দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ১৫ ফেব্রুয়ারি: ডেভিড মিলার ও জেপি ডুমিনির রেকর্ড জুটিতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে বিশ্বকাপ ক্রিকেটের গ্র“প পর্বের ম্যাচে রক্ষা পেয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা। মাত্র ৮৩ রানে চার উইকেট হারিয়ে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়া প্রেটিয়া দলটিকে এই দুই ব্যাটসম্যান ব্যক্তিগত সেঞ্চুরি করার পাশাপাশি জুটিবদ্ধ অপরাজিত ২৫৬ রান সংগ্রহ করে দলকে বসায় রানের চুড়ায়। ফলে প্রোটিয়ারা নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে ৩৩৯ রান করতে সক্ষম হয়। জবাবে জিম্বাবুয়ে ৪৮.২ ওভারে সবকটি উইকেটের বিনিময়ে ২৭৭ রান সংগ্রহ করলে ৬২ রানের জয় পায় দক্ষিণ আফ্রিকা।
রোববার হ্যামিল্টনের সেডন পার্কে অনুষ্ঠিত ম্যাচে টস হেরে ব্যাটিং পাওয়া প্রোটিয়া দল জিম্বাবুইয়ানদের অপ্রত্যাশিত বোলিং তোপে পড়ে শুরুতেই হারিয়ে বসে ওপেনার কুইন্টন ডি কক (৭) ও শীর্ষ ব্যাটসম্যান হাসিম আমলার (১১) উইকেট দুটি। দলীয় ৬৭ রানে ফাফ ডু প্লেসিস (২৪) ও ৮৩ রানে অধিনায়ক এবি ডি বিলিয়ার্সের (২৫) উইকেট পড়ে গেলে সত্যিকার অর্থে চাপে পড়ে যায় চোকাররা।তবে এরপর আর কোন বিপর্যয় ঘটতে দেননি মিলার ও ডুমিনি। ১৩৮ রানে অপরাজিত মিলার বিশ্বকাপ অভিষেকে সর্বাধিক রান সংগ্রহের রেকর্ডটি নিজের করে নেয়ার পাশাপাশি সংকটমুক্ত করেন দলকে। এসময় তাকে উপযুক্ত সঙ্গ দিয়েছেন ডুমিনি। ১১৫ রান সংগ্রহ করে তিনি বিশ্বকাপ ক্যারিয়ারে চতুর্থ সেঞ্চুরিটিও আদায় করে নেন।নয়টি ছয় ও সাতটি চার সাজিয়ে মিলার মাত্র ৯২ বলের মোকাবেলায় ভেঙ্গে দেন নিজের অতীত রেকর্ড। গত মাসে পোর্ট এলিজাবেথে ওয়েস্টইন্ডিজের বিপক্ষে অপরাজিত ১৩০ রানের ব্যক্তিগত রেকর্ডটি গড়েছিলেন তিনি।
অপরদিকে ন্যাটা ব্যাটসম্যান ডুমিনি ১০০ বলের মোকাবেলায় তিনটি ছয় ও ৯টি চারের সহায়তায় অপরাজিত ১১৫ রান সংগ্রহ করেন। এই দুই ব্যাটসম্যানের অপরাজিত ২৫৬ রানের সংগ্রহটি ৫ম উইকেট জুটিতে ওয়ানডে ক্রিকেটের নতুন রেকর্ড। এর আগে ডাবলিনে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে দুই ইংলিশ ব্যাটসম্যান ইয়োইন মরগান ও রবি বোপারার ২২৬ রানের জুটিবদ্ধ সংগ্রহটি ছিল সর্বোচ্চ। দীর্ঘদিন অপেক্ষার পর ফের তিন অংকের এই রান সংগ্রহটি আমি দারুন ভাবে উপভোগ করেছি’ বললেন ডুমিনি। তিনি বলেন, আমরা যেমনটা আশা করেছিলাম এই পিচটি ছিল এর চেয়েও বেশী স্নথ। কিন্তু আমাদের হাতে পর্যাপ্ত উইকেট থাকায় আমরা এগিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছি। এসময় সতীর্থ মিলারের ইনিংসটিরও প্রশংসা করেন তিনি। বলেন, ডেভিড ছিলেন বৈশিষ্টমন্ডিত।
এদিকে প্রোটিয়াদের রানের পাহাড় টপকানোর লক্ষে জিম্বাবুয়ের সুচনাটাও ছিল দুর্দান্ত। তারা মাত্র দুই উইকেট হারিয়েই ৩৩তম ওভারে পৌঁছে যায় ১৯১ রানে। হ্যামিল্টন মাসাকাদজা (৮০) ও চামু চিবাবা (৬৪) এক পর্যায়ে চোক রাঙ্গাচ্ছিল প্রোটিয়াদের বিশাল সংগ্রহের দিকেই। তবে পরবর্তী ৮৬ রান সংগ্রহ করতে গিয়েই তারা খুইয়ে বসে বাকী আট উইকেট। ফলে সব সম্ভাবনাই নিঃশেষ হয়ে যায়।মাসাকাদজা ৭৪ বলে ৮টি চার ও দু’টি ছয় হাঁকিয়ে ৮০ এবং চিবাবা ৮২ বলে ১০টি বাউন্ডারী হাকিয়ে ৬৪ রান সংগ্রহ করেন। এছাড়া দলীয় সংগ্রহশালাকে পরিণত করতে সহায়তা করেন ব্রেনডন টেইলর (৪০) ও সলমন মির (২৭)। এদিন প্রোটিয়া দলের বোলার ডেল স্টেইন বার বার লাইন ও লেন্থ ঠিক রাখতে ব্যর্থ হচ্ছিলেন। প্রথম স্পেলের ৫ ওভার থেকে তিনি কোন উইকেট না নিয়ে দিয়েছেন ৩৮ রান। মোট নয় ওভার বল করে শেষ পর্যন্ত ৬৪ রান দিয়ে তিনি একটি উইকেট লাভ করতে সক্ষম হন।
তবে দক্ষিন আফ্রিকা দলের সফল বোলার হিসেবে বলতে হবে লেগ স্পিনার ইমরান তাহিরের নাম। ৩৬ রান দিয়ে তিন উইকেট সংগ্রহকারী এই স্পিনার ফিরিয়ে দিয়েছেন প্রতিপক্ষ দলের দুই বিপজ্জনক ব্যাটসম্যান চিবাবা ও মাসাকাদজাকে। তার সঙ্গী হিসেবে বোলিং আক্রমনে সহায়তা করেছেন ভারনন ফিলান্ডার (২/৩০) ও মরনে মর্কেল (২/৪৯)।