ান্ডারল্যান্ড পার্কের মাঠে সমন্বয় পরিষদের কয়েক হাজার নেতা-কর্মী সমবেত হয়। এরপর শাজাহান খানের নেতৃত্বে শুরু হয় মিছিল।মিছিলটি গুলশান ২ নম্বর মোড় অতিক্রমের সময়ে পেছন দিকে হাতবোমা বিস্ফোরিত হলে বিক্ষুব্ধ কর্মীরা সড়কের দুই পাশের বেশ কয়েকটি দোকানে ভাংচুর করে।এরপর মিছিল নিয়ে ৮৬ নম্বর সড়কে খালেদা জিয়ার কার্যালয়ের দিকে মিছিল রওনা হন। সড়কের মাথায় পুলিশ ব্যারিকেড দিয়ে রাখলে সেখানে ট্রাকে অস্থায়ী মঞ্চ তৈরি করে বক্তব্য চলে।কর্মসূচির শেষ দিকে ৯০ নম্বর সড়কের পূর্বপ্রান্তে নির্মাণাধীন একটি ভবনের ওপর থেকে দুটি হাতবোমা ছোড়া হয়। তবে এতে কেউ হতাহত হয়নি। বিক্ষুব্ধ কর্মীরা তখন নির্মাণাধীন ভবনে কর্মরত শ্রমিকদের মারধর করে।

গুলশান ২ নম্বর থেকে মিছিল শুরুর আগে সমাবেশে শাজাহান খান বলেন, খালেদা জিয়া কতিপয় জঙ্গি ও তালেবান নিয়ে মানুষ হত্যা করে চলেছেন। পাকিস্তানি আইএসআই এজেন্টরা দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির ষড়যন্ত্র করছে। আমরা বলে দিতে চাই, মুক্তিযোদ্ধাদের জীবন বেঁচে থাকতে খালেদা জিয়ার স্বপ্ন বাস্তবায়ন হবে না।২৪ ঘণ্টার মধ্যে গুলশানের কূটনীতিক পাড়া থেকে খালেদা জিয়ার কার্যালয় সরিয়ে নিতে সরকারের কাছে দাবি জানান তিনি।হরতাল-অবরোধের নামে বিএনপি-জামায়াতের মানুষ হত্যার প্রতিবাদে শ্রমিক-কর্মচারী- পেশাজীবী-মুক্তিযোদ্ধা সমন্বয় পরিষদ ধারাবাহিক আন্দোলন চালিয়ে যাবে বলেও ঘোষণা দেন শাজাহান খান।আগামী ১৮ ফেব্র“য়ারি রাজধানীতে ট্রাকমিছিল এবং ১৯ ফেব্র“য়ারি জাতীয় পতাকা নিয়ে মতিঝিলের শাপলা চত্বর থেকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার পর্যন্ত মিছিলের কর্মসূচিও জানান তিনি।

নৌমন্ত্রীর এই ঘেরাও কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয় সংলগ্ন সড়কের দুদিকেই ব্যারিকেড দিয়ে রেখেছিল পুলিশ। কার্যালয়ের ভেতরে বিএনপি চেয়ারপারসনের নিরাপত্তার রক্ষীদেরও সর্তক দেখা গেছে।এদিকে, গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয় ঘেরাও কর্মসূচিতে হামলার এবং জ্বালাও- পোড়াওয়ের প্রতিবাদে বিভিন্ন কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছেন নৌপরিবহন মন্ত্রী ও শ্রমিক-কর্মচারী- পেশাজীবী-মুক্তিযোদ্ধা সমন্বয় পরিষদের আহ্বায়ক শাজাহান খান। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে বিক্ষোভ সমাবেশ, জাতীয় পতাকা ও ট্রাক মিছিল। সোমবার সচিবালয়ে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ে আয়োজিত জরুরি এক সংবাদ সম্মেলনে এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন নৌমন্ত্রী।বিএনপি জোটের হরতাল-অবরোধের মধ্যে নাশকতার প্রতিবাদে পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে সোমবার বেলা ১১টার দিকে গুলশানে ওয়ান্ডারল্যান্ডের সামনে থেকে নৌমন্ত্রীর নেতৃত্বে পদযাত্রা শুরু হয়।

সংবাদ সম্মেলনে শাজাহান খান বলেন, বিএনপি-জামায়াত জোট পেট্রোলবোমা নিক্ষেপ করে ড্রাইভার- হেলপার-যাত্রী, শিশু-নারীকে দগ্ধ ও হত্যা করছে। হাজার হাজার গাড়ি-ট্রেন পোড়ানো হচ্ছে। এর হোতা খালেদা জিয়া, বিএনপি-জামায়াতসহ ২০ দলীয় জোট।শ্রমজীবী- পেশাজীবী-মুক্তিযোদ্ধাদের শান্তিপূর্ণ মিছিলের মাঝামাঝি স্থানে উপর থেকে বোমা মারা হয়েছে বলে দাবি করেন নৌমন্ত্রী। মিছিলে ককটেল হামলায় ২৩ জন আহত হয়েছেন বলেও দাবি নৌমন্ত্রীর।আমরা গণতান্ত্রিক ভাষায় এর প্রতিবাদ করতে চাই জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে তিনটায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে প্রতিবাদ সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল, বুধবার বেলা ১১টায় মানিক মিয়া এভিনিউ থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের ট্রাক মিছিল এবং বৃহস্পতিবার মতিঝিলের শাপলা চত্বরে জাতীয় পতাকা মিছিল করা হবে। এরপর দেশব্যাপী কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।

খালেদা জিয়া এবং গুলশানে যারা অবস্থান করছেন তারা নানা অপপ্রচার চালাচ্ছে দাবি করে নৌমন্ত্রী বলেন, আমরা তার বাড়িতে ঢিল-বোমা মারতে যাইনি। তাহলে কেন আমাদের উপর হামলা?হামলার অংশে আশুলিয়ার কর্মীরা ছিলেন জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, তাদের ১৭ জনকে সাভারের এনাম মেডিকেলে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।আহতদের মধ্যে রয়েছেন- সাগর, আরিফ, আনা সরদার, মোখলেসার, রুবেল, দেলোয়ার, ওবায়দুর, মোতালেব, শামীম, মোস্তফা, ইব্রাহীম, হেলাল, মিন্টু, বাবুল মিয়া, সীমা ও নাহার।বিভিন্ন হাসপাতালে আহতদের দেখতে গিয়েছি উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, এদের মধ্যে ২/৩ জনের অবস্থা গুরুতর। নৌমন্ত্রী বলেন, হামলার ঘটনার মধ্য দিয়ে ২০ দলীয় জোট আবার প্রমাণ করলো তারা বোমাবাজ, গণতন্ত্র বোঝে না। এরা সন্ত্রাস বোঝে, চোরাগোপ্তা হামলা বোঝে, বোমাবাজি বোঝে।এ ঘটনার পর অনেক ঘটনা ঘটতে পারতো জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, আমরা সেগুলো নিয়ন্ত্রণ করেছি, উত্তেজনাকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে দেইনি।আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর নিরাপত্তার মধ্যে এ হামলার বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, নিরাপত্তা ছিল বলেই বড় ধরনের ঘটনা ঘটনি। তারা চোরাগোপ্তা হামলা করেছে।